লকডাউনে ভিনরাজ্যে আটকে পড়েছেন অনেকেই।
১) বেড়াতে গিয়ে দিল্লিতে আটকে বন্ধুরা, বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করুক প্রশাসন
লকডাউন চলছে। আগামীর আশঙ্কা নিয়ে দিনগুলো কেটে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য, জরুরি পরিষেবা, ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা দিনরাত যে ভাবে যুদ্ধ করছেন তা ভাষাতীত। কেন্দ্রীয় আর রাজ্য সরকার সবরকম চেষ্টা করছে এই বিপর্যয় মোকাবিলার। প্রথম সারির উন্নতশীল দেশগুলির অবস্থা দেখলে সত্যি নিজেদের মাঝে মাঝে অসহায় মনে হয়। লকডাউনের পরে অর্থনীতি কি তলানিতে চলে যাবে? কোটি কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বেন? এই সব খবর নিয়ে দৈনিক বিভিন্ন প্রতিবেদন ছাপা হচ্ছে। এ দেশের কিছু কিছু রাজ্য আবার অনেকাংশে পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল। আর ভ্রমণপ্রিয় বাঙালির গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ তো এই মারণ ভাইরাস পুরোপুরি পণ্ড করে দিয়েছে। পুজোর ভ্রমণ নিয়েও সবাই দোলাচলে। বিশেষজ্ঞরা তো বলেই দিয়েছেন, এ ভাইরাস অনেক দিন ভোগাবে। লকডাউনের আগে আগে বহু মানুষ ঘুরতে গিয়ে আটকে পড়েছেন। প্রতিদিন ফেসবুকে বা খবরে দেখি উত্তরাখণ্ড, হিমাচলে আটকে আছেন এ রাজ্যের বহু পর্যটক। এই রকম আমার দুই বন্ধু (দেবাঞ্জন মণি ও মৈনাক চট্টোপাধ্যায়) মধুচন্দ্রিমা কাটাতে গিয়ে সস্ত্রীক দিল্লিতে আটকে পড়েছে। হোলির পর পরই তারা দুর্গাপুর থেকে রওনা হয় সিমলা, কুলু, মানালির উদ্দেশে। তখন অবশ্য মারণ ভাইরাস এ দেশে ধীরে ধীরে থাবা বসাচ্ছিল। ২২ মার্চ জনতা কার্ফুর জন্য বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন। এর পর দিল্লির বাইরে বেরনো প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। কোনও গাড়ি এয়ারপোর্ট বা স্টেশন যেতে অস্বীকার করে। ২৪ মার্চ থেকে শুরু হয় লকডাউন। অগত্যা গুরুগ্রামের এক হোটেলে তাদের আশ্রয় নিতে হয়। প্রথম লকডাউনের পর বিমানের টিকিট কাটলেও তা বাতিল হয়ে যায়। এখন ৪ মে থেকেও ট্রেন বা বিমান চলবে কিনা তা সরকারও জোর দিয়ে বলতে পারছে না। বার তিনেক ট্রেনের টিকিট আর বার দুয়েক বিমানের টিকিট বাতিল হয়েছে ওদের। প্রত্যহ থাকা খাওয়া বাবদ দু’হাজার টাকার বিল মেটাতে হচ্ছে। হোটেলের বিশাল খরচ বহন করতেও পকেট এর অবস্থা খারাপ। ওরা দুর্গাপুরের মহকুমাশাসকের দফতর আর গুরুগ্রামের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু কিছু হয় নি। দিল্লি যে হেতু হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে, তাই এখন ওখান থেকে বাড়ি ফেরা কার্যত অসম্ভব। আতঙ্ক আর বাড়ি ফেরার স্বপ্ন বুকে নিয়ে দিন গুজরান করছে ওরা। আর কত দিন এ ভাবে কাটাতে হবে কেউ জানে না। আমি এই চিঠির মাধ্যমে ভিন রাজ্যে আটকে থাকা আমার বন্ধুদের মতো অসংখ্য পর্যটক, চিকিৎসা করতে যাওয়া অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানাচ্ছি। এই কঠিন সময়ে প্রশাসন এবং হোটেল মালিকদের কাছে আবেদন জানাই যে, আটকে পড়া পর্যটকদের সাহায্য করুন। লকডাউন মিটলেই তাঁদের দ্রুত বাড়ি ফিরতে সাহায্য করুন।
মানস মাজি
দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান
ইমেল- manas.jucivil@gmail.com
২) ১৭ মার্চ থেকে ভেলোরে আটকে, এ বার বাড়ি ফিরতে চাই
সিএমসি-তে ডাক্তার দেখানোর জন্য গত ১৭ মার্চ উত্তর ২৪ পরগনার মাটিয়া থেকে ভেলোরে আসি। সমস্ত পরীক্ষা করে ৩০ মার্চ ডাক্তার দেখানো শেষ হয়। লকডাউনের কারণে এখনও বাড়ি ফেরা হল না। আশা করেছিলাম, সরকার নিশ্চয় কিছু ব্যবস্থা করবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কিছু হয়নি। খুব অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে। কাছে যা টাকা পয়সা ছিল সব প্রায় শেষ। এ দিকে লজ মালিক ঘর ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। আমাদের কেউ সাহায্য করুন বা বাড়িতে ফেরানোর ব্যবস্থা করুন।
নুরুল ইসলাম
মোবাইল নম্বর ৯৭৩২৬২০৫৯০
৩) অভাবে মারা যাব, গৃহশিক্ষকদের কথাও ভাবুক সরকার
লকডাউনে কিছু কিছু ছাড় দেওয়া দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গৃহশিক্ষকদের কথা সরকার কবে ভাববে? অনেকে গৃহশিক্ষকতা করেই পেট চালান। তাঁদের এখন কী করে চলছে? নাকি আমাদের কেউ অভাবের তাড়নায় আত্মহত্যা করলে সরকার ভাববে? কারণ আমাদের রাজনৈতিক নেতারা মৃত্যুর রাজনীতিটা ভাল বোঝেন। মারা গেলে সবরকম সুযোগ পাওয়া যায়। করোনাতে না মরলেও, গৃহশিক্ষকরা অভাবে মরবে।
ইমেল- goutamadhikari75@gmail.com
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)