‘এটিকে’ নাম আগে জুড়ে, আই-লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে মাথা উঁচু করে বেরিয়ে গেল মোহনবাগান। যুগের ধারা মেনে, জমিদারি কায়দায় ফুটবল টিম চালানো ছেড়ে, কর্পোরেটের নিশ্চিন্ত ছত্রচ্ছায়ায়।
নামের আগে ‘এটিকে’ বসানো হল বলে অনেকের কাছ থেকে অনেক রকম টিটকিরি শুনতে হয়েছিল। কিন্তু অন্য কিছু কি করার ছিল? ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অভিজাত দলগুলো পারেনি কর্পোরেটের সাহায্য ছাড়া চলতে, পারেনি ইউরোপের বিভিন্ন ফুটবল-ঐতিহ্যপূর্ণ দেশগুলোর বিরাট নামীদামি দলগুলিও। কয়েক বছর আগে মদ কোম্পানির নাম তো মোহন ইস্টের নামের আগে বসেছিল! এখনও পর্যন্ত তো বেঙ্গালুরুর এক কোম্পানি ৭০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের আগে নিজের নাম বসিয়ে রেখেছে। তাতে যদি মহাভারত অশুদ্ধ না হয়ে থাকে, তবে ‘এটিকে’ নামটি মোহনবাগান ক্লাবের আগে বসলে কী ক্ষতি হবে? সমর্থকেরা তো শুধু দেখেন ক্লাবের নামটুকু আর জার্সির রং। ক্লাবের প্রশাসনে মাইনে করা, টাই-বাঁধা লোকজন বসে আছেন, না কি বংশপরম্পরায় গৌরী সেনের কায়দায় দু’হাত খুলে খরচ করা মানুষ বসে আছেন; কোটি কোটি সাধারণ সমর্থকের তাতে কিছু যায় আসে কি? সাধারণ সমর্থকেরা ক্লাবের সাফল্যে উদ্বাহু হয়ে নাচেন আর ব্যর্থতায় কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই ক্লাব তাঁদের জীবন, শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে মিশে আছে। কে ক্লাবের সভাপতি, কে সম্পাদক, তাতে কিচ্ছু যায় আসে না।
পার্থ নন্দী
শেওড়াফুলি, হুগলি
রিসর্ট রাজনীতি
এই সব ভোট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করদাতাদের টাকা নষ্ট করা অর্থহীন। সময়ের যেমন অপচয় তেমনই অহেতুক রক্তারক্তি ও প্রাণহানি। বিধানসভার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে বিধায়কদের প্রথমে বিলাসবহুল রিসর্টে গিয়ে রাখা হোক। তার পর সেখানে আইপিএলের ধাঁচে বিধায়কদের নিলামে তোলা হোক। প্রত্যেক পার্টির বাজেট কয়েকশো কোটির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে। যাঁদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল কেস সবচেয়ে বেশি, তাঁদের বেস প্রাইস বেশি রাখা হোক আর যাঁরা অপেক্ষাকৃত সৎ, তাঁদের বেস প্রাইস কম রাখা হোক। আর সরকার পাঁচ বছরই স্থায়ী হবে। কারণ মাঝপথে কোনও বিধায়ক চুক্তি ভেঙে অন্য দলে যেতে পারবেন না।
শঙ্খশুভ্র সরকার
গোবরডাঙা, উত্তর ২৪ পরগনা
বৈষম্য
গত ২৬-২ তারিখে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে নাগেরবাজার আসার জন্য প্রি-পেড ট্যাক্সি (বুথ)-এর ভাড়া দিই ২৬০ টাকা।
৮-৩ তারিখে আবার একই বুথে, একই জায়গায় যাওয়ার জন্য প্রি-পেড ট্যাক্সি ভাড়া চায় ৩৭০ টাকা। আবার, তার পাশেই বিধাননগর পুলিশ নিয়ন্ত্রিত প্রি-পেড বুথে ভাড়া চাইল ১৯০ টাকা। এই বৈষম্যের কারণ কিছুই বুঝলাম না!
জয়ন্তকুমার ভট্টাচার্য
কলকাতা-৭৪
ভুল তথ্য
পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাসংসদ থেকে প্রকাশিত একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ইংরেজি পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে অনেক ভুল কথা ছাপা রয়েছে। ২০ পৃষ্ঠায় মাদার টেরিজ়ার নোবেল লেকচার শীর্ষক লেখায় জননী টেরিজ়ার পরিচয়জ্ঞাপক অংশে লেখা হয়েছে, শি (মাদার টেরিজ়া) ওয়াজ় অ্যাওয়ার্ডেড দ্য নোবেল পিস প্রাইজ় ইন ১৯৯৭। সালটি হবে ১৯৭৯।
অমিয় কুমার মাইতি
সুতাহাটা, পূর্ব মেদিনীপুর
কেমন ছাড়পত্র
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বাংলা বাদে অন্যান্য বিষয়ে, অর্থাৎ ইতিহাস, ভূগোল, জীবনবিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের উত্তরপত্রে কোনও বাংলা বানান ভুল লিখলে পরীক্ষকগণ কোনও নম্বর কাটতে পারবেন না। এটা কী রকম বিচার হল? যে পরীক্ষার্থী শুদ্ধ বানানে উত্তর লিখবে এবং যে ভুল বানানে উত্তর লিখবে, তারা সমান নম্বর পাবে? অর্থাৎ ভালমন্দ একাসনে স্থান পেয়ে গেল। এটা ন্যায্য বিচার হল তো?
দ্বিতীয়ত ভুল বানান এক বার ছাড় পেলে, সেই অশুদ্ধ লেখার স্বাধীনতা স্বাভাবিক ভাবেই বাংলা ভাষার লিখনক্ষেত্রে তার কুপ্রভাব বিস্তার করবে। এই অবাধ অশুদ্ধ বানান লেখার ছাড়পত্র পরবর্তী জনজীবনে এক শ্রদ্ধাহীন, শৃঙ্খলাবিহীন, ‘যেমন খুশি লেখো’ জগাখিচুড়ি বাংলা ভাষার জন্ম দেবে।
দেবরঞ্জন তরফদার
কলকাতা-১২২
মধুর মধুর
গীতিকার হিসেবে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনেকগুলি অসাধারণ গানের কথা লেখা হয়েছে ‘গীতিকারও’ (২৬-২) শীর্ষক চিঠিতে। কিন্তু একটি অনবদ্য গানের কথা উল্লেখ নেই। ১৯৫৯ সালে তাঁর লেখা ‘মধুর মধুর বংশী বাজে কোথা কোন কদমতলীতে’ গানটি অসম্ভব জনপ্রিয় হয়েছিল এবং আজও সমাদৃত। গানটি গেয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় এবং সুরকার ছিলেন সুধীন দাশগুপ্ত।
অখিল বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা-৮৯
ব্রুটাস তুমিও
ভারতীয় রাজনীতিবিদদের ধর্মই যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে— ভোটের আগে এক রকম, ভোটের পর অন্য রকম। অরবিন্দ কেজরীবাল দিল্লিতে দাঙ্গা হাঙ্গামা শুরুর গোড়ার দিকে, সক্রিয় হলেন না। দাঙ্গার আগুন কিছুটা নিবলে তিনি সেনা নামানোর কথা বললেন। আর কানহাইয়া কুমার সম্পর্কে তাঁর সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত তো তাঁর এত দিনের চেনা মুখটাকেই কেমন অচেনা করে দিল। কানহাইয়া এবং আর কয়েক জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনেছিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তিনি নাকি ২০১৬ সালে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালীন প্রতিবাদ সভায় আরও কয়েক জনের সঙ্গে রাষ্ট্রদ্রোহের স্লোগান দিয়েছিলেন। অথচ তাঁকে স্লোগান দিতে কেউ দেখেননি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কানহাইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করতে বদ্ধপরিকর, আর এ জন্য দিল্লি সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। কেজরীবাল সেই অনুমোদন দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। কিন্তু এ বার তিনি অনুমতি দিলেন। কারণ ভোটপর্ব মিটে গিয়েছে। এখন তাঁর ভাবমূর্তিতে কালির ছিটে লাগলেও, পরবর্তী ভোটের এখনও অনেক দেরি। বলতে ইচ্ছে করছে, ‘ব্রুটাস তুমিও!’
তপন কুমার ভট্টাচার্য
ওলাইচণ্ডীতলা, হুগলি
যাত্রাতেও
যাত্রাপালার এক জন সফল ‘গায়ক-নায়ক’ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন অভিনেতা সন্তু মুখোপাধ্যায়। তখন স্বপনকুমার, তপনকুমার এবং অশোককুমারের মতো অভিনেতারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, তা সত্ত্বেও সন্তু মুখোপাধ্যায়ের যাত্রাভিনয় দেখার জন্য হাজার হাজার দর্শক ভিড় জমাতেন। তাঁর ‘অরণ্যের বাগদত্তা’, ‘স্বামী স্ত্রীর শেষ দেখা’, ‘কমলা কেমন আছো’ আজও দর্শকদের মনে আছে।
অরুণ মালাকার
কলকাতা-১০৩
কে কার ভয়ে
দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলা হচ্ছে, নেতা মন্ত্রীদের বিদেশ সফর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বিদেশি রাষ্ট্রনায়কেরা পর্যন্ত করমর্দনের পরিবর্তে ‘নমস্তে’ বলতে অভ্যস্ত হচ্ছেন। অথচ কোনও সরকার কিন্তু এখনও রাজনৈতিক জনসভা বা র্যালির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। কেন? করোনাভাইরাসও কি রাজনৈতিক পার্টি বা নেতাদের ভয় পায়?
সৌমিত্র বিশ্বাস
কলকাতা-২৮
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।