শ্রদ্ধা: বিমান ওড়াচ্ছেন ফিয়োনা স্মিথ।
১৬ জুন, ১৯৪৩। চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযু্দ্ধ। রাতের অন্ধকারে ইংল্যান্ডের এক বিমানঘাঁটি থেকে ফ্রান্সের অঁজে পর্যন্ত বিপজ্জনক এক উড়ানে পাড়ি দিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নুর ইনায়েত খান। নাৎসিদের যুদ্ধের ব্যবস্থাপনা বিগড়ে দিতে, ব্রিটিশ সংস্থায় গুপ্তচর হিসাবে কর্মরত ছিলেন তিনি। আর ফেরা হয়নি তাঁর। মিত্রশক্তির হয়ে তিন মাস গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার পর, ধরা পড়ে যান। তাঁকে মেরে ফেলা হয়। সাহসিকতার জন্য মরণোত্তর জর্জ ক্রস পেয়েছেন নুর। ৮০ বছর পরে, ফিয়োনা স্মিথ নামের এক বিমানচালিকা সেই বিখ্যাত উড়ানের অনুকরণ করে নুরকে শ্রদ্ধা জানালেন। অনুকৃতি-উড়ানের নাম দিলেন ‘ফ্লাইট ফর নুর’। ফিয়োনা রয়্যাল এয়ার ফোর্সের প্রাক্তন আধিকারিক। ৬২৪ স্কোয়াড্রনের স্মৃতিতে বিশেষ মিশনের জন্য তাঁকে বৃত্তি দিয়েছিল ব্রিটিশ উইমেন পাইলটস’ অ্যাসোসিয়েশন। এই স্কোয়াড্রন যুদ্ধের সময় গুপ্তচরদের নিয়ে যেত। ফিয়োনা নুরের যাত্রাপথ ধরে বিমান ওড়ালেন। ইস্ট অ্যাংলিয়া’র রাফাম থেকে উড়ান শুরু করেন তিনি। ইংলিশ চ্যানেল হয়ে ফ্রান্সের অঁজে-তে অবতরণ করেন। নুরও এখানেই নেমেছিলেন। অঁজে-র ওয়ার মেমোরিয়ালে নুরের স্মৃতিসৌধে মালা দেন, শান্তি কামনায় সুফি প্রার্থনা পাঠ করেন। এয়ার ফোর্সের মেমোরিয়ালে নুরের নাম প্রথম বার দেখেন ফিয়োনা, তাঁর কাহিনি শুনে অনুপ্রাণিত হন। নুরের জন্য মিশনের সুযোগ আসতেই কোমর বেঁধে প্রস্তুতিতে লেগে পড়েছিলেন। ফিরে বলেছেন, মিশন সফল।
নুর ইনায়েত খান।
সেই ভারতীয় সৈনিকেরা
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের হয়ে লড়তে ভারতীয় সৈন্যরা ইংল্যান্ডে এসেছিলেন। গত সপ্তাহে সৈকতশহর বার্টন অন সি-তে একটি অনুষ্ঠানে তাঁদের স্মরণ করা হল। যুদ্ধে জখম হওয়ার পর ক্ষত সারিয়ে সুস্থ হতে ১৯১৪-য় তাঁরা এই শহরে আসেন। শহরের হোটেলগুলিকে তাঁদের জন্য আরোগ্য নিকেতনে রূপান্তরিত করা হয়। সুস্থ হওয়ার সময় এই ‘বিশেষ অতিথি’দের দেখাশোনা করেছিলেন স্থানীয়েরা। তাঁদের বিনোদনের জন্য সমুদ্রের ধারে ভারতীয় ক্লাব তৈরি হয়েছিল। সিপাইদের সঙ্গে দেখা করে গান শুনিয়েছিলেন নুর ইনায়েত খানের বাবা হজ়রত ইনায়েত খান ও অন্য সঙ্গীতজ্ঞেরা। স্থানীয় শিল্পীরাও তাঁদের জন্য অনুষ্ঠান করতেন। মধ্য লন্ডনে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হত তাঁদের। দেখানো হত বাকিংহাম প্যালেস, মাদাম তুসো’র জাদুঘর। ১৯১৭-য় তাঁরা শহর ছেড়ে গেলে, স্থানীয়েরা চাঁদা তুলে সৈন্যদের মনে রেখে সমুদ্রের কাছে একটি স্মারক তৈরি করেন। তখনও যুদ্ধ শেষ হয়নি, কাজেই সেটি ব্রিটেনে তৈরি প্রথম যুদ্ধ-স্মারকগুলির অন্যতম।
দানধ্যানে সক্রিয়
৯২ বছর বয়স, হুইলচেয়ারের সাহায্যে ঘোরাফেরা করেন। তবুও অনাবাসী ভারতীয় শিল্পপতি স্বরাজ পল এখনও অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন, অর্থদানও করে চলেছেন। এ মাসেই নর্থউইক পার্ক হসপিটালের প্রসূতি বিভাগের সংস্কারে পাঁচ লক্ষ পাউন্ড দিয়েছেন। পুনর্নির্মিত প্রসূতিসদনটি শিল্পপতির স্ত্রী লেডি অরুণা পলের নামে নামাঙ্কিত হবে। লেডি অরুণা গত বছর মারা গিয়েছেন। লন্ডন জ়ু-তে তাঁর উদ্দেশে একটি স্মারক উন্মোচন করেছেন শিল্পপতি। প্রতি বছর মেয়ে অম্বিকা পলের স্মৃতিতে ওই চিড়িয়াখানায় অনুষ্ঠানও আয়োজন করেন তিনি। অম্বিকার মৃত্যু হয়েছিল চার বছর বয়সে। চিড়িয়াখানাটি ১৯৯৩-এ দেউলিয়া হয়ে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এক মিলিয়ন পাউন্ড দান করে চিড়িয়াখানাটিকে বাঁচান স্বরাজ। এখনও তিনি সেটির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক।
অ্যান্ড্রুর গোঁ
রাজপরিবারের বিলাসে কাটছাঁট আনছেন রাজা চার্লস। চাইছেন, উইনসর এস্টেটের ৩০ বেডরুমের রয়্যাল লজ ছেড়ে দিন যুবরাজ অ্যান্ড্রু। তাঁকে হ্যারি-মেগানের প্রাক্তন বাসস্থান ফ্রগমোর কটেজে চলে যেতে বলেছেন। কলঙ্কিত অ্যান্ড্রুকে আগেই রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রাসাদ ছাড়তে নারাজ অ্যান্ড্রু। বলছেন, চার্লসের তাঁকে হটানোর ক্ষমতা নেই। এ দিকে, ছাদের ধুলো, চিড় ইত্যাদি মেরামতিতে এ মাসেই লজে মিস্ত্রি লাগার কথা। কিন্তু, অল্প কিছু দিনের জন্যেও অ্যান্ড্রু লজ ছেড়ে যেতে চাইছেন না। তাঁর ভয়, এক বার গেলে যদি তাঁকে ফিরতে দেওয়া না হয়! মনে হচ্ছে, ডিউক অব ইয়র্ক তাঁর পুরনো বাড়িতে এখনও কিছু দিন থাকবেন।