তৃতীয় দফার লকডাউন কার্যকর করার শুরুতেই সুরা নিয়ে সুর নরম করেছেন কেন্দ্রীয় সরকার। অবশেষে নীতি-নির্ধারকরা উপলব্ধি করলেন, রাজস্ব ঘাটতির খানিকটা সুরাহা হতে পারে মদ বিক্রি করে। প্রথম দফা লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর সদ্যপ্রয়াত অভিনেতা ঋষি কপূর টুইট করেছিলেন মদের দোকান খোলা রাখার পক্ষে। সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি নেতারা ব্যঙ্গবিদ্রুপ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তাঁর দিকে।
কোনও এক অজ্ঞাত কারণে শুরু থেকেই আমাদের দেশের নীতিনির্ধারকরা সুরাপ্রেমীদের জন্যে হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা কার্যকর করেননি। সেটি হলে ডেলিভারি-বয়দের কিছু রোজগারের সুযোগ থাকত, আর মদের দোকানের বাইরে অহেতুক ভিড় হত না। ঋষি কপূর বেঁচে থাকলে হয়তো টুইট করতেন, ‘জাম হ্যায় তো জঁহা হ্যায়’।
পিনাকী রুদ্র
কলকাতা-১২৪
লকডাউনে মদ
এত দিন পিছনের দরজা দিয়ে মদ বিক্রি হচ্ছিলই। এ বার সামনের দরজা দিয়ে হবে। হবে ৩০% বাড়তি কর চাপিয়ে। এর ফলে সরকার ভাল পরিমাণ রাজস্ব তুলবে। কিন্তু লকডাউনের উদ্দেশ্য এবং প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। মাতালরা লকডাউন বিধি ভাঙলে, তা অস্বাভাবিক নয়। খেলার বা মেলার মাঠে সন্ধ্যার পর একত্রে বসে মদ খেলে এবং হইহুল্লোড় করলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারটি প্রহসনে পর্যবসিত হবে। তা ছাড়া যে সব গরিব মানুষ সুরাসক্ত, তাঁরা ঘরের সামান্য পুঁজি ভেঙে মদের দোকানে লাইন দেবেন। মদ্যপ অবস্থায় পারিবারিক অশান্তি বাড়তে পারে, প্রতিবেশীদের মধ্যে অশান্তিও। সরকার কি দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে ?
গৌরীশঙ্কর দাস
সাঁজোয়াল, খড়্গপুর
ভুল সিদ্ধান্ত
এখন মদের দোকান খোলার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী। দোকান খোলার আগেই দোকানের সামনে সুরাপ্রেমীরা যে ভাবে ভিড় জমালেন, দেখে আঁতকে উঠতে হয়। কোনও দূরত্বই বজায় রাখছেন না এঁরা। যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান, সেখানে এই ঘটনা তো আগুনে ঘি দেওয়ার মতো হবে। সরকারের কাছে আবেদন, মদ যদি বিক্রি করতেই হয়, অনলাইন প্রক্রিয়ায় তা হোক। নচেৎ কোষাগার ভরাতে গিয়ে দেশ উজাড় হয়ে যাবে।
অভিজিৎ ঘোষ
শ্যামনগর, উত্তর ২৪ পরগনা
গঠনমূলক
করোনা-আক্রান্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পারদ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। বঙ্গের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের পত্র-চালাচালিকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত জনমানসে যে ঝড় উঠছে তা বহুলাংশে হাসির খোরাকও বটে! মফস্সল থেকে গ্রাম— দৃশ্যটা একই; প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সরকার কর্তৃক বরাদ্দ পণ্যসামগ্রী সঠিক ভাবে জনতার কাছে পৌঁছচ্ছে না, অথচ এই আমজনতাই সরকারের ভিত্তিভূমি। খাদ্য গণবন্টনের সঙ্গে জড়িত মধ্যস্বত্বভোগী কিছু মানুষের চৌর্যবৃত্তি জনসমক্ষে এলেই, দৈববাণীর মতো শোনা যাচ্ছে, বিশেষ কিছু দল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে কুৎসা রটাচ্ছে। অগ্নিগর্ভ বাদানুবাদের মাঝে অসহায় আমজনতা কিন্তু প্রকৃত বরাদ্দটা পেল না। দোষারোপে না গিয়ে, যদি দলমত নির্বিশেষে ইলেক্টেড-সিলেক্টেডের ঊর্ধ্বে উঠে গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনা করা হয়, আশার আলো মিলবে।
দেবজ্যোতি ঘোষ
খড়দহ, উত্তর ২৪ পরগনা
এ বার পুজোয়
এ বার দুর্গাপুজোয়, প্রতিমার বিকল্প হিসেবে ঘট স্থাপন করে পুজো করাটাই শ্রেয় নয় কি? জানি, প্রশ্ন উঠবে, তা হলে পুজোর সঙ্গে জড়িত এত জন কারিগর, ঢাকি—এঁদের কী হবে? যে প্রতিষ্ঠান বা ক্লাবেরা বড় বড় পুজো করে, তারা যদি, যে টাকা দিয়ে ঠাকুর কেনে সেই টাকা কুমোরকে দান করে, ঢাকির টাকা ঢাকিকে দান করে, যে টাকা দিয়ে প্যান্ডেল করে তার থেকে কিছু প্যান্ডেলওয়ালাদের দান করে, আর আড়ম্বর কমিয়ে ঘটপুজো করে, তা হলে মা কম নয়, বরং খুব বেশিই খুশি হবেন।
মাটির দশভুজাকে এ বার না-ই বা দেখলাম, না-ই বা শুনলাম ঢাকের আওয়াজ, না-ই বা দেখলাম আলোর রোশনাই। কিন্ত এ ভাবে যদি একটু ভাবি, তা হলে সবাই অন্তরে দশভুজাকে উপলব্ধি করতে পারব, সবার অন্তরে অল্প হলেও ঢাকের বাজনা শুনতে পাব, আলোর রোশনাই দেখতে পাব।
শর্মিষ্ঠা সেনগুপ্ত
কলকাতা-৪৫
চুনীর সিনেমা
চুনী গোস্বামী দুটি বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তাঁকে প্রথম দেখা যায় ১৯৬৫ সালে অজয় বিশ্বাস পরিচালিত ‘প্রথম প্রেম’ ছবিতে। এই ছবির প্রধান চরিত্রে ছিলেন বিশ্বজিৎ, প্রদীপ কুমার, সন্ধ্যা রায়। ছবিতে নায়ক বিশ্বজিতের পূর্বপরিচিত বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন খেলোয়াড় রূপী চুনী। তাঁর অভিনীত দৃশ্যটি হল: বিশ্বজিৎ এক জন উঠতি প্রতিভাবান ক্রিকেটার। চুনী কয়েকটি কথা বলে একটি ব্যাট তাঁর হাতে তুলে দিচ্ছেন।
দ্বিতীয় ছবি ১৯৭৮ সালে, অর্চন চক্রবর্তী পরিচালিত ‘স্ট্রাইকার’। এই ছবিতে অনিল চট্টোপাধ্যায়, শমিত ভঞ্জ, রুমা গুহঠাকুরতা সহ অনেকে ছিলেন। এই ছবিতেও নিজের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন চুনী।
বিশ্বনাথ বিশ্বাস
কলকাতা-১০৫
সংস্কৃত কই
দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষা দফতর অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে পাঠদানের উদ্যোগ নেয়। দুটি প্রচলিত বেসরকারি টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের বিকল্প শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়াও বাংলার শিক্ষা পোর্টালে ক্লাস ও বিষয় ভিত্তিক অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়া হয়। কিন্তু সপ্তম, অষ্টম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির একটি আবশ্যিক বিষয় হওয়া সত্ত্বেও তৃতীয় ভাষা সংস্কৃত বিষয়ের কোনও ক্লাস রাখা হয়নি এবং এই বিষয়ে কোনও অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে লিখিত আবেদন জানিয়েছি। শিক্ষা সচিব মহাশয়কে ফোনে সমস্যাও জানিয়েছি। কিন্তু শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগ গৃহীত হয়নি।
চন্দন গরাই
সম্পাদক, অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন
মোচ্ছব হচ্ছে
করোনা-যোদ্ধাদের স্যালুট জানিয়েছে সেনা। আকাশপথে হেলিকপ্টার থেকে হাসপাতালগুলির ওপর পুষ্পবৃষ্টি করা হয়েছে, সে সময় অভিবাদন জানাতে ব্যান্ড বেজেছে, যুদ্ধজাহাজে আলো জ্বলেছে।
অথচ ভারতে করোনা মোকাবিলায় যেমন পর্যাপ্ত কিট, পিপিই, ভেন্টিলেটর, অন্যান্য বহু সরঞ্জামের অভাব, তেমনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের সুস্থ ভাবে ঘরে ফিরিয়ে আনার যথাযথ ব্যবস্থারও অভাব। থালা বাজানো বা মোম জ্বালানোর চেয়ে, নিরন্ন পরিবারগুলির হাতে রেশন পৌঁছে দেওয়া অনেক জরুরি।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সৈনিকদের প্রতি ধন্যবাদ ও অভিবাদন জ্ঞাপন নিশ্চয়ই খুব ভাল ভাবনা, কিন্তু অপ্রয়োজনীয় মোচ্ছব পালন করার সময় বা পরিস্থিতি এটা নয়।
সরিৎশেখর দাস
চন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।