Editorial News

প্রাণবায়ুতে বিষ

বায়ুদূষণ যে শুধু কলকাতার সমস্যা, এমন নয়। পৃথিবীর যে কোনও শহরই নির্মীয়মাণ বা ক্রমবর্ধমান থাকা অবস্থায় দূষণ কবলিত হয়ে পড়ে, এ আমাদের সকলেরই জানা।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০১
Share:

কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, দেশের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত বায়ু যে শহরগুলোয়, তাদের মধ্যে কলকাতা অন্যতম। ফাইল চিত্র।

খারাপ খবরটা আগেই এসেছিল। আরও এক বার শোনা গেল কথাটা। জানা গেল, কলকাতার বাতাসে শ্বাস নেওয়া কতটা বিপজ্জনক। আগেই এই পরিস্থিতির কথা জানা সত্ত্বেও মহানগরের বায়ুদূষণ কমানোর প্রায় কোনও চেষ্টাই যে হয়নি, তা ফের বোঝা গেল।

Advertisement

কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক জানিয়েছে যে, দেশের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত বায়ু যে শহরগুলোয়, তাদের মধ্যে কলকাতা অন্যতম। দেশের শহরাঞ্চলে বায়ুদূষণের বিপজ্জনক মাত্রা কমিয়ে আনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে কর্মসূচি নিয়েছে, তার অঙ্গ হিসেবেই কলকাতার বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতির কথা পরিবেশ মন্ত্রক জানিয়েছে। লক্ষ্য ২০২৪ সালের মধ্যে এই বায়ুদূষণের পরিমাণ ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমানো। কিন্তু সে লক্ষ্যের দিকে আদৌ কি আমরা এগোতে পারছি? জোর দিয়ে কোনও ইতিবাচক জবাব দেওয়ার অবকাশ আমাদের সামনে এই মুহূর্তে অন্তত নেই।

কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের রিপোর্টেই আমরা প্রথম জানতে পারলাম যে, কলকাতায় বায়ুদূষণ বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেছে, এমন কিন্তু নয়। এর আগেও একাধিক বার এই তথ্য সামনে এসেছে। কিন্তু তাতে আমরা একটুও সজাগ বা সতর্ক হতে পেরেছি বলে মনে হয় না। বাতাসের দূষণ মাত্রায় অন্তত এমন কোনও ছাপ নেই, যা বলতে পারে যে, আমরা সতর্ক হয়েছি।

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

বায়ুদূষণ যে শুধু কলকাতার সমস্যা, এমন নয়। পৃথিবীর যে কোনও শহরই নির্মীয়মাণ বা ক্রমবর্ধমান থাকা অবস্থায় দূষণ কবলিত হয়ে পড়ে, এ আমাদের সকলেরই জানা। শহর হিসেবে কলকাতা বেশ কয়েকটা শতাব্দী পার করে এসেছে ঠিকই, কিন্তু কলকাতা এখনও নির্মীয়মাণ তথা ক্রমবর্ধমান। পরিবেশ মন্ত্রকের রিপোর্টও কিন্তু জানাচ্ছে সে কথাই। কলকাতার এই মারাত্মক দূষণ শিল্প বা কলকারখানার কারণে নয়। শিল্পের তত রমরমা কলকাতাকে ঘিরে নেই, যতটা রমরমা থাকলে শিল্পের দোহাই দিয়ে দূষণের অজুহাত খোঁজার চেষ্টা করা যায়। কলকাতার বায়ু যে আসলে পথের ধুলো এবং বিভিন্ন নির্মাণস্থলের ধুলোর কারণে বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে, বিভিন্ন রিপোর্টে তা স্পষ্ট। অর্থাত্ চাইলে অত্যন্ত দ্রুত পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সম্ভব। রাস্তাঘাটে নিয়মিত জল দেওয়া, রাস্তার দু’ধারে এবং মাঝের অংশে সবুজ বাড়ানো, রাস্তার ভাঙা অংশ দ্রুত সারিয়ে ফেলা— এ সবের মাধ্যমে পথের ধুলো কমিয়ে আনা সম্ভব। শহরে এবং শহরকে ঘিরে যে সব নির্মাণগুলো নিরন্তর হচ্ছে, সেই সব নির্মাণস্থলে খুব কঠোর ভাবে বায়ুদূষণ সংক্রান্ত কিছু বিধি কার্যকর করাও জরুরি। তাতেই পরিস্থিতি বদলাত শুরু করবে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।

আরও পড়ুন: অন্যতম দূষিত শহর কলকাতা, বলছে রিপোর্ট

শুধু রিপোর্ট চালাচালি আর উদ্বেগ প্রকাশ কিন্তু যথেষ্ট নয়। রোজ শ্বাসবায়ুর সঙ্গে বিষ নিচ্ছি আমরা শরীরে। সে কথা মাথায় রেখে যত দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে, ততই এ শহরের মঙ্গল, শহরবাসীর মঙ্গল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement