ধনেখালি থানার শাহবাজার গ্রামের মেলাতলা সংলগ্ন জায়গায় একটি শিশু উদ্যান তৈরির উদ্যোগ করা হয়েছিল। আয়তন খুবই ছোট। টেনেটুনে আড়াই হাজার বর্গফুট হবে। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে কাজ শুরু হয়। ঠিকঠাক কাজ হলে এক-দেড় মাসের মধ্যে তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। যখন শুরু হয়েছিল তখন ঝড়ের বেগে কাজও হয়। কাজের গতি দেখে এলাকার বাচ্চাদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছিল। জায়গাটার চার দিক ঘেরাও হয়ে গেল। ব্যস, ওই পর্যন্ত। এর পরই কোনও এক অজানা কারণে হঠাৎ কাজ গেল থমকে। সেই যে উদ্যানের কাজ বন্ধ হল, এখনও তা চালু হয়নি। বছরের পর বছর পার্কের কাজ বন্ধ থাকায় এখন জায়গাটা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। চার দিকে আগাছা, দেখলে মনে হবে ছোটখাটো জঙ্গল। বিষাক্ত সাপ বাসা বাঁধে। এই জায়গার আশপাশ দিয়ে যেতে ভয় লাগে। চার দেওয়ালে শেওলা পড়ে গেছে।
এই অবস্থায় উদ্যানটি আদৌ হবে কি না, সেই প্রশ্ন এলাকাবাসীর মনে দানা বাঁধতে শুরু করেছে। এই সামান্য কাজ করতে এত সময় লাগলে তা মেনে নেওয়া যায় না। এখন প্রশ্ন, কেন থমকে গেল পার্কের নির্মাণ? অর্থের অভাব? এই সামান্য কাজের টাকাও কি রাজ্য সরকারের ভান্ডারে নেই? দান-খয়রাতি থেকে মেলায়-খেলায় যদি কোটি কোটি টাকা খরচ হতে পারে, তবে একটা শিশু উদ্যান গড়তে সমস্যা কোথায়? এই ক্ষুদ্র কাজটিকে ঘিরে যদি কোনও দুর্নীতি হয়, তবে তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
অবিলম্বে পার্কটির অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা হোক। নয়তো আগাছা পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করা হোক। আফসোস যে, যারা ভবিষ্যতে দেশের হাল ধরবে, সেই শিশুদের নিয়েও ছেলেখেলা চলছে।
সৈয়দ মহম্মদ মুসা, শাহবাজার, হুগলি
যাত্রী-সুবিধা
গত ১৫ নভেম্বর শিয়ালদহ-বনগাঁ বিভাগের অশোকনগর স্টেশনে সকালের বনগাঁ-মাঝেরহাটগামী লোকালের যাত্রীদের অবরোধে ট্রেন চলাচলে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। অবরোধ তুলতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এই ধরনের অবরোধ বৈধ, না কি অবৈধ, সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। তবে সে দিনের অবরোধ যে নিত্যযাত্রীদের সব ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফল, সেই ব্যাপারে দ্বিমতের অবকাশ নেই। চক্ররেল ব্যবহারকারীদের মধ্যে যেমন আছেন বড় বাজার থেকে খিদিরপুর পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা কর্মক্ষেত্রে যাতায়াত করা অসংখ্য নিত্যযাত্রী, তেমনই আছেন আর জি কর হাসপাতালে যাওয়া রোগী ও তাঁর পরিজন, কলকাতা স্টেশন থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রী, গঙ্গা তীরবর্তী চক্ররেলের স্টেশনগুলো থেকে গঙ্গার ঘাট পার হয়ে হাওড়া যাওয়া মানুষজন, এমনকি মাঝেরহাট হয়ে দক্ষিণ শহর ও শহরতলির যাত্রীরা।
গণেশ চতুর্থী থেকে শুরু করে সরস্বতী পুজো পর্যন্ত সমস্ত পুজোর বিসর্জন উপলক্ষে, পুজো-পরবর্তী একাধিক দিন চক্ররেলের যাত্রাপথ ‘সংক্ষিপ্ত সমাপ্ত’ (শর্ট টার্মিনেটেড) এবং ‘সংক্ষিপ্ত শুরু’ (শর্ট অরিজিনেটেড) হয়। ইতিপূর্বে সকালের ট্রেনগুলো মাঝেরহাট বা বিবাদী বাগ পর্যন্ত যেত এবং শুধুমাত্র বিকেলের ট্রেনগুলো টালা স্টেশন পর্যন্ত যেত। এ বছর থেকে সমস্ত পুজোর বিসর্জন উপলক্ষে সকাল ও বিকেলের ট্রেনগুলোর যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এ বছর গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে পুজো-পরবর্তী পাঁচ দিনব্যাপী যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত হওয়ার আদেশ পালিত হয়েছে। এত দিন ধরে যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত থাকার আদেশে নিত্যযাত্রীরা অবাক। তালিকার নবতম সংযোজন, দীপাবলি উপলক্ষে সকাল-বিকেল যাত্রাপথের সংক্ষিপ্ত সমাপ্তি।
প্রশ্ন, সকালের ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হচ্ছে কেন? সকালে তো বিসর্জন বা শোভাযাত্রা হয় না। তা ছাড়া বেশ কিছু ক্ষেত্রে টালার পরিবর্তে বারাসত স্টেশনেই যাত্রাপথের শেষ করে দেওয়া হচ্ছে কেন? আগে থেকে ঘোষিত গন্তব্যস্থান, যাত্রার দিন হঠাৎ পাল্টে যায় কী ভাবে? মান্থলি টিকিট যাঁরা কাটেন, তাঁরা সম্পূর্ণ যাত্রাপথের জন্যই টাকা দেন। যাত্রাপথ ছোট করা হলে তাঁদের যে আর্থিক ক্ষতি হয়, তার দায় কে নেবে? রেল কর্তৃপক্ষের কাছে যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্য এত অবহেলিত কেন? এ ধরনের পদক্ষেপ কি জনস্বার্থের পরিপন্থী নয়?
সমস্যা সমাধানে রেল কর্তৃপক্ষ মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি-সহ সদর্থক পদক্ষেপ করবেন, এক জন সাধারণ যাত্রী হিসেবে এই আবেদন রইল।
অরিন্দম দাস, হরিপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
অ্যাপে বুকিং
‘ডিজিটাল টিকিট’ (১-১২) শীর্ষক সংবাদে জানতে পারলাম যে এ বার থেকে সরকারি বাসের টিকিট কাটা যাবে যাত্রী সাথী অ্যাপের মাধ্যমে। উদ্যোগ সাধু, কিন্তু সরকারি বাস যে দায়িত্ব নিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেবে, তার নিশ্চয়তা কোথায়? কিছু দিন আগে গড়িয়ায় যাব বলে মুদিয়ালিতে এস-৭ বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বাস যখন এল, তখন সিগন্যাল সবুজ হয়ে ছিল। হাত দেখাতে চালক সামনে যেতে ইশারা করলেন। বাস-ও এগিয়ে গেল। আমিও দৌড়লাম। বাস কিন্তু সিগন্যাল পার করে দাঁড়াল না। একটি অন্য বাসকে ওভারটেক করে দাঁড়াল। বাসটি আমার জন্য দাঁড়াবে, সেই আশায় দৌড়ে বাসের প্রায় কাছাকাছি পৌঁছনোর মুখে বাসটি ছেড়ে দিল।
তবে সামনের সিগন্যাল লাল থাকায় বাসটা কিছুটা দূরে আবার দাঁড়াল। কিন্তু দৌড়ে ধরার আগে ছেড়ে দিয়ে সেটি একেবারে ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেল। কাছে রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশনটি থাকায় অগত্যা মেট্রো ধরে গড়িয়া যেতে হল। এ ক্ষেত্রে তাই আমার প্রশ্ন, এখানকার বাসগুলির যাত্রী ওঠানোর যা ধরন-ধারণ, তাতে অ্যাপের বুকিং শেষ পর্যন্ত কাজে দেবে তো?
শুভজিৎ ঘোষ, কলকাতা-১৩৭
সঠিক ভাড়া
সম্প্রতি দিল্লি থেকে ফিরলাম। একটা বিষয় ভাল লাগল যে, এই মূল্যবৃদ্ধির সময়েও এখনও ওখানে সর্বনিম্ন বাস ভাড়া পাঁচ টাকা রয়েছে। বাসে নিউ দিল্লি রেলস্টেশন থেকে লাল কেল্লা পর্যন্ত গেলাম। ওই ভাড়াই লাগল। দেখলাম মহিলাদের জন্য বাসে কোনও ভাড়াই লাগছে না। বাসে উঠলে তাঁদের একটি করে টিকিটও দেওয়া হচ্ছে। এ দিকে, এ রাজ্যে সরকারি নিয়মে সর্বনিম্ন বাসভাড়া সাত টাকা থাকলেও দশ টাকার নীচে কেউ নেয় না। সরকারি সার্কুলারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রায় সব বাসেই বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। প্রশাসনও চুপ।
তাই, মুখ্যমন্ত্রী ও পরিবহণ মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, এই সর্বনিম্ন ভাড়ার ক্ষেত্রে সরকার হস্তক্ষেপ করুক। সর্বনিম্ন বাসভাড়া দিল্লির মতো পাঁচ টাকা এবং মহিলাদের বিনামূল্যে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হোক। এমনটা হলে সাধারণ মানুষের কিছুটা সুরাহা হয়।
শম্ভু মান্না, বহিচাড়, পূর্ব মেদিনীপুর
প্রবীণদের জন্য
হাওড়া স্টেশনের দৌলতে ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড মেট্রো রেলে যাত্রী-সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রবীণদের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু তাঁদের স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ উদাসীন। রেলের কামরায় গোটা কয়েক আসন বরাদ্দ ছাড়া আর কোনও বিশেষ ব্যবস্থা প্রবীণদের জন্য নেই। প্ল্যাটফর্মে বেঞ্চের সংখ্যাও অপ্রতুল। প্রায়শই তা অল্পবয়সিদের দখলে থাকে। অগত্যা অসমর্থ শরীরে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। আবার ট্রেন থেকে বেরিয়ে লিফ্ট ধরতেও অল্পবয়সিরাই দৌড়ে এগিয়ে যায়। লিফ্টে বয়স্কদের সুবিধা করে দেওয়ার কোনও মানসিকতা লক্ষ করা যায় না। এমন মসৃণ যাতায়াতের সুযোগ থেকে তবে কি বয়স্কদের ব্রাত্য হয়ে থাকতে হবে?
দেবব্রত সেনগুপ্ত, কোন্নগর, হুগলি