দিল্লি ডায়েরি। —ফাইল চিত্র।
ময়দান কাঁপানো পি কে, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়দের নাতির নাম পেলে! সদ্য হয়ে গেল সেই পেলের অন্নপ্রাশন। লোকসভার ব্যস্ততার মধ্যেই সংসদ চত্বরে সেই সুখবর শুনিয়েছিলেন ‘অর্জুন’প্রাপ্ত ফুটবলার গর্বিত দাদু প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মেয়ে প্রেরণার সঙ্গে গত বছর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ আবিররঞ্জন বিশ্বাস। তাঁদের প্রথম সন্তানের নামকরণ প্রিয়তম ফুটবলারের নামেই করেছেন প্রসূন। প্রসূনের পুত্রের নামও প্লাতিনি! নাতির নাম কেন পেলে তার ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন। প্রসূন সেই বিরল ভারতীয় ফুটবলারদের এক জন, যিনি মোহনবাগানের হয়ে কসমসের জার্সি গায়ে পেলের সঙ্গে মাঠে যুঝেছিলেন। সংসদ অধিবেশনের ফাঁকে, অবসর সময়ে সেই স্মৃতিতে আচ্ছন্ন থাকেন আজও। আপাতত তিনি ব্যস্ত ছোট্ট পেলেকে নিয়ে।
স্মৃতিসুখ: ১৯৭৭ সালে ইডেন গার্ডেনসে কসমসের হয়ে মোহনবাগানের সঙ্গে খেলছেন পেলে।
সেই মোহনবাগান দলের সদস্য প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, এখন।
সাংসদদের ক্রিকেট
ভিতরে সরকার পক্ষ এবং বিরোধীদের ধুন্ধুমারে কার্যত অচল সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। নতুন সংসদ ভবনের বাইরে মকরদ্বারের সামনের সুপ্রশস্ত দালানে ঢালাও রোদে দাঁড়িয়ে উষ্ণতা সেঁকছেন ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাঁড়ানো সাংসদ সাংবাদিকরা। এমন সময়ে তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েনের দিকে হইহই করে এগিয়ে এলেন বিজেপির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। সামনেই রাজ্যসভা বনাম লোকসভার ক্রিকেট ম্যাচ, ইন্ডিয়া গেটের কাছে ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়ামে। অনুরাগের বক্তব্য, ডেরেক না থাকলে চলবে না। উইকেট কিপিং করবেন কে! ডেরেক কলেজ জীবনে গোলকিপার ছিলেন, এখন সামলান রাজ্যসভায় ট্রেজ়ারি বেঞ্চ থেকে আসা জোরালো ডেলিভারি! সাংসদদের ম্যাচে তারকা প্রাক্তন ক্রিকেটাররা বহু কারণে থাকতে পারছেন না। কীর্তি আজ়াদ ব্যস্ত দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে। হরভজন সিংহ অস্ট্রেলিয়ায়। তবে তাতে মৈত্রী ম্যাচে উৎসাহে ভাটা নেই।
নিমন্ত্রণের ফাঁকে
২৪ ডিসেম্বর বিয়ে করছেন ব্যাডমিন্টন তারকা পি ভি সিন্ধু। দিল্লিতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে নির্মলা সীতারামন, এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা করে নিমন্ত্রণ জানিয়ে গেলেন। পাত্র কর্পোরেট কর্তা বেঙ্কট দত্ত সাই নিমন্ত্রণ করতে এসে জানালেন, সিন্ধু আবার অলিম্পিক্সে মেডেল জয়ের চেষ্টা করবেন। নিমন্ত্রণ করতে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে সিন্ধুর হবু স্বামীর আড্ডা জমে গেল। সিন্ধু পরে বললেন, ভাগ্যিস বিদেশমন্ত্রীর অন্য বৈঠক ছিল! না হলে উনি এবং দত্ত মিলে সিঙ্গাপুর, রাশিয়া, ইজ়রায়েল নিয়ে আলোচনা চালাতেই থাকতেন।
ধনখড় বনাম চড্ডা
আম আদমি পার্টির সাংসদ রাঘব চড্ডার উপরে প্রায়ই চটে যান রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। বিচারপতিদের অবসরের পরে নিয়োগ নিয়ে আপত্তি তুলে রাজ্যসভায় চড্ডা বললেন, তাঁর সঙ্গে প্রয়াত অরুণ জেটলির ‘খাট্টামিঠা’ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু জেটলিই বলেছিলেন, অবসরের পরে নতুন নিয়োগের আশা বিচারপতিদের অবসরের আগে রায়কে প্রভাবিত করে। ধনখড় রাঘবকে বললেন, “আপনার সঙ্গে জেটলি সাহেবেরও অম্লমধুর সম্পর্ক ছিল। আমার সঙ্গেও অম্লমধুর সম্পর্ক!” রাঘবকে পরামর্শ দিলেন, এ বার অম্লমধুর সম্পর্ক ছেড়ে মধুর সম্পর্ক তৈরিতে মন দিন।
ছাত্রবন্ধু
‘সাম পিপল হ্যাভ কার্লি ব্রাউন হেয়ার টার্নিং পার্মানেন্টলি ব্ল্যাক’— ত্রিকোণমিতির সূত্র মনে রাখার এই সহজ নিয়ম রাহুল গান্ধীর মনেই ছিল না। মনে করালেন ছোটবেলার শিক্ষক। রাহুলের পাশাপাশি প্রিয়ঙ্কাও এখন লোকসভায়। তাঁদের ছোটবেলার হিন্দির শিক্ষক সংসদ ভবনে এসে দেখা করে গেলেন পুরনো ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে। প্রিয়ঙ্কা বললেন, তাঁর হিন্দির সবাই প্রশংসা করে। অথচ শিক্ষকের প্রিয় ছাত্র রাহুল। রাহুল অবশ্য হাসতে হাসতে বললেন, তাঁর হিন্দি আগের চেয়ে অনেক ভাল হয়েছে।
স্নেহ: শিক্ষকের সঙ্গে রাহুল-প্রিয়ঙ্কা।
রানি শিরোমণি
রাজ্য রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু ব্রিটিশ-বিরোধী চুয়াড় বিদ্রোহের অন্যতম মুখ কর্ণগড়ের রানি শিরোমণির বিষয়ে কেন্দ্রের নজর টানতে একযোগে সংসদে সরব হতে উদ্যোগী মেদিনীপুরের তৃণমূল সাংসদ জুন মাল্য ও বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। শমীকের দাবি, ১৭৯৭-১৭৯৯ পর্যন্ত মেদিনীপুর এলাকায় বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রানি। জ়িরো আওয়ারে নিজেদের কক্ষে সাহসিনীকে নিয়ে বলতে চান তাঁরা।