‘খলনায়ক, ভাল মানুষ’ (রবিবাসরীয়, ১৯-৪) শীর্ষক লেখাটির প্রসঙ্গে, হলিউডের কয়েক জন অভিনেতার কথা বলা যায়, যাঁরা খলনায়ক হিসেবেও জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। জ্যাক নিকলসন ব্যাটম্যানের জোকারের ভূমিকায় অভিনয় করে সফল হয়েছিলেন, পরে ওই ভূমিকায় দারুণ সফল হয়েছিলেন হিথ লেজার। হোয়াকিন ফিনিক্স (ছবিতে) সম্প্রতি ‘জোকার’ ছবিতে অভিনয় করে অনেক পুরস্কার পেয়েছেন, অস্কারও। ‘ডার্ক নাইট রাইজ়েস’-এ ব্রিটিশ অভিনেতা টম হার্ডির অভিনয় শিহরন জাগিয়েছিল। ‘ব্লেড রানার’ ছবিতে খলনায়কের অভিনয় করে অমর হয়েছেন জার্মান অভিনেতা রুটগার হ্যাওয়ার। আর ‘শিন্ডলার্স লিস্ট’-এ নিষ্ঠুর নাৎসি অফিসারের ভূমিকায় রেফ ফায়েন্স-কে ভুলে যাব কী করে! প্রতিটা জেমস বন্ডের সিনেমার নামী ভিলেনদের কথা লিখলে প্রায় উপন্যাস হয়ে যাবে। এখনকার ছবিতে প্রথম সারির ভাল অভিনেতারাও খল চরিত্রে অভিনয় করেন। বলা যায়, এই ট্রেন্ড শুরু হয়েছিল ‘গডফাদার’ ছবিটার অসামান্য প্রভাবের জেরে। নেগেটিভ শেডে অভিনয়ের জন্য নামী নায়করা এগিয়ে এলেন, সফলও হলেন।
রম্যাণি বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা-৭৮
এম আর
করোনা পর্বে সারা দেশ জুড়ে শ্রমজীবী মানুষের দুরবস্থার কথা ভেবে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার বিভিন্ন বার্তা ও আদেশনামা জারি করলেও, ভারতের লক্ষ লক্ষ মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েন্টেটিভের অসহনীয় অবস্থার কথা ভেবেছেন বলে মনে হয় না। হাতে-গোনা কয়েকটি ওষুধ কোম্পানি সবেতন ছুটি ঘোষণা করলেও, দু’একটি কোম্পানি ‘লিভ উইদআউট পে’ করেছে। আর অনেক কোম্পানি আংশিক বা খেপে খেপে মাইনে দিচ্ছে। বাকি আর্থিক সুবিধা অনিশ্চিত। ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ সেলস রিপ্রেজ়েন্টেটিভস ইউনিয়নের (NFSRU) পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতর সহ সর্বভারতীয় বিভিন্ন মালিক সংগঠনের (IPA, OPPI, IDMA, PAMDAL, FICCI, ASSOCHAM) কাছে বিভিন্ন দাবি সহ প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয়েছে। ‘এম আর’-দের কাজের সার্বিক সুরক্ষা; ক্ষুদ্র, মাঝারি, ছোট কোম্পানিগুলোকে আর্থিক সহযোগিতা দান ও কেন্দ্রীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে চাঙ্গা করার দাবিও করা হয়েছে।
জয়ন্ত কুমার পাঁজা
কোন্নগর, হুগলি
অন্য বিচার
লকডাউনের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাইকর্মী, খাদ্য সরবরাহ ও পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত কর্মী, সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা রাতদিন খাটছেন। শিক্ষকেরা চেষ্টা করছেন অনলাইন ক্লাস নিতে। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বন্ধ থাকলেও, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করছেন। কেবলমাত্র রাজ্যের বিচারব্যবস্থার মধ্যে কোনও রকম প্রযুক্তিগত বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। লক্ষ লক্ষ কেস বকেয়া, অথচ নিস্পৃহ মনোভাব। এই সময় উচ্চ ও নিম্ন আদালতগুলিতে জমে থাকা মামলাগুলিকে কী ভাবে মেটানো যায়, ভাবা উচিত। কারণ অনেকের কাছে মামলা ভবিষ্যতের সুস্থ জীবনের প্রশ্ন।
জয়ন্তী বিশ্বাস
দমদম
ব্যাঙ্ককর্মীই ঠিক
‘এটাও দেখুন’ (১৭-৪) শীর্ষক পত্রের উত্তরে জানাই, এক জন ব্যাঙ্ককর্মী যদি কোনও গ্রাহককে ভুল পেমেন্ট করেন, তা হলে তাঁকেই তার দায় বহন করতে হয়। স্বভাবতই তিনি তাঁর নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে সব কিছু খতিয়ে দেখেই পেমেন্ট করবেন। এটাই স্বাভাবিক। এতে কোনও গ্রাহকের রাগ হওয়ার কথা নয়।
পত্রলেখক জানিয়েছেন, তাঁর মা উইথড্রয়াল স্লিপে টিপসই দিয়ে পেনশনের টাকা তোলেন। তিনি তাঁর মায়ের টিপসই সহ উইথড্রয়াল স্লিপটি ব্যাঙ্ক আধিকারিকের কাছে জমা দিলে, আধিকারিক তাঁর মায়ের কাছে জানতে চান, ‘এটা আপনার টিপসই?’ আধিকারিকের এই জানতে চাওয়াটা অপরাধ?
জানাই, সঠিক নিয়মে আগে থাকতে টিপছাপ দিয়ে সেই উইথড্রয়াল স্লিপ আধিকারিকের কাছে জমা দেওয়ার কথা নয়। নিয়ম হল, যিনি টিপছাপ দিয়ে টাকা তুলবেন, তিনি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের কাছে গিয়ে তাঁর অভিপ্রায় জানালে, আধিকারিক তাঁর সামনেই উইথড্রয়াল স্লিপে গ্রাহকের টিপছাপ নেবেন এবং সেটি যে তাঁর উপস্থিতিতেই গৃহীত হয়েছে সেই মর্মে টিপছাপের পাশে মন্তব্য লিখে সই করে পাসবই সহ স্লিপটি কাউন্টারে পাঠাবেন। আগে থেকে টিপছাপ দিয়ে সেই স্লিপ জমা দিলে, কোনও আধিকারিকের সেটা গ্রহণ না করাটাই যুক্তিসঙ্গত। কেননা পাসবইয়ের ছবি দেখে ব্যক্তিটি সঠিক কি না বোঝা গেলেও, টিপছাপটি সংশ্লিষ্ট গ্রাহকেরই কি না, সে সন্দেহ থেকেই যায়। অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকের মুখের কথায় বিশ্বাস করে বহু আধিকারিককে খেসারত দিতে হয়েছে।
লেখক ক্ষুব্ধ হয়েছেন, কারণ আধিকারিক তাঁকে বলেছেন, ‘আপনি জানেন না, ব্যাঙ্কে কত রকমের ফ্রড হয়, এক জনের টাকা আর এক জন তুলে নিয়ে যায়।’ হ্যাঁ, ঠিকই তো বলেছেন তিনি। ব্যাঙ্ককর্মীরা সে সব হাড়ে-হাড়ে টের পান। অসুস্থ মায়ের জীবিতাবস্থায় চেকবইয়ের পাতার পর পাতায় মায়ের সই করিয়ে রেখে, গুণধর সন্তান মায়ের মৃত্যুর পরও দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে সেই চেকে টাকা তুলে গিয়েছে, এমন নজিরও আছে। কাজেই ব্যাঙ্ককর্মীদের সতর্ক থাকতেই হয়। আর কুড়ি হাজার টাকার বেশি তোলার জন্য আধিকারিকের পুনরায় সম্মতি গ্রহণ করা প্রসঙ্গে জানাই, এই নিয়মটা কোনও শাখার ব্যাঙ্ককর্মী ঠিক করেন না। ব্যাঙ্কের শীর্ষ মহলের কর্তাব্যক্তিরা যে নিয়মবিধি চালু করেন, ব্যাঙ্ককর্মীরা সেই নিয়মগুলিই পালন করতে বাধ্য থাকেন।
সব অফিসেই এমন দু’এক জন কর্মী থাকেন, যাঁদের আচরণ সব সময় ঠিক বলে মনে হয় না। শুধু ব্যাঙ্ককর্মীদের বিরুদ্ধেই বিষোদ্গার করার যুক্তি নেই। বরং নোটবন্দির সময় বা সাম্প্রতিক করোনা আবহেও ব্যাঙ্ককর্মীরা নীরবে যে ভাবে গ্রাহকদের পরিষেবা দিয়েছেন, তার জন্য তাঁদের কুর্নিশ জানাতেই হয়।
সমীর কুমার ঘোষ
কলকাতা-৬৫
জুটমিল
রাজ্যের আড়াই লক্ষ চটকল শ্রমিক আজ তাঁদের পরিবার নিয়ে চরম সঙ্কট এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। শ্রমিক বস্তিগুলো থেকে অনাহার, অর্ধাহার, আত্মহত্যা ও মৃত্যুর খবর আসতে শুরু করেছে। মালিকরা লকডাউন পর্বের দেয় মজুরির এক পয়সাও দেননি। এ নিয়ে সমস্ত জুটমিলে গেটে গেটে বিক্ষোভ হয়েছে। মালিকদের টনক নড়েনি। উল্লেখ্য যে, কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম দফতর, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং চিফ সেক্রেটারির কাছ থেকে লকডাউন পর্বের পুরো মজুরি শ্রমিকদের দিয়ে দেওয়ার অ্যাডভাইসরি বা অর্ডার আসার পরেও চটকল মালিকরা কর্ণপাতই করেননি।
এই শ্রমিকরাই দীর্ঘ বছরের পর বছর উৎপাদন দিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের শ্রমেই মালিকের মুনাফার পাহাড় গড়ে উঠেছে। মালিকরা একটা মিল থেকে দুটো-তিনটে-পাঁচটা মিলের মালিক হয়েছেন। এঁরা এখন একচেটিয়া মালিক হিসেবে কাঁচা পাট সহ বস্তার বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন।
মুখ্যমন্ত্রী ১৫ শতাংশ শ্রমিক নিয়ে ২০ এপ্রিল থেকে এক দিন পর পর কাজ দিয়ে মিল খোলার ছাড়পত্র দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে ১৫ শতাংশ শ্রমিক দিয়ে চটকলে উৎপাদন সম্ভব কি? কিছু শ্রমিককে কাজ দিয়ে সিংহভাগ শ্রমিককে বঞ্চিত করে রাখলে মিলে শান্তি থাকবে কি? আবার পুরোদমে চটকল চালু হলে কি গোষ্ঠী সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে না? জরুরি হল, শ্রমিকদের প্রাপ্য লকডাউনের পয়সা মিটিয়ে দেওয়া।
অমল সেন
সাধারণ সম্পাদক, বেঙ্গল জুটমিলস ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন (এআইইউটিইউসি অনুমোদিত)
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।