এ বার যদি সভাপতির ঘরটা খোলে...
২৪ আকবর রোড। কংগ্রেসের সদর দফতরে সভাপতির ঘর। ২০১৪ লোকসভা ভোটে হারের ধুলো ঝেড়ে দলকে চাঙ্গা করতে এই ঘরে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতেন সনিয়া গাঁধী। দলের নিয়ন্ত্রণ ছেলে রাহুলের হাতে যাওয়ার পরে ঘরের ব্যস্ততা গেল বেড়ে। রাহুল বললেন, দিল্লিতে থাকলে সপ্তাহে অন্তত এক দিন কর্মীদের সঙ্গে কথা বলবেনই তিনি। ঘর খোলা হত, বসত বৈঠক। চা আসত। কিন্তু ২০১৯ নির্বাচনে দল ধরাশায়ী হওয়ার পরে রাহুল ‘রাজপাট’ ছাড়ায় কংগ্রেস ফের সনিয়া শরণে। কিন্তু তিনি কাজকর্ম চালান মূলত নিজের বাংলো ১০ জনপথ থেকে। ফলে সভাপতির ঘর তালাবন্দি। কংগ্রেসের অন্দরে ফিসফাস, সনিয়া-রাহুলকে কর্মীরা মনের কথা বলবেন কোথায়? কী ভাবে জানাবেন অভাব-অভিযোগ? তালা পড়ে যাচ্ছে ইন্দিরা গাঁধীর আমল থেকে চলে আসা সাধারণ কর্মীদের সঙ্গে সংযোগের ঐতিহ্যেও। অবশ্য হালে হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রে কিছুটা লড়াই দেওয়ার পরে আশা, যদি এ বার তালা খোলে!
রুদ্ধদ্বার: ২৪ আকবর রোডে কংগ্রেসের সদর দফতর
রাইসিনা হিল-এ প্রধানমন্ত্রীর দফতর ছাড়াও চার হেভিওয়েট মন্ত্রক। বিদেশ, প্রতিরক্ষা, অর্থ, স্বরাষ্ট্র। সব জায়গাতেই সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশ বন্ধ, ব্যতিক্রম শুধু অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ডাকাবুকো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এমন নিষেধাজ্ঞায় বিশ্বাসী নন তিনি। কিন্তু মন্ত্রকে পা রাখলে স্পষ্ট, উপরমহল থেকে ছাড়পত্র না-আসা পর্যন্ত কোনও প্রশ্নের উত্তরে মুখ খুলতে রাজি নন কেউ। পাছে বেফাঁস কিছু বলে বসেন! এমন তটস্থ কেন? উত্তর নেই। বরং পাল্টা প্রশ্ন, মন্ত্রীর নাম জানেন তো?
বাংলোবিহীন
লোকসভা ভোটে জিতে এসেছেন প্রায় পাঁচ মাস হল। কিন্তু সাংসদ বাংলোর চাবি এখনও হাতে পাননি অনেকে। কারণ, বহু বার বলার পরেও এখনও বাংলো ছাড়েননি প্রায় দু’ডজন প্রাক্তন সাংসদ। জল, বিদ্যুতের সংযোগ কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়েও লাভ হয়নি। অগত্যা বাড়ি না-পাওয়া সাংসদদের থাকতে হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যের ভবনে। শুধু বাড়ি খালি হলেই তো হবে না। আসবে নতুন আসবাব। বাংলো ঢেলে সাজাবেন অনেকে। জরিপ করবেন বাস্তু। সে সব হতে তো গড়িয়ে যাবে বছরই। পাঁচ বছরের সুখের বাসার এক বছরই জলে?
আরও পড়ুন: দিল্লি ডায়েরি
সুখের খোঁজে
প্রাক্তন অর্থসচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ শীঘ্রই স্বেচ্ছাবসর নেবেন। জীবনে অন্য রকম আনন্দ খুঁজতেই হয়তো, তাঁর টেবিলে দেখা মিলছে ভিন্ন স্বাদের বইয়ের। গর্গ এখন পড়ছেন দলাই লামা ও আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটুর বই ‘দ্য বুক অব জয়: লাস্টিং হ্যাপিনেস ইন আ চেঞ্জিং ওয়ার্ল্ড’। গর্গকে নর্থ ব্লক-ছাড়া করতে পেরে সঙ্ঘ পরিবার খুশি। গেরুয়া শিবিরের নেতাদের অভিযোগ, অর্থসচিবের পদে গর্গ সরকারকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এখন তিনি বিদ্যুৎ মন্ত্রকের সচিব। অবসরের আগেই শান্তিতে থাকার উপায় শিখতে চাইছেন।
পরিবেশবান্ধব: প্রকাশ জাভড়েকর
দায়বদ্ধ
পরিবেশ বাঁচাতে একে প্রধানমন্ত্রীর ‘সিঙ্গল ইউজ়’ প্লাস্টিক পণ্য বন্ধের ডাক, তার উপরে আবার প্রকাশ জাভড়েকর পরিবেশমন্ত্রী। মোদীর কথা রাখার দায় তাঁর আরও বেশি। নিজের বাংলোয় দীপাবলির অতিথি অভ্যর্থনায় পরিবেশবান্ধব সামগ্রীর পসরা তুলে এনেছেন তিনি। জলের বোতল কাচের। টেবিলে খাবার পাতায়। অতিথিদের জন্য উপহার হিসেবে ছোট্ট চটের ব্যাগ। তাতে চিঠি— পরিবেশ বাঁচাতে মোদীর ডাকে সাড়া দেওয়ার আহ্বান। গুঞ্জন, মন্ত্রী তো কোথাও এক নম্বরও কাটার জায়গা রাখেননি!
দূরত্ব
সাউথ অ্যাভিনিউয়ে পাশাপাশি দুই বাড়ি ১৮১ আর ১৮৩ নম্বরের মধ্যে ফুট কয়েকের তফাত। দুই বাড়িতেই সপ্তাহান্তে ভোজের আয়োজন জোরকদমে। ১৮১-র বাসিন্দা মুকুল রায়, সেখানে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীর বিয়ের রিসেপশন। একই দিনে ১৮৩-তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজয়া সম্মিলনী। কয়েক ফুট দূরত্বও তা হলে নেহাত কম নয়?