কৃষ্ণাঙ্গ মানুষটির গলায় হাঁটু দিয়ে, মানুষটিকে শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করার ভিডিয়োটি আজ ভাইরাল। বীরদর্পে গলার ওপর বসে আছে শ্বেতাঙ্গ খুনি, এক জন পুলিশ, সকালবেলা রাস্তার ওপরে, সবার সামনে,আর হাত বাঁধা কৃষ্ণাঙ্গ লোকটি কাটা মুরগির মতো ককিয়ে উঠছেন। ওঁদের পরিচয়: ওঁরা ‘কালো, বড্ড লাউড, অশিক্ষিত, নোংরা, ভয় লাগে ওঁদের দেখলে, ওঁরা অপরাধপ্রবণ,ওঁদের হুড এরিয়াতে দুপুর-রাতেও না যাওয়া ভাল।’
যাঁরা ভিডিয়োটি দেখেছেন, তাঁরা খেয়াল না করে পারবেন না খুনির মুখটা, কী নিষ্ঠুর পরিতৃপ্তি সেই মুখে। কৃষ্ণাঙ্গ মানুষটি বার বার আকুতি জানাচ্ছেন, ‘‘আই কান্ট ব্রিদ”, আমি শ্বাস নিতে পারছি না। বলা হচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গটি টাকা জালিয়াতি করেছেন, কিন্তু এখনও সেটা প্রমাণিত নয়। কিন্তু পুলিশের অধিকার কি এতটাই, যেখানে শাস্তি বর্বরতার মাপকাঠিও পেরিয়ে যেতে পারে? কোন সভ্য দেশের ছবি এটা?
ওবামার কথায়, ‘‘দিস কান্ট বি নর্মাল ইন ২০২০।” অগ্নিগর্ভ আজ গোটা আমেরিকা। জ্বলছে আগুন, বোম ফাটছে রাস্তায়, চিৎকার, স্লোগান, ভাঙছে দোকানের কাচ, চলছে পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, পাল্টা বোমাবাজি। উত্তেজিত হয়ে বিভিন্ন শহরের রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ। দাবি একটাই, ‘বন্ধ হোক বর্ণবৈষম্য।’ সাদা কালো নির্বিশেষে বিক্ষোভকারী আজ রাস্তায়। উদ্ভ্রান্ত, ক্রোধান্বিত, তাঁরা অপরাধীর শাস্তি চান।
আমি ভারতীয়, আমি নিউ জার্সিতে বাস করি। হ্যাঁ আমি আজ ভয় পাচ্ছি। বাঁচতে পারব তো এই দেশটায়? যে দেশের একটা গ্রিন কার্ড পাওয়ার জন্য আমরা সবাই রোজ ঠাকুরের কাছে প্রায় হত্যে দিয়ে পড়ে থাকি, আজ সেই দেশটাকে ঘেন্না হচ্ছে কি?
এই ঘটনা নতুন নয়, সারা বিশ্বে ‘কালো চামড়া’কে শ্বাসরোধ করে মারা হয় রোজ। কখনও পণের দাবিতে, কখনও কটূক্তিতে, কখনও ফর্সা হওয়ার মিথ্যে বিজ্ঞাপনে, কখনও সাদা-কালোর রেসিস্ট মন্তব্যে। সমস্যাটা আসলে সব দেশের, সব সমাজের।
সুস্মিতা রায়চৌধুরী, নিউ জার্সি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
এর পর কারা
চিঠি লিখছি আমেরিকায় বসেই। আসলে চোরাগোপ্তা বর্ণবৈষম্য, মানে কালোদের উপর সাদাদের অত্যাচার, এ দেশে নতুন নয়। এর আগে অনেক হয়েছে, সব সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু যুগ বদলেছে, এখন সবার হাতেই মোবাইল, তাতে ছবি ওঠে। এই ঘটনাও হয়তো মানুষের সামনে আসত না, যদি না সে দিন কেউ ভিডিয়ো করত। কী ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্য, এক জন নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি, পুলিশকে অনুরোধ করছেন, আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না, আমায় ছেড়ে দিন। কিন্তু পুলিশ তাঁর গলায় হাঁটু দিয়ে বসে তাঁকে মেরে ফেলল বহু লোকের সামনে। এর পর দেশের প্রেসিডেন্টের উচিত ছিল, মানুষদের আশ্বস্ত করা (বিশেষত কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের) যে এমন ঘটনা আর যাতে না ঘটে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, পুলিশেরও যথোপযুক্ত শাস্তি হবে। তার বদলে, তিনি উস্কানিমূলক টুইট করলেন। মানুষ প্রথমে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছিলেন, এ বার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ আরও খেপে গেলেন। খারাপ মানুষ পৃথিবীর সব ক্ষেত্রেই থাকে, পুলিশের মধ্যে যেমন খারাপ পুলিশ ছিল, তেমন প্রতিবাদীদের সবাই যে ভাল মানুষ হবেন, সেই দিব্যি কে দিয়েছে? প্রতিবাদের নামে শুরু হল দোকান লুট করা। ফলে কার্ফু জারি।
দেশের প্রেসিডেন্টের যা হালচাল, সামনের ভোটেও ইনি জিতলে, মনে হয়, ভারতবাসীর আমেরিকা-স্বপ্নের পথ কণ্টকময় হতে চলেছে। আজ যা কালোদের উপর চলেছে, কাল যে সেটা বাদামিদের (এশীয়দের) উপর হবে না, কে বলতে পারে? অনেক মার্কিন শ্বেতাঙ্গ পরিবারে, তিন-চার জন মিলে রোজগার করেও মাসের শেষে ঠিক ভাবে সংসার চালাতে পারেন না, সেখানে চোখের সামনে ভারতীয়রা দামি বাড়ি-গাড়ি করে ঘুরে বেড়ান। কে বলতে পারে, সেই দিন হয়তো দূরে নেই, যখন শ্বেতাঙ্গদের রাগ ও অন্যায় হিংসার আঁচ ভারতীয়দের পোয়াতে হবে।
সোমাশ্রী দত্ত, ক্যালিফর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মহামারি, ঝড়
১৮৬২ সাল থেকে ১৮৭২ সাল পর্যন্ত প্রায় এক দশক কাল ধরে বর্ধমান ও হুগলি জেলায় ম্যালেরিয়া জ্বর মহামারির আকার ধারণ করেছিল। বর্ধমান জেলায় প্রথমে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল বলে রোগটি ‘বর্ধমান জ্বর’ নামেও খ্যাত হয়েছিল। জানা যায়, সেই সময় এই রোগে আক্রান্ত হয়ে দুই জেলায় প্রায় এক লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল।
বিদ্যাসাগর হোমিয়োপ্যাথিক ওষুধ ও ডাক্তার নিয়ে বর্ধমান শহরে পৌঁছেছিলেন এবং সেখানে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে দিনের পর দিন রোগীদের ঘরে ঘরে গিয়ে চিকিৎসা করেছিলেন। আর এই রোগের কারণ অনুসন্ধানের জন্য গঠিত কমিশনের একমাত্র ভারতীয় সদস্য রাজা দিগম্বর মিত্র মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘সরকার যত্রতত্র রাস্তা বাঁধ ও রেলওয়ে লাইন নির্মাণ করায় জল নিকাশের বিঘ্ন উৎপাদিত হয় এবং তাহার ফলে যে সমস্ত ভূ-ভাগ অধিকতর আর্দ্র হইয়াছিল, সেই সকল স্থানেই এই মহামারী প্রথম আরম্ভ হয়।’’
‘‘কলকাতায় সেই তাণ্ডব’’ (২৫-৫) শীর্ষক চিঠিতে আমপান প্রসঙ্গে উঠে এসেছে ১৭৩৭ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রবল ঝড় ও বৃষ্টির কথা, যে ঝড়ে কলকাতা ও তার পাশ্ববর্তী এলাকায় নিহত মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০ হাজার!
এই প্রসঙ্গে জানাতে চাই, ১৮৬৪ সালের ৫ অক্টোবর (২০ আশ্বিন, ১২৭১ বঙ্গাব্দ) বঙ্গদেশের হুগলি, শ্রীরামপুর, কালনা, কৃষ্ণনগর, রামপুর-বোয়ালিয়া, পাবনা ও বগুড়া অঞ্চলে প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে, বাকল্যান্ড সাহেবের হিসাবে প্রায় ৪৭ হাজার ৮ শত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল,আর গৃহপালিত পশু মারা গিয়েছিল প্রায় ১ লক্ষ ৩৬ হাজার! এই ঝড়বৃষ্টিতে এত সম্পত্তি ও অর্থহানি হয়েছিল যে, বাকল্যান্ড সাহেবের মতে, তা হিসাব করা সম্ভব ছিল না। এই ঝড় ‘আশ্বিনে ঝড়’ নামে খ্যাত হয়েছিল।
প্রসন্নকুমার কোলে, শ্রীরামপুর, হুগলি
আমের ক্ষতি
জোড়া বিপদ— ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আমপান এবং তার পর কালবৈশাখীর প্রভাবে দক্ষিণ বঙ্গের অন্যান্য জেলার মতো হুগলি জেলাতেও আমের ফলনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেল। জেলার পূর্ব দিকে আদিসপ্তগ্রাম, দেবানন্দপুর, রাজহাট, সুগন্ধা, জারুড়া পঞ্চায়েত এলাকা থেকে সিঙ্গুর হরিপালের বিস্তৃত অংশ বাগানদেশ নামে পরিচিত। সেখানে আম, লিচু, কাঁঠাল চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন অধিকাংশ মানুষ। আমপানের ফলে এই বাগানদেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল। আমের ফলন এ বছর খুব ভাল হয়নি। চাষিরা এমনিতেই চিন্তায় ছিলেন। অনেকেই লিজ় নিয়ে আমবাগান চাষ করেছিলেন। আম তোলা, জাঁক দেওয়া, বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন লোক, গাড়ির ড্রাইভার, সহায়ক এর সঙ্গে যুক্ত থাকেন। আমপান ও কালবৈশাখীতে অধিকাংশ আম ঝরে পড়ে গেছে, বড় বড় গাছ ভেঙে পড়েছে।
সাম্য বাঁক, শালুকগোড়, হুগলি
ট্রেন থামুক
ভারতীয় রেলের চালানো বিশেষ ট্রেনগুলোর মধ্যে দূরপাল্লার পূর্বা এক্সপ্রেস ছাড়া কোনও ট্রেন দুর্গাপুরে থামবে না। ফলে দুর্গাপুর থেকে কোনও যাত্রী লখনউ, বেরিলি, লুধিয়ানা, অমৃতসর অথবা আগরা, জয়পুর, জোধপুর, বিকানির যেতে বা ওই স্থানগুলি থেকে আসতে পারবেন না। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, ট্রেনগুলোর মধ্যে জোধপুর/ বিকানির এক্সপ্রেস এবং অমৃতসর এক্সপ্রেস স্পেশাল ট্রেন দুটি দুর্গাপুরে অন্তত দু’মিনিট থামুক।
স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।