৩১ অক্টোবরের মধ্যে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করতে বলা হয়েছে। অনেক কলেজের মতো আমাদের কলেজেও প্রায় শ’তিনেক সংরক্ষিত আসন এখনও শূন্য। সেখানে কোনও আবেদনকারীই নেই। অথচ, প্রায় সমসংখ্যক ‘জেনারেল’ আবেদনকারী ছাত্রছাত্রী আসনের অভাবে এখনও ভর্তি হতে পারেনি। তারা আজও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
সংরক্ষিত আসনগুলিকে অ-সংরক্ষিত করার আবেদন জানিয়ে জেলার সংশ্লিষ্ট দফতরে জরুরি ভিত্তিতে বেশ কিছু দিন আগে কলেজের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। পুজোর ছুটির জন্য ১ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্য সরকারের সমস্ত অফিস বন্ধ। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করার আদেশ জারি আছে। এ দিকে অপেক্ষমাণ জেনারেল ক্যাটেগরির ছাত্রছাত্রীরা সংরক্ষিত শূন্য আসনগুলিতে ভর্তির জন্য অবিরাম চাপ সৃষ্টি করছে। তারা তো সরকারি নিয়মবিধি অতশত বুঝতে চায় না। এই অবস্থায় ভর্তির সময়সীমা ৩১ অক্টোবরের পরে আরও কিছু দিন বাড়িয়ে, সংরক্ষিত আসনগুলি ‘ডি-রিজ়ার্ভড’ করে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির সুযোগ করে না দিলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও বিপুল সংখ্যক ভর্তি হতে না পারা ছাত্রছাত্রী সমস্যায় পড়বে। দফতরকে বিষয়টি সহৃদয়তার সঙ্গে বিবেচনা করার আবেদন জানাচ্ছি।
সাধন দাস
ডি এন কলেজ, মুর্শিদাবাদ
খারাপ নয়
ক্লাস সেভেনের মেয়ের পেটে ব্যথা। শিক্ষিকা বাড়ি পাঠাতে চাইলে মেয়ের কাতর আবেদন, “না দিদিমণি, বাড়ি গেলে অনেক সমস্যা। স্নান করাবে। ছোঁবে না কেউ। আমি এখানেই বসে থাকি।” শহরের ‘শিক্ষিত’ পরিমণ্ডলে ঋতুস্রাব নিয়ে এমন সমস্যা? অথচ ক’দিন আগেই ক্লাসের মধ্যে এক ছাত্রী উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিল, “দিদিমণি, মনে হচ্ছে পিরিয়ড হয়েছে। বাথরুমে যাব?”
ভারতের শিক্ষাজগৎ থেকে যে লক্ষ লক্ষ মেয়ে ‘স্কুলছুট’ হয়ে যায়, তার মধ্যে দু’লক্ষেরও বেশি হয় ঋতুস্রাবজনিত কারণে। স্কুল দূরে। অনেক সময় বাথরুম থাকে না। অরুণাচলম মুরুগনন্তম যে ভারতের বুকে স্যানিটারি প্যাডের ধ্বজা উড়িয়েছিলেন, তার বিজ্ঞাপন এখন টেলিভিশনে প্রত্যহ চোখে পড়ে। তা সত্ত্বেও সুশীল মানুষ ‘ওই সব সমস্যা’ বলে কোনও মতে পার পেতে চান। এক মহিলাকে কিছু দিন আগে দেখলাম, ওষুধের দোকানে গিয়ে স্বাভাবিক স্বরে বললেন, “স্যানিটারি প্যাড হবে? অমুক কোম্পানি।” দোকানদার তরুণ বয়সের। তিনি ইতিবাচক উত্তর দিলেন। একটি অন্য কোম্পানির নামও প্রস্তাব করলেন। এই পর্যন্ত শুনে মনে হবে, আমরা এগিয়েছি। কিন্তু দোকানে অন্য ক্রেতারাও ছিলেন। ‘সামাজিক জ্যাঠামশাই’-এর ভূমিকায় এক প্রৌঢ় সিগারেটের ‘স্বাস্থ্যকর ধোঁয়া’ ছেড়ে বাঁকা হেসে বললেন, “কিছুই বাকি থাকল না।”
আমরা দেবীপক্ষে ঈশ্বরীর আরাধনায় ব্রতী হই। ভারতে ঈশ্বরীরও ঋতুস্রাব হয়। সে পবিত্র ব্যাপার। ভক্তের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর। অথচ সেই দেবীর উপাসনাতে, এমনকি উপাসনা গৃহে প্রবেশেও ঋতুমতী নারীর অধিকার নেই! শাস্ত্র কী বলেছে, তা নিয়ে চুলচেরা বিচার অনর্থক। ক’টা কাজই বা আমরা এখন শাস্ত্রমতে করি? শুধু ঋতুস্রাব নিয়েই নাক সিটকানি।
কমিউনিস্ট কেরল শবরীমালার মন্দিরে কোর্টের রায় মেনে ঋতুমতী নারীর প্রবেশ ঘটিয়েছিল। কিন্তু তার পরের কাণ্ডকারখানা? কী ভয়াবহ পরিণতি হয়েছিল সেই নারীদের, সারা ভারত জানে। ‘অপবিত্র’ স্পর্শ মুছতে সমগ্র মন্দির যখন ধোয়ামোছা হচ্ছে, তখন সেই ঝাঁটার প্রতিটি ঘা ভারতের সমস্ত নারীকে আঘাত করেছে। কেন হতে দেওয়া হল এই সাফাই অভিযান? এ দেশের সংবিধান নাকি অস্পৃশ্যতা, বৈষম্যের বিরোধী? মেয়েদের জন্য তা হলে সংবিধান নয়? সমানাধিকার বলে কিছু নেই? আর ঋতুমতী মেয়েরা মন্দিরে ঢুকতে পাননি। সরকার চুপ।
শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে ‘ঋতুস্রাব’-এর বিজ্ঞান ছাত্রছাত্রীদের শেখানো হোক। বন্ধ হোক ঋতুস্রাবকে ‘শরীর খারাপ’ বলা। ‘ঋতুস্রাব’ শব্দটিতে অভ্যস্ত হতে হবে এই দেশের সব নাগরিককে। না হলে নারীকে সম্মান করতে তারা শিখবে না, নারী নিজেও না।
সোনালী দত্ত
কলকাতা
জীববৈচিত্র
পরিবেশ রক্ষার জন্য নির্দিষ্ট আইন রয়েছে, কিন্তু তার প্রয়োগ অত্যন্ত শ্লথ। শুধুমাত্র সরকারের উপর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে গা ভাসিয়ে চলা, দায়িত্বজ্ঞান না থাকার পরিচায়ক। প্রতিটি অঞ্চলের সমাজকর্মী, সমাজ-সচেতন নাগরিকের উচিত পরিবেশ সম্পর্কে লাগাতার প্রচার করে জনসাধারণের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
কাগজে-কলমে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আধুনিক পরিবেশ বিশেষজ্ঞেরা জীববৈচিত্রের ভান্ডারটিকে আরও সমৃদ্ধ করেছেন; এই ভান্ডারটিকে কী ভাবে বাঁচিয়ে রেখে, আগামী প্রজন্মের মানুষ তথা জীবজগৎকে দীর্ঘমেয়াদি সুফল দেওয়া যায়, তার একটি সম্ভাব্য রূপরেখা বাস্তবায়িত করেছেন। তাকেই আধুনিক সংজ্ঞায় সংরক্ষণ বলা হচ্ছে। তারই প্রথম পদক্ষেপে গত শতকে, ১৯৯৯ সালের ৭ অগস্ট কলকাতায় একটি বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জীববৈচিত্র ও তার সম্পদমূল্য কী ভাবে সংরক্ষণ করে সমাজ তথা পরিবেশের অনুকূলে সুস্থিত ব্যবহার করা যায়। প্রধান বক্তা ছিলেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স-এর খ্যাতনামা পরিবেশ বিজ্ঞানী মাধব গ্যাডগিল। ২০০২ সালে এ দেশে জীববৈচিত্র আইন, এবং ২০০৪ সালে জীববৈচিত্র নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।
এই সূত্র ধরেই ‘জনবৈচিত্র নথি’ একটি আইনি নথিতে পরিণত হয়েছে। এটি হল, যে কোনও একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের জীববৈচিত্র সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ এবং প্রামাণ্য তথ্যভান্ডার। এর মাধ্যমে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা প্রকৃতির জৈব-অজৈব শৃঙ্খলগুলিকে সযত্নে রক্ষা করছেন, মানবসমাজকেও সুরক্ষার জালে আবদ্ধ করে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সাক্ষী ঘোষ হাজরা
উত্তরপাড়া, হুগলি
চেম্বার খুলুন
প্রাইভেট প্র্যাকটিসরত ডাক্তারদের কাছে অনুরোধ, আপনারা আবার আগের মতোই পাড়ার চেম্বারগুলোতে রোগী দেখা শুরু করুন। জনসংখ্যার অনুপাতে এ দেশে ডাক্তারের সংখ্যা এমনিতেই অনেক কম। তার উপরে আবার কিছু নির্বোধের জন্য চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনাও ঘটছে। তবুও সমাজের বৃহৎ অংশের কাছে আপনারা প্রকৃত সমাজবন্ধু। অতিমারির আবহে আপনাদের পরিষেবা একান্ত জরুরি।
আলোক রায়
কলকাতা-১১০
এত মামলা?
গত কয়েক বছরে বিশ্বভারতীর মামলা সংক্রান্ত খরচ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এই খাতে খরচ ২০১৮ সালে ছিল ৩৩ লক্ষ টাকা, ২০১৯ সালে ৩০ লক্ষ টাকা। বছর দশেক আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলার সংখ্যা হাতে গোনা যেত। জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটিতে এই খরচ ২০১৮ সালে ছিল ৩ লক্ষ টাকার কম, যদিও জেএনইউ-এর এর ব্যালান্স শিট বিশ্বভারতীর আড়াই গুণ আর বার্ষিক ব্যয় বিশ্বভারতীর দ্বিগুণ।
যেখানে মামলায় গত দু’বছরে মোট ৬৩ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে, সেখানে হস্টেল মেরামতির জন্য বরাদ্দ ২০১৮ সালে ৪.৭৩ লক্ষ ও ২০১৯ সালে ১৫ লক্ষ টাকা। হাসপাতাল মেরামতের খরচ শুধু ২.৬২ লক্ষ টাকা। প্রশ্ন উঠতেই পারে, কোনটি বেশি প্রয়োজন? আদালতে পৌঁছনোর আগে কি এগুলি সমাধান করা যেত না?
সুনন্দ রায়
প্রাক্তন ছাত্র, বিশ্বভারতী
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।