Devotional Songs

ভক্তিগীতি বাজুক

দুর্গোৎসব বা অন্য ধর্মীয় উৎসবগুলিতে ধর্মীয় সঙ্গীত— যা ভক্তি বা নিবেদনের ভাব জাগায়— মাইকে বাজা উচিত নয় কি? তার বদলে উত্তেজনা-বর্ধনকারী গান পুজো প্যান্ডেলে বেজে চলেছে বহু বছর ধরে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯ ০০:০৫
Share:

— ফাইল চিত্র

দুর্গোৎসব বা অন্য ধর্মীয় উৎসবগুলিতে ধর্মীয় সঙ্গীত— যা ভক্তি বা নিবেদনের ভাব জাগায়— মাইকে বাজা উচিত নয় কি? তার বদলে উত্তেজনা-বর্ধনকারী গান পুজো প্যান্ডেলে বেজে চলেছে বহু বছর ধরে। সেগুলো তো ব্যক্তিগত ভাবে শোনা যায় সারা বছর ধরেই, বিশেষত আজকের প্রযুক্তির দৌলতে। কিন্তু সর্বজনীন উৎসবে সর্বজনীন, শাশ্বত বোধের উদ্রেক করে ও শুভবোধ জাগায়, এমন ভক্তিমূলক সঙ্গীত বাজলে পূজাপ্রাঙ্গণের পরিবেশ আরও সার্থক হয়ে উঠতে পারে। পূজামণ্ডপ প্রার্থনার জায়গা, বিনোদনের নয়।

Advertisement

রীনা আইচ (পণ্ডিত)

কলকাতা-৩৭

Advertisement

দেশান্তর

বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে মোটামুটি ভাবে সবাই সহমত, মানুষের সৃষ্টি আফ্রিকা মহাদেশে হয়েছিল। আমাদের পূর্বপুরুষদের বংশবৃদ্ধির হার সেই এলাকায় খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অপ্রতুলতার সৃষ্টি করে। ফলে তারা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। এই নতুন বাসস্থানও বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়লে সেখান থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে আবার নতুন জায়গার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েছে তারা। উন্নত সুযোগ-সুবিধা পেতে, বাণিজ্য করতে, দেশ জয় করতে, কখনও বা স্রেফ খাদ্যের সন্ধানে দেশান্তরে গমন করেছে। কখনও সেই নতুন স্থানে থিতু হয়েছে, কখনও সাময়িক লাভক্ষতির হিসেব চুকিয়ে আবার পুরনো জায়গায় ফিরে এসেছে। এই ভাবে বহু জাতির মানুষ ভারতেও এসেছেন। আদতে জঙ্গলের সন্তান বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর মানুষেরা ছাড়া বাকি সবাই আমরা এই দেশে আক্ষরিক ভাবেই বহিরাগত ‘অনুপ্রবেশকারী’দের বংশধর। কারও পূর্বপুরুষ বহু দিন আগে এসে বসতি স্থাপন করেছেন বলে তাঁদের অধিকার জন্মে যায় না, ১৯৭১ সালের পরে আসা অধিবাসীদের বিতাড়িত করার।

সবচেয়ে বড় কথা, এই মানদণ্ড কে কোন অধিকারে ঠিক করবে, কবে থেকে কোন মানুষজনকে কোথায় বসবাস করতে দেবে? তার নৈতিক ভিত্তি কী? যে কোনও প্রাণী উন্নততর সুযোগ-সুবিধার জায়গায় ‘মাইগ্রেট’ করবেই— এটাই প্রকৃতির ধর্ম। মানুষও তার ব্যতিক্রম নয়। যে ভাবে এখানকার মানুষ এক কালে অধিকতর সুযোগ-সুবিধা পেতে বিলেতবাসী হতেন, এখন আমেরিকায় দৌড়ন। এনআরসি করব, একে তাড়িয়ে দেব, ওকে রাখব— এগুলো একটা সফল রাষ্ট্রের আশু কর্তব্যের মধ্যে পড়ে না।

এই ভাবে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে একটা অপ্রকৃতিস্থ হিংসাত্মক সমাজ গণ-হিস্টিরিয়াগ্রস্ত হয়ে ব্যর্থ রাষ্ট্র তৈরির দিকে সভ্য সমাজকে নিয়ে যায়। সেই পরিণতি কিন্তু খুব সুখের নয়।

পার্থ নন্দী

শেওড়াফুলি, হুগলি

আতঙ্ক

‘জাতীয় আতঙ্ক’ (২৫-৯) শীর্ষক সম্পাদকীয়ের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নেতাদের আক্রমণাত্মক বিভিন্ন বক্তব্য প্রচারের মধ্য দিয়ে সত্যিই সমগ্র দেশ, বিশেষ করে এই রাজ্য জুড়ে এক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া ভক্ত মিডিয়া তো আছেই। এই আতঙ্ক বেশি করে বুঝতে পারছি যখন তা একেবারে ঘরের দুয়ারে এসে উপস্থিত হয়েছে। ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য স্থানীয় কর্পোরেশনের দফতরে উদ্বিগ্ন হাজার লোকের লাইন। বিভিন্ন কাজের জন্য বাড়িতে আসা মানুষগুলোর শুকনো মুখের উদ্বেগ। এমনকি বাড়ির ল্যাপটপ যে যুবকটি দেখাশোনা করেন, তাঁর ব্যবসা ছেড়ে পরিবারের পরিচয় লাভের জন্য দৌড়াদৌড়ি। নোটবন্দির সময় যে হয়রানি মানুষের দেখা গিয়েছিল, এ যেন তার কয়েকশো গুণ হয়ে ফিরে এসেছে।

এ দিকে অর্থনীতির বেহাল অবস্থা, কাশ্মীরের মানুষ নিজের দেশেই বন্দি। খবরে প্রকাশ, ১৩০০০ কিশোর কাশ্মীরে নিখোঁজ। এ যেন কারাগারে দেবকীর সদ্যোজাত সন্তানকে হত্যা করার প্রয়াস, যাতে কাশ্মীর নিয়ে পরবর্তী প্রজন্মে আর কেউ কথা বলার জন্য না থাকে। এনআরসি নামক এক আতঙ্ক ছড়িয়ে, চাকরি না থাকা বা পেঁয়াজের দাম ৬০ টাকা থেকে নজর হটিয়ে দেওয়ার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা নয় তো এটা? যাতে লোকে নিজের নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যস্ত থাকে বেশি, এতেই সময় আর শক্তি ক্ষয় করে? সাধারণ মানুষ সরকারের প্রতি যেন বিক্ষোভ দেখাবার ফুরসত আর না পায়?

কিন্তু এত কিছুর পরেও ভাবতে ইচ্ছা করে, মুসলিম বিদ্বেষের যে তাস দিয়ে কাশ্মীর বা দেশের আর্থিক দুর্দশাকে পিছনে ফেলে আমজনতার দেশপ্রেম চাগাতে এই সরকার সক্ষম হয়েছিল, এনআরসি যেন সেখানে ক্ষুদ্র হলেও এক ছিদ্র তৈরি করতে পেরেছে। এখন আমজনতার কাছে পাকিস্তান বা মুসলিম জুজুর চেয়ে নিজের নাগরিকতা হারাবার সম্ভাবনার জুজু বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। এই সর্বব্যাপী আতঙ্ক সমস্ত ধর্মের মানুষকে এক সমতলে নিয়ে আসতে পারে বলে ভাবতে ইচ্ছে করছে।

প্রেমাংশু দাশগুপ্ত

কলকাতা-৩৪

ভাষার একতা

খবরে পড়ছি, কেন্দ্রীয় সরকার ‘এক দেশ, এক ভাষা’ চালু করার পক্ষপাতী। এ প্রস্তাব সমর্থনযোগ্য না কি নয়, সে বিতর্কে না গিয়ে নিজের একটি অভিজ্ঞতা জানাই। আমি তখন জার্মানির কার্লশ্রুয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপক স্বামীর সহগামিনী হয়ে সেখানে আছি। এক দিন শুনলাম, দক্ষিণ ভারতীয় এক অধ্যাপক এসেছেন দিন কয়েকের জন্য। আমাদের বিদেশি বন্ধুরা সেই অধ্যাপকের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ করাতে উদ্যোগী হলেন। আমি অধ্যাপক দম্পতিকে আমাদের বাড়িতে আমন্ত্রণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলাম। সাক্ষাৎ হতেই আমরা ইংরেজি ভাষাতেই আলাপন শুরু করলাম। এক বিদেশি বন্ধু মুখে বিদ্রুপাত্মক হাসি ফুটিয়ে যা বললেন, তার বঙ্গার্থ, ‘‘তোমরা দু’জনেই ভারতীয়, অথচ দেখছি তোমরা বিদেশি ভাষা ইংরেজিতেই আলাপ করছ। তোমাদের কোনও ভারতীয় ভাষা নেই?’’ অত্যন্ত বিব্রত বোধ করেছিলাম। আমি হিন্দিতে মোটের ওপর কাজ চালাতে পারলেও, দক্ষিণ ভারতীয় ভদ্রলোক সে ভাষা বলতে আগ্রহী নন। আজও ঘটনাটি মনে পড়লে বড়ই অপমানিত বোধ করি। আমার ভারতীয়ত্বে যেন ঘা লাগে।

সুমিতা চক্রবর্তী

কলকাতা-৬৭

সুরাহা হল না

দুর্গাপুজোয় চার দিকে আলো, রোশনাই। কিন্তু আমি আর আমার শিশুপুত্রের জীবনে শুধুই অন্ধকার। স্বামীকে হারিয়েছি ২০১৬’র জানুয়ারিতে। তিনি পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনে এক জন স্থায়ী কর্মী হিসেবে কর্মরত অবস্থায় মারা গিয়েছেন। কিন্তু এই ২০১৯-এও পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশন থেকে আমরা তাঁর অবসরকালীন কোনও সুযোগ-সুবিধা (পেনশন সংক্রান্ত) বা চাকরি, কিছুই পেলাম না। অথচ, পেনশন সংক্রান্ত ফাইলটি মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদনের পর অর্থ দফতর, A&G, W.B./CAG দফতরে যায় এবং প্রতিটি জায়গা থেকেই অনুমোদনপ্রাপ্ত হয়। বর্তমানে ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ফাইলটি প্রধান সচিবের কাছে রয়ে গিয়েছে।

কাজ এতখানি এগোনোর পরেও আমাদের কোনও সুরাহা হল না। আজ অর্থসঙ্কটে আমার সংসার ধুঁকছে। আমার মতো হতভাগ্য আরও কিছু কমিশনের পরিবার আছে, যারা এ ভাবেই দারিদ্রের সঙ্গে প্রতিনিয়ত বাঁচার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ, এই মানবাধিকার কমিশনের কাছেই দূরদূরান্ত থেকে লোকেরা ছুটে আসছে তাদের পেনশন/মানবাধিকার পাওয়ার আশায়। কিন্তু এখানকার কর্মচারীরাই বাঁচার ন্যূনতম অধিকার থেকে বঞ্চিত।

বনশ্রী দে

কলকাতা-২৬

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement