12th Fail & an Ex IAS

আইএএস পাওয়ার চেয়েও ছাড়া কঠিন! ‘টুয়েলভ্‌থ ফেল’ দেখে লিখলেন চাকরি ছেড়ে দেওয়া বাংলার প্রাক্তন আমলা

মনোজের সঙ্গে একটা সময়ে আমার সত্যিই মিল ছিল। সকলের জীবন যদিও ওর মতো নাটকীয় নয়। তবু আমার মনে হয়, ইউপিএসসি-র সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেওয়া প্রায় সকলের অভিজ্ঞতা কিছুটা হলেও মনোজের মতো।

Advertisement

অনুরাগ শ্রীবাস্তব

শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:০০
Share:

‘টুয়েলভ্থ ফেল’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত।

‘টুয়েলভ্থ ফেল’ দেখতে দেখতে পুত্র আচমকা প্রশ্ন করল, ‘‘বাবা, তুমি আইএএসের চাকরিটা ছেড়ে দিলে কেন?’’

Advertisement

পর্দায় তখন মনোজ শর্মা রাস্তার উপর কান্নায় ভেঙে পড়ছে। ইউপিএসসির রেজাল্ট বেরিয়েছে সদ্য। ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস (আইপিএস)-এ সুযোগ পেয়েছে। চূড়ান্ত আবেগঘন সেই মুহূর্তে ছেলের প্রশ্ন আমাকে ঝাঁকিয়ে দিল। মনে হল, মাথাটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। সত্যিই তো! কেন ছেড়েছিলাম আইএএসের চাকরি?

‘টুয়েলভ্থ ফেল’ সিনেমার মূল চরিত্র মনোজের আইপিএস অফিসার হওয়ার লড়াই, প্রস্তুতি এবং শেষে সাফল্য দেখে ছেলে যে আমাকে এমন প্রশ্ন করতে পারে, তা কখনও ভাবতে পারিনি। হকচকিয়ে গিয়েছিলাম প্রথমে! ও আমার আইএএস হওয়ার নেপথ্যসংগ্রাম দেখেনি। শুধু দেখেছে বাবা আইএএসের চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছে। কঠিনতম লড়াই, কঠিনতর প্রস্তুতি আর কঠিন পরীক্ষা পেরিয়ে ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (আইএএস)-এ যোগ দিয়েছিলাম ২০০৭ সালে। টানা ১৬ বছর সেই চাকরি করেছি। কর্মজীবনের মাঝপথে এসে সেই চাকরি ছেড়েছি মাস তিনেক আগে। গত অক্টোবরে। কিন্তু তার জন্য আমায় দিতে হয়েছে অন্য পরীক্ষা। নিতে হয়েছে ভিন্ন প্রস্তুতি। লড়তে হয়েছে আলাদা লড়াই।

Advertisement

চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পেতাম। ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় আমি যত না বিনিদ্র রাত কাটিয়েছি, ওই সময়টায় তার চেয়ে ঢের বেশি রাত জেগেছি! ওটা আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। তবে এখন আমি খুশি। আমি গর্বিত। সিদ্ধান্তটা নিতে পেরেছি। চাকরিটা ছাড়তে পেরেছি। সহজ ছিল না।

বিধু বিনোদ চোপড়ার ছবির চরিত্র মনোজের সঙ্গে একটা সময়ে আমার সত্যিই মিল ছিল। সকলের জীবন যদিও ওর মতো নাটকীয় নয়। তবু আমার মনে হয়, ইউপিএসসি-র সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেওয়া প্রায় সকলের অভিজ্ঞতা কিছুটা হলেও মনোজের মতো। পর্দায় মনোজ-কাহিনি দেখতে দেখতে মনে পড়ে যাচ্ছিল, দিল্লির রাজেন্দ্রনগরের রাস্তাঘাট। সেখানকার বুক স্টল। চায়ের দোকান। মুখার্জি নগর-জিয়া সরায়ে পায়রার খোপের মতো সব ঘর। গোটা ঘরে ডাঁই করা বই। দেওয়ালে পোস্টার সাঁটা। সেখানে নানা তথ্যপঞ্জি। আইএএস-আইপিএস হওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া যে কোনও ছেলেমেয়ের কাছে এ সব খুব পরিচিত দৃশ্য। মনোজের সঙ্গে আমার মিল খুঁজে পাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।

কে এই মনোজ? বিধু বিনোদের ‘টুয়েলভ্থ ফেল’ ছবির নায়ক মনোজ চম্বলের মোরেনার বাসিন্দা। বাবা সরকারি কর্মী। কিন্তু ঘুষ নেওয়ার প্রতিবাদ করে ঊর্ধ্বতনকে জুতোপেটা করে চাকরি থেকে সাসপেন্ড হয়েছেন। বাড়িতে মনোজের ঠাকুমা-মা-ভাই-বোন রয়েছেন। আর মনোজ? দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় টুকলি করতে গিয়ে এক সৎ পুলিশ অফিসারের হাতে ধরা পড়েছে। একা নয়, ওর ক্লাসের সকলেই। অবধারিত ভাবে সকলেই ‘টুয়েলভ্থ ফেল’!

যে প্রধানশিক্ষক ওদের অসৎ হতে সাহায্য করতেন, তিনি গ্রেফতার হলেন। পরে ছাড়া পেলেন। পরের বছর সৎ পুলিশ অফিসারও বদলি হয়ে গিয়েছেন। তাই সকলে আবার টুকে পাশ। ব্যতিক্রম মনোজ। সে না-টুকে থার্ড ডিভিশনে ‘টুয়েলভ্থ পাশ’। তত দিনে মনোজ স্থির করে নিয়েছে, তাকেও ওই সৎ পুলিশ অফিসারের মতো (ডিএসপি) হতে হবে। এর পর বিএ পাশ করে সৎ পুলিশ হওয়ার লক্ষ্যে মনোজ ঘটনাচক্রে গ্রাম ছেড়ে দিল্লিতে আসে। ঘটনাচক্রেই সে নিতে শুরু করে আইপিএসের প্রস্তুতি।

ইউপিএসসি-র পরীক্ষা দিয়েই আমি আইএএস অফিসার হয়েছিলাম। ছবিতে দিল্লিতে কষ্টেসৃষ্টে টিকে থাকা মনোজের আইপিএস হওয়ার লক্ষ্যে লড়াই দেখানো হয়েছে। ইউপিএসসি-র সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে। শুরু ‘প্রিলিমিনারি’র ফর্ম ফিল আপ দিয়ে। তার পর মেন পরীক্ষা। শেষে ইন্টারভিউ। এখনও মনে আছে, প্রস্তুতির সেই সময়ে ঘড়ি ধরে টানা ১২-১৪ ঘণ্টা পড়তাম। অনুপ্রেরণা যোগাতেন বিগত কয়েক বছরের ‘টপার’রা। তাঁদের ছবি দেখতাম। ওঁরাই তো নায়ক! তাঁরা তত দিনে হয়তো মুসৌরির অ্যাকাডেমিতে চলে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের সাফল্যের কথা ঘুরে বেড়াত দিল্লির অলিগলিতে। পর্দার মনোজও শুনেছিল সেই লোকগাথা। দেখা পেয়েছে কয়েক জনের। আমিও পেয়েছিলাম।

তবে মনোজের মতো চার বার পরীক্ষা দিয়ে নয়। আমি প্রথম বারেই সফল হয়েছিলাম। ২০০৭ ব্যাচের আইএএস আমি। প্রিলিমিনারি, মেন এবং ইন্টারভিউ পেরিয়ে এক বারে আইএএস অফিসার হওয়া মুখের কথা নয়! নিজেকে ভাগ্যদেবীর বরপুত্র মনে হয়েছিল। মনে আছে, আমার আইএএস অফিসার হওয়ার আনন্দে দূরসম্পর্কের আত্মীয়েরাও মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন তাঁদের প্রতিবেশীদের। সেই আত্মীয়েরা, যাঁরা তার আগে আমার সঙ্গে দেখা হলেও খুব একটা কথা বলতেন না।

আইএএস অফিসার হিসাবে আমি বাংলায় বহু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছি। বিভিন্ন জেলায় অতিরিক্ত জেলাশাসক, দার্জিলিং, পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমানে জেলাশাসক, অর্থ দফতরের বাজেট শাখা, ছোট-ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই), শিল্প এবং খাদ্য দফতরেও কাজ করেছি। পেশাগত সাফল্য মানুষকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ করে তোলে। ঠিক যেমন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে পর্দার মনোজ।

এত কিছুর পরেও আমি আইএএসের চাকরিটা এক দিন ছেড়েই দিলাম।

কেন? ছেলের সেই প্রশ্নের জবাব দিতে পারিনি। এ সব বোঝার পক্ষে ও অনেকটাই ছোট। তবে এটা ঠিক যে, চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্তটা সহজ ছিল না। আইএএস অফিসার হিসাবে ১৬ বছর চাকরি করার পর সেটা শুধু ‘চাকরি’ থাকে না, হয়ে ওঠে জীবনের পথ। হয়ে ওঠে ‘দ্বিতীয় সত্তা’। যাকে ইংরেজিতে ‘অল্টার ইগো’ বলে। হয়ে ওঠে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক এবং পেশাগত পরিচিতিও। যেটা ছেড়ে দেওয়ার কথা কল্পনা করাও কঠিন!

আমার ছেলে পর্দায় মনোজের লড়াই দেখে আমাকে আইএএসের চাকরি ছাড়ার কারণ জিজ্ঞেস করেছে। হয়তো বুঝতে পেরেছে, ওর বাবাও এমনই একটা লড়াই জিতে আইএএস হয়েছিল। তা হলে ছেড়ে দিল কেন? আর শুধু আমার পুত্র কেন? আমাকে তো অন্য অনেকে এখনও জিজ্ঞাসা করেন, আপনার পরিবার আপনাকে এই চাকরিটা ছাড়তে দিল? বাবা-মা কিছু বললেন না?

দেশের মেধাসম্পন্ন ছেলেমেয়েদেরই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই করে ইউপিএসসি। আইআইটি কানপুর থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর আমি আইএএস অফিসারই হতে চেয়েছিলাম। যে কারণে চেয়েছিলাম, তার সবটা যে পূরণ হয়নি, তা-ও নয়। এই চাকরিতে যে বৈচিত্র্য, সম্মান, ‘এক্সপোজার’ আছে, তা অন্য কোথাও বিরল। তবে আইএস অফিসারেরাও নিজের কাজের মাধ্যমে সেই ‘প্রাপ্তি’ ফিরিয়ে দেন। প্রত্যেক অফিসারেরই পেশাগত জীবনে নানা চ্যালেঞ্জ থাকে। কিন্তু তাঁরা পেশাগত পরিসরে নিজেদের অবদান রাখতে চান। রাখেনও। আইএএস অফিসারদের মধ্যে বিভ্রান্তি যে নেই, তা নয়। কিন্তু সে তো জীবনের প্রতিটি পর্যায়েই রয়েছে।

সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সফল হওয়া এবং আইএএস অফিসার হিসাবে টানা ১৬ বছর কাজ করার পর নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, ছেড়ে দেওয়ার চেয়ে এই চাকরিতে ঢোকা অনেক সহজ। ‘টুয়েলভ্থ ফেল’ ছবিতে মনোজের লড়াই যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা হয়তো ভাববেন, এটা কী বলছি! তবে যা বলছি, ভেবেই বলছি। কেউ যখন আইএএস বা আইপিএস হওয়ার লক্ষ্যে প্রস্তুতি নেন, তখন তাঁকে শুধু কঠোর পরিশ্রমটাই করতে হয়। আর কিছু নয়। সেখানে সবটাই সাদা-কালো। হয় তিনি পরীক্ষায় পাশ করবেন অথবা ফেল। কিন্তু চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্তে অনেক ‘যদি’, ‘কিন্তু’, ‘তবে’, ‘অথবা’ থাকে। সেখানে সব কিছু ধূসর। একমুখী। এক বার ছেড়ে দিলে পেশাদার জীবনের সম্মান ও নিশ্চিন্তির পরিসরে ফেরার আর কোনও উপায় নেই।

তা হলে আমি ছেড়ে দিলাম কী করে? আসলে আমি অন্তরাত্মার কথা শুনতে পাচ্ছিলাম— জীবনে ঠিক বা ভুল বলে কিছু হয় না। এগিয়ে চলো।

আমি চাকরিজীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝতে পারছিলাম, এমন সুপবন সারা জীবন বইবে না। আগামী দিনে এই চাকরি এক অর্থে ‘বিরক্তিদায়ক’ হয়ে উঠবে। চাকরি জীবনের প্রথম দিকে নানা ঘটনায় খুবই রোমাঞ্চিত হতাম। কিন্তু সে সব রোমাঞ্চের সম্ভাবনা ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে আসছিল। তারুণ্যের লক্ষণই হল, জীবনটাকে সম্ভাবনায় পূর্ণ বলে মনে হবে। ঠিক যেমন ‘টুয়েলভ্থ ফেল’ মনোজের মনে হয়েছিল। জীবনে নতুন চ্যালেঞ্জ খোঁজার মধ্যে একটা রোমাঞ্চ আছে। কিন্তু ওই চাকরিতে আমি আর কোনও মজা পাচ্ছিলাম না। তাই চাকরিতে থেকে যাওয়াটাকে মনে হচ্ছিল বার্ধক্যকে মেনে নেওয়ার মতো।

আর একটা বিষয়ও খুব সত্যি। আগামী দিনে আমাদের দেশে আমূল পরিবর্তন আসতে চলেছে। একটা সময়ে বাড়িতে ল্যান্ড লাইনের সংযোগ পেতে আমরা মাসের পর মাস অপেক্ষা করতাম! তার পরে মোবাইলের আবির্ভাব গোটা পৃথিবীটা বদলে দিল! এখনকার স্মার্টফোন প্রজন্ম সেই সময়টা কল্পনাও করতে পারবে না। আগামী কয়েক বছরে এই পরিবর্তন আরও বেশি মাত্রায় হতে থাকবে। আমার বিশ্বাস, আগামী দিনে সেই পরিবর্তনে প্রকৃত নেতার ভূমিকা নেবে বেসরকারি ক্ষেত্র (প্রাইভেট সেক্টর)। গত সাত বছরে ভারতে মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ হয়েছে। সেটা থেকেই কল্পনা করে নেওয়া যায় আগামী দিনে পরিবর্তন ঠিক কোন গতিতে আসছে আমাদের দেশে।

আমলা হিসাবে যখন বিভিন্ন জেলায় কাজ করেছি, তখন মনে হয়েছে মাটির কাছাকাছি আছি। সরকারের হয়ে দেশের কাজ করছি। নিজের কাজের প্রভাবের নিরিখে দেখলে সেখানেও জেলা স্তরে কাজের কথাই সবচেয়ে আগে মনে পড়ে। সে যত ছোট প্রভাবই হোক না কেন, একটা সন্তুষ্টি কাজ করে। কিন্তু একইসঙ্গে এটাও ঠিক যে, পদাধিকার বলে যত উঁচুতে উঠেছি, ক্যানভাস ততই বড় হয়েছে। ছোট ছোট পরীক্ষানিরীক্ষা এবং তার সাফল্য তত দূরে চলে গিয়েছে। আসলে সরকারি সচিবালয় হোক বা কর্পোরেশন— এ সব জায়গায় কাজ করা একেবারেই বেসরকারি ক্ষেত্রে কাজের সমতুল্য।

জীবন একটাই। গত ১৬ বছর ধরে এই সার্ভিসে ছিলাম। প্রতি দিন নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করার তাগিদ অনুভব করেছি। কিন্তু আধুনিক পৃথিবীটা বড্ড জটিল। দুনিয়া জুড়ে মানুষ শুধু চাকরি নয়, তাদের কাজের ক্ষেত্রও বদলাচ্ছে। অন্য দিকে, গণতন্ত্র যত ‘পরিণত’ হবে, নির্বাচিত রাজনীতিকরা ততই প্রকৃত দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তাঁরা আরও কাজ করতে পছন্দ করবেন। আমার মনে হয়েছে, কর্মক্ষেত্রে ক্ষমতার এই রকম দু’টি কেন্দ্র থাকতে পারে না। আধুনিক এই সময়ে ‘শক্তিশালী আমলাতন্ত্র’ বলে কিছু হয় না বলেই আমি মনে করি।

বেশির ভাগ উন্নত দেশে, আমলাদের দিয়ে নেপথ্যের কাজ করানো হয়। তাই সেই সব দেশে সিভিল সার্ভিসকে কেউ পছন্দের চাকরির তালিকায় রাখেন না। কিন্তু আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে আইনের শাসন এখনও নিখুঁত নয়। তাই সিভিল সার্ভিসে এসে অনেক মানুষকে কিছু মৌলিক পরিষেবা দেওয়া যায়। অর্থনীতির নিয়ম মেনে বাজার উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশ এগিয়ে যায়। তার সঙ্গে এই সার্ভিসও কম ‘আকর্ষণীয়’ হয়ে ওঠে। সমীক্ষা বলে, এ দেশে চাকরিরত আমলাদের সন্তানদের খুব সামান্য অংশই কেরিয়ার হিসাবে সিভিল সার্ভিসকে বেছে নিতে চায়। কিন্তু বাস্তব বলছে, আইআইটি কানপুরের সহপাঠীদের চেয়ে আমলার চাকরিতে আমার পারিশ্রমিক কিন্তু অনেকটাই কম ছিল। এটা বললাম বলে আবার মনে করবেন না, আমি টাকার জন্য চাকরি ছেড়েছি। চাকরি ছেড়েছি আমার অন্তরাত্মার আহ্বান শুনে।

তবুও বলব, মনোজদের উল্টো পথে হাঁটার কাজটা সহজ নয়। আমার শুরুটা খারাপ হয়নি। শেষ কেমন হবে ঈশ্বরই জানেন!

(লেখক প্রাক্তন আমলা। বর্তমানে বেসরকারি বহুজাতিকে কর্মরত। মতামত নিজস্ব।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement