দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার মাঝে ডিমিলিটারাইজড জোনে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কিম জং-উন।—ছবি রয়টার্স।
অন্ধকারের উৎস থেকে যে আলো উৎসারিত হয়, তার মাহাত্ম্য বিশেষ বলেই আমরা জেনে এসেছি। তাই সেই রকম এক আশার আলোই চোখ টানছে আজ। সংঘাতের আশঙ্কা যেখানে সবচেয়ে বেশি, সেখানেই মৈত্রীর চেষ্টা নজর কেড়ে নিল। আমেরিকা এবং উত্তর কোরিয়া আবার আশা জাগাল।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং-উন বৈঠক করলেন। দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার মাঝে যে ডিমিলিটারাইজড জোন রয়েছে, সেখানে গিয়ে কিমের সঙ্গে দেখা করলেন ট্রাম্প। করমর্দন হল, শুভেচ্ছা বিনিময় হল, কিমের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে ট্রাম্প ঢুকলেন উত্তর কোরিয়াতেও। এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত তৈরি হল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং উত্তর কোরিয়ার শাসকের মধ্যে এমন আন্তরিক আবহে সাক্ষাৎকার এবং কথোপকথন ছোটখাট ঘটনা নয়। চলতি আন্তর্জাতিক সমীকরণের প্রেক্ষিতে এ এক বিরাট ঘটনা। সমীকরণ নিরপেক্ষ ভাবেও যদি দেখি, তাহলেও এ এক বিরাট কূটনৈতিক পদক্ষেপ। ফলাফল যা-ই হোক শেষ পর্যন্ত, ট্রাম্প-কিমের এই বৈঠককে ইতিহাস চিরকাল এক বিশেষ আলোকে মনে রাখবে।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
আমেরিকা এবং উত্তর কোরিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দশকের পর দশক ধরে যে মহাসমুদ্র প্রমাণ তিক্ততার সাক্ষী হয়েছে, তা কারও অজানা নয়। সে তিক্ততা বার বার সংঘাতের আবহ তৈরি করেছে। যুদ্ধের হুঙ্কার শোনা গিয়েছে, ধ্বংসের পদধ্বনি শোনা গিয়েছে। একবার নয়, বার বার আমেরিকা এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সংঘাতের আবহ মাথাচাড়া দিয়েছে। সেই দুই দেশ যখন এমন সদর্থক পদচারণায় পরস্পরের সঙ্গী হয়, তখন ইতিহাসে নতুন বাঁক তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: বিশ পা ফেলে ট্রাম্পের নজির উত্তর কোরিয়ায়
ট্রাম্প এবং কিম এই প্রথমবার পরস্পরের সঙ্গে দেখা করলেন, এমন নয়। এর আগে সিঙ্গাপুরে তাঁদের দু’জনের বৈঠকের আয়োজন হয়েছিল, পরে ভিয়েতনামেও হয়েছিল। কিন্তু বৈঠকের পরে ট্রাম্প এবং কিম আবার নতুন করে পরস্পরকে হুঁশিয়ারি দিতে শুরু করেছেন, এমন ঘটনার সাক্ষীও পৃথিবীকে হতে হয়েছে। তাই এবারের বৈঠক সব সমস্যা মিটিয়ে দেবে, এমন কথা হলফ করে বলা কঠিন। কিন্তু ট্রাম্প এবং কিমের এই আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ যে ইতিহাসের অন্যতম মাইলফলক হয়ে থাকবে, তা-ও অস্বীকার করা যাচ্ছে না।