তৃতীয়া প্রকৃতি/ অথ বৃহন্নলা কথা— চন্দ্রগ্রহণ-এর (সম্পা: প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়) বিষয়। সম্পাদকের কথা: ‘প্রচলিত সমাজব্যবস্থার যৌনতার ক্ষেত্রে নারী এবং পুরুষের বাইরে কোনো তৃতীয় সত্তার যৌনতার অবস্থান নগণ্য। যদি কোথাও থাকে তার জন্য মূলস্রোতের মানুষের বরাদ্দ চালু মন্তব্যগুলি হলো, ছক্কা, মওগা, হোমো, লেডিস, বউদি, বা হাল আমলের চালু শব্দ ঋতুপর্ণ। এদের জন্য সভ্য সমাজ জমা রেখেছে ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, অসম্মান, অপমান, সময় বিশেষে শারীরিক লাঞ্ছনা।... এই মানুষদের যে লড়াই তার পাশে দাঁড়িয়ে সবসময় সহযোগিতা করতে সকলেই হয়তো পারবো না। অন্তত ব্যঙ্গ বিদ্রূপ অবহেলা করা থেকে নিজেদের বিরত রাখলেও পরোক্ষে ওঁরা সাহস পাবেন।’ সমকামী ও ক্বচিত্ উভকামী গ্রিক কবি সাফো-র কিছু কবিতার অনুবাদ করেছেন উত্পলকুমার বসু। নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি থেকে মলয় রায়চৌধুরী সোহিনী ঘোষ ঈপ্সিতা হালদার এবং আরও অনেকের মননঋদ্ধ নিবন্ধ। চিকিত্সকদের রচনা ও সাক্ষাত্কার বিষয়টি নিয়ে। আছে মর্মস্পর্শী ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও। সঙ্গে ‘হিজড়েদের ব্যবহৃত’ শব্দসমষ্টির অর্থ।
ভাবনা থিয়েটার-এর (সম্পা: অভীক ভট্টাচার্য) বিশেষ সংখ্যা: ‘সমসাময়িক বাংলা থিয়েটারে নারী’। তাতে মায়া ঘোষ সীমা মুখোপাধ্যায় অর্পিতা ঘোষের পাশাপাশি তূর্ণা দাস ও ভূমিসূতা দাসের মতো নবীনের সঙ্গেও কথোপকথন। ‘আমার পুরো কাজটাই হয়ে যাচ্ছে অভিনয়কেন্দ্রিক।... মহিলা হিসেবে প্রতিবন্ধকতার মধ্যে যখন আমি যা চাই ঠিক সেটা সেটা করার সুযোগ পাই না, সমাজ আমাকে উত্সাহিত করার সুযোগ দেয় না। তখন আমার স্যালুট জানাতে ইচ্ছে করে মহিলা পরিচালক যারা আছেন বা যে মহিলারা অভিনয়ের বাইরে কিছু কাজ করছেন থিয়েটারে।’ জানিয়েছেন তূর্ণা। অসময়ের নাট্যভাবনা-য় (সম্পা: রঙ্গন দত্তগুপ্ত) বেশ কিছু নতুন রচিত নাটক, মঞ্চস্থ নাটকের আলোচনা। ‘বঙ্গনাট্যে রাজনীতি’ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ।
স্যাস-এ (সম্পা: সত্য ভাদুড়ি) পুনর্মুদ্রিত হয়েছে খালেদ চৌধুরীর ‘থিয়েটার: মঞ্চবিন্যাস ও প্রয়োগ-সংগীত’, তিনি শুরুতেই লিখছেন ‘নাটকের সেটের একটা বাংলা করা হয় মঞ্চসজ্জা। কেউ কেউ বলেন মঞ্চস্থাপত্য। এরকম অনুবাদে— পরিভাষায় এই কাজটির শিল্পগত গুরুত্ব কিছু বা কমে যায়। ধরে নেয়া হয় এও নিছকই রূপসজ্জার মত একটা কাজ, কিংবা নিতান্তই মিস্তিরীর কাজ। কথাটিকে ঠিকমত বলতে গেলে বলা যায় মঞ্চচিত্রণ বা মঞ্চবিন্যাস, অর্থাত্ মঞ্চকে চিত্রায়িত করা, তার ফাঁকা জমিটাকে সাজানো। কিন্তু মঞ্চসজ্জা কথাটি ব্যবহার করতে করতে বেশ প্রচলিত করে তোলা হয়েছে। এই খণ্ডিত দৃষ্টিভঙ্গি আপত্তিকর।’ জন্মশতবর্ষে শম্ভু মিত্রকে নিয়ে অমিত মিত্রর রচনা। সৌমিত্র মিত্র সম্পাদিত পূর্ব পশ্চিম বার্ষিক নাট্যপত্রে দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিবন্ধ ‘স্বাভাবিকতাবাদ ও অভিনয়’, বিভাস চক্রবর্তীর ‘দুই বাংলার সাঁকো থিয়েটার’। অসিত বসু রজত ঘোষ দেবাশিস মজুমদার সুরজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় দেবকুমার ঘোষ উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের পূর্ণাঙ্গ নাটক। জন্মশতবর্ষে বিজন ভট্টাচার্য-কে স্মরণ প্রভাত কুমার দাস ও কমল সাহার। খালেদ চৌধুরী স্মরণে দেবাশিস রায়চৌধুরী ও সীমা মুখোপাধ্যায়, শ্যামল ঘোষকে নিয়ে দেবাশিস সেনগুপ্ত, কাজল চৌধুরীকে নিয়ে সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত, আর শ্যামল ঘোষালকে নিয়ে চৈতি ঘোষাল।
‘রাজনৈতিক থিয়েটার করতে গেলে রাজনীতি ও থিয়েটার দুটোকেই বুঝতে হবে; দুটোই বোঝেন এরকম লোকের সংখ্যা দুর্ভাগ্যক্রমে ভীষণ কম, আর যাঁরা বোঝেন তাঁরা ভীষণ সুবিধাবাদী।’ এক সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়-কৃত, প্রকাশ পেল পালা নাট্যপত্র-এ (সম্পা: শ্যামল দত্ত)। সঙ্গে নাট্যরচনা, নাটক নিয়ে প্রবন্ধ, নাট্যগ্রন্থের আলোচনা।
‘ছবির মধ্যে কি বলব— এইসব ভাবনার সূত্র খোঁজার চেষ্টা করে গেছি আমি এই মানুষগুলোর মধ্যে থেকেই, যেহেতু এদের প্রতি আমাদের একটা সামাজিক কর্তব্য আছে। দায়বদ্ধতা আছে। এই দায়বদ্ধতা আমার ছবির দায়বদ্ধতা, শিল্পীর দায়বদ্ধতা।’— প্রয়াত চিত্রকর প্রকাশ কর্মকারের রচনা, পুনর্মুদ্রিত। চিত্রকল্পকথা-য় (সম্পা: বীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য) চিত্রকলা-সহ সব ধরনের শিল্পমাধ্যম নিয়েই আলোচনা। ‘সুন্দরবনের মানুষ কথাসাহিত্যের নির্মাণ রহস্য জানেন না। জানেন না জীবন কীভাবে সাহিত্য হয়ে যায়!’ জানানো হয়েছে সমকালের জিয়নকাঠি-র (সম্পা: নাজিবুল ইসলাম মন্ডল) সম্পাদকীয়তে, ‘সুন্দরবনের কথাসাহিত্য বিশেষ সংখ্যা’য়। তাতে শচীন দাশ, তপন বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়, অমিতাভ দত্ত, উত্পলেন্দু মণ্ডল, আদম সফি, মুসা আলি প্রমুখ কথাকারের সুন্দরবন নিয়ে সাহিত্যসৃষ্টির আলোচনা।
শাশ্বত আলাপন-এ (সম্পা: ব্যাসদেব গায়েন) ‘হারিয়ে যাওয়া বিষয়ের মধ্যে আলোচিত হয়েছে আমাদের প্রাচীন শিক্ষা পদ্ধতি, ডাক ব্যবস্থার পুরানো পদ্ধতি, বাংলা মুদ্রণ শিল্পের লুপ্ত হয়ে যাওয়া মুদ্রণ পদ্ধতি।’ কৃশানু পত্রিকায় প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক প্রয়াত দীনেশচন্দ্র সিংহ স্মরণ-সংখ্যা (সম্পা: চঞ্চল পাল)। দীনেশচন্দ্র প্রসঙ্গে অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন ‘ঢাকা, ত্রিপুরা, নোয়াখালি, বরিশাল, খুলনা, যশোহর, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ ও শ্রীহট্টের বহু কবিওয়ালা ও কবিগানের যে পরিচয়... সংগৃহীত হয়েছে, তার জন্য লেখকের পরিশ্রম, প্রীতি ও বিচক্ষণতা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। বলতে গেলে এটি কবিগানের বিশ্বকোষ বিশেষ।’