রাজ্য জুড়ে প্রতি দিন বহু গ্যালন জল নষ্ট হচ্ছে। জল অপচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকা। যেখানে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (পিএইচই) পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্রামের বিভিন্ন পাড়ায় জল সরবরাহ করা হয়। প্রতি দিন সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় যে পরিমাণ জল নষ্ট হয়, তার চেয়ে কম জল গ্রামবাসীরা ব্যবহার করেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যের কয়েকটি ব্লক চলে এসেছে ‘ব্ল্যাক জ়োনের’ আওতায়। তার পরেও সচেতন না-হলে সত্যি এক দিন কল থেকে জল পড়াই বন্ধ হয়ে যাবে।
রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকের পিএইচই থেকে জল সরবরাহের দু’টি সময়ে অধিকাংশ কল থেকে জল পড়ে নষ্ট হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এক দিকে যেমন বহু দূর থেকে লাইন দিয়ে জল নিতে হয়, তেমনই বহু জায়গাতেই জল ব্যবহারের কেউ নেই। কোনও কল না-থাকায় ইচ্ছে থাকলেও জল পড়া বন্ধ করা যায় না। আবার অনেক জায়গায় কল খোলা অবস্থায় জল নষ্ট হতে দেখা যায়। একই ছবি বিভিন্ন জেলার বহু ব্লক জুড়ে। শুধু জল ধরে রাখার ব্যবস্থা না-থাকার কারণেই অনেক জায়গায় এমন অবস্থা। জল সংরক্ষণের বিষয়ে প্রশাসনকে আরও কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।
সুকমল দালাল
খণ্ডঘোষ, পূর্ব বর্ধমান
বৃষ্টির জল
জল সংরক্ষণ দিবস উপলক্ষে বিশেষজ্ঞদের তরফ থেকে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা প্রশংসনীয় (‘ছোট আবাসনেও বৃষ্টির জল ধরার প্রস্তাব’, ১৩-৬)। আমি হাওড়ার একটি সরকারি আবাসনের বাসিন্দা। বিশাল এলাকা জুড়ে এই আবাসনে প্রতি দিন পাম্পের জল উপচে পড়ার ফলে বিপুল পরিমাণ জল নষ্ট হয়। এই নিয়ে বার বার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি।
এই অপচয় বন্ধ করতে সদিচ্ছার প্রয়োজন। বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করা নিঃসন্দেহে ভাল প্রয়াস। কিন্তু প্রতি দিনের জল অপচয় বন্ধ করার ব্যাপারে পুরসভাগুলি কতটা তৎপর? জল নষ্ট হওয়া যদি বন্ধ না করা যায়, তবে ভবিষ্যতে বৃষ্টির সংরক্ষিত জলও অপচয় হবে।
রাখি দাস
হাওড়া
সমবায় কর্মী
আমি সমবায় সমিতির কর্মচারী। পশ্চিমবঙ্গের সমবায় ব্যবস্থা নিয়ে আমরা গর্বিত, কিন্তু আমাদের কাজের কোনও সরকারি স্বীকৃতি নেই। পশ্চিমবঙ্গে ছ’হাজার সমবায় সমিতি রয়েছে, যেগুলি আর্থিক সহায়তা পায় জেলা বা রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কের থেকে, এবং রাজ্য সমবায় দফতরের নির্দেশ অনুসারে পরিচালিত হয়। সমবায় সমিতির কর্মী হিসেবে আমরা কৃষিঋণ দান, আমানত সংগ্রহ, সার-বীজ-কীটনাশক চাষিদের ন্যায্যমূল্যে বিতরণ, কৃষিযন্ত্র ভাড়া দেওয়া, সরকারি মূল্যে ধান ক্রয় প্রভৃতি কাজ করে থাকি। গ্রাম বাংলার অর্থনীতির অনেকটাই নির্ভরশীল এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার উপর। কিন্তু আমরা আজও ব্রাত্য। লকডাউনের সময়েও আমরা আমানত সংগ্রহ প্রভৃতি পরিষেবা দিয়ে চলেছি, কিন্তু ব্যাঙ্কের কর্মীরা যে ধরনের সুরক্ষা পাচ্ছেন, তা সমবায় সমিতির কর্মীরা পাচ্ছেন না। আমাদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও নেই। সরকারি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের কোনও সুবিধেই আমরা পাই না।
আমাদের বেতনের কোনও পরিকাঠামো নেই। সমিতি কেমন বেতন দেয়, তা নির্ভর করে সমিতির বোর্ড অব ডিরেক্টর্সের উপর। এ রাজ্যের প্রায় ২৬০০ সমবায় সমিতি আমানত ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, বাকিরা নয়। এই দ্বিতীয় শ্রেণির সমিতিতে কর্মরত কর্মীরা বিশেষ ভাবে বঞ্চিত, কেউ কেউ মাসিক তিন হাজার টাকাতেও কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। রাজ্য সরকার সমবায় কর্মীদের কেবলমাত্র একটি ‘অ্যাড হক’ অনুদান দেয়। তার অঙ্ক বেশ কম, এবং কবে তা পাওয়া যাবে তা নির্দিষ্ট করে জানারও উপায় নেই।
রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ, সমবায় সমিতির কর্মচারীদের সরকারি স্বীকৃতি, বেতন পরিকাঠামো, স্বাস্থ্যসাথী, ও কাজের নিরাপত্তা দেওয়া হোক। ‘অ্যাড হক’ অনুদান যেন অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে সরাসরি দেওয়া হয়। সরকার সমবায় নিয়ে ভাবছে, কিন্তু সমবায় সমিতিগুলির কর্মচারীদের নিয়ে কিছু ভাবছে কি?
মনোজিৎ ঘোষাল
পুরুলিয়া
স্টেশন যন্ত্রণা
সম্প্রতি কাশিমবাজার রেল স্টেশনে ১, ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার জন্য লিফট বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। যাঁরা কাশিমবাজার রেল স্টেশন ব্যবহার করেন, তাঁরা জানেন এটা কতখানি প্রয়োজন ছিল। মালগাড়ি ঢুকলে প্ল্যাটফর্মে যাওয়া এবং প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরনো দুই-ই অত্যন্ত কষ্টকর ছিল। অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে মালগাড়ির তলা দিয়ে নিচু হয়ে প্ল্যাটফর্মে যাতায়াত করেছেন। আসলে কাশিমবাজার স্টেশনটির পরিকল্পনাই অবৈজ্ঞানিক। মালগাড়ির মাল খালাসের জায়গাটি করা হয়েছে টিকিট কাউন্টার ও প্ল্যাটফর্মে ঢোকার দিকে। ফলে প্ল্যাটফর্মে ঢোকা ও বেরনোর জন্য করে দেওয়া হয়েছে ওভারব্রিজ। সেই ওভারব্রিজ উঠতে-নামতে একশোর কাছাকাছি সিঁড়ি ভাঙতে হয়। বয়স্ক, শিশু, অসুস্থ মানুষের পক্ষে সেটা অত্যন্ত কষ্টকর।
সুব্রত পাল
খাগড়া, বহরমপুর
অসাধু ব্যবসায়ী
লকডাউন চলাকালীন সরকারি নজরদারির অভাবে পূর্বকোলা, মৈশালী, রাধামণি-সহ তমলুকের বিভিন্ন বাজারে কিছু মুদি ও পণ্য ব্যবসায়ী পণ্যদ্রব্যের প্যাকেটে লেখা নির্দিষ্ট দামের থেকে বেশি দাম নিচ্ছেন। নামী কোম্পানির টক দইয়ের প্যাকেটে লেখা দাম ১৫ টাকা হলেও স্থানীয় বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ২০-২২ টাকায়। বেশির ভাগ স্থানীয় কারখানায় উৎপাদিত পণ্যদ্রব্যের প্যাকেটে দামের উল্লেখ থাকছে না, এমনকি স্থানীয় পণ্যদ্রব্যের প্যাকেটে লেখা ওজনের সঙ্গে বাস্তবের ওজনও মিলছে না। তেল বা অন্যান্য পণ্যের ১ কেজির প্যাকেটের ওজন মেরেকেটে ৯০০-৯৫০ গ্রাম। কোনও কোনও স্থানীয় বা নামী কোম্পানির পণ্যদ্রব্যের প্যাকেটে আবার দু’রকমের ওজনেরই ছাপ থাকে, কোথাও আবার দামের ছাপই থাকে না। সম্প্রতি করোনার দাপটে পাঁশকুড়া পাইকারি বাজার বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করেছেন। উপভোক্তা দফতরের আইন থাকলেও তা মানছে কে!
সুদীপ্ত মণ্ডল
তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর
সাবওয়ে কই
হুগলি জেলার সিঙ্গুরের উপর দিয়ে গিয়েছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে। প্রতি দিন অজস্র গাড়ি তীব্র বেগে এর উপর দিয়ে ছুটে যায়। কিন্তু সিঙ্গুর থানার অন্তর্গত জনবহুল এলাকা ঘনশ্যামপুর মোড়ে এক্সপ্রেসওয়েতে কোনও সাবওয়ে নেই। এক্সপ্রেসওয়ে শুরুর প্রথম দিন থেকে সাবওয়ে তৈরির দাবি জানিয়ে প্রতিশ্রুতি মিললেও, তার রূপায়ণ হয়নি। রাস্তার পূর্ব দিকে তেলিপুকুর, আজবনগর, দুর্গারামপুর, মোল্লাসিমলা-সহ একাধিক ঘনবসতিপূর্ণ গ্রাম আছে। সেখান থেকে বহু মানুষ সিঙ্গুর বাজারে আসে। এমনকি সিঙ্গুর হাসপাতালে, বিডিও অফিসে আসার জন্যও এই রাস্তাটি ভরসা। শতাধিক ছাত্রছাত্রীকে এক্সপ্রেসওয়ের আপ ও ডাউন রাস্তা পার করে বিভিন্ন বিদ্যালয় এবং সিঙ্গুর কলেজে আসতে হয়। যে কোনও মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। এর আগেও এখানে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু কাজ কিছুই হয়নি।
তাপস দাস
সিঙ্গুর, হুগলি
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।