পুস্তক পরিচয় ২

ভাষা নিয়ে উৎকণ্ঠা

বাংলাদেশের নাট্যচর্চা নিয়ে আশিস গোস্বামীর লেখায় ধরা পড়েছে ধর্মের ভিত্তিতে একটি জাতির ভৌগোলিক অবস্থান ভাগাভাগি হয়ে গেলে কী ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে— সংস্কৃতি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share:

ব্রাত্যজন নাট্যপত্র

Advertisement

সম্পাদক: ব্রাত্য বসু

১২৫.০০

Advertisement

কালিন্দী ব্রাত্যজন

বাংলাদেশের নাট্যচর্চা নিয়ে আশিস গোস্বামীর লেখায় ধরা পড়েছে ধর্মের ভিত্তিতে একটি জাতির ভৌগোলিক অবস্থান ভাগাভাগি হয়ে গেলে কী ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে— সংস্কৃতি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়। ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষিতেই নতুন নাট্যচর্চার জন্ম পূর্ব পাকিস্তানে, পরবর্তী কালে যার পরিণতি বাংলাদেশের নাট্যচর্চায়। আশিসবাবু নাট্যব্যক্তিত্ব আতাউর রহমানের এক সাক্ষাৎকার উল্লেখ করেছেন: ‘‘আমাদের সাংস্কৃতিক বোধ ভিন্ন, স্বপ্ন দেখা ভিন্ন, আমরা ‘কোটা সিস্টেম’-এ পড়ে গেলাম।’’ এ রকমই গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ শম্পা ভট্টাচার্যের নারী চেতনার দর্পণে আফগানিস্তানের থিয়েটার নিয়ে। পিটার ব্রুক-এর মূল রচনা থেকে মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুবাদ প্রবন্ধ ‘পবিত্র থিয়েটার’। অপ্রকাশিত নাটক। নাট্য ও পুস্তক সমালোচনা। বিবিধ ক্রোড়পত্রের একটিতে মেঘনাদ ভট্টাচার্যের সঙ্গে আলাপচারিতায় ব্রাত্য বসু। সম্পাদকীয়-তে ব্রাত্য লিখেছেন ‘গভীর যন্ত্রণায় হ্যামলেট আত্মঘাতী হতে চাইলেও... সে বুঝল মৃত্যুর পরে জীবনের যন্ত্রণাগুলো যদি স্বপ্ন হয়, তাহলে তাতে মুক্তিলাভ হবে না। তাই নাটক সম্পর্কিত মানুষগুলোরও মুক্তি নেই। সেই মুক্তির খোঁজে আমাদের বিবিধ নাট্যকর্ম। এই পত্রিকাও সেই কর্মের একটি অংশ।’

নভেম্বর বিপ্লব/ শতবর্ষে ফিরে দেখা

সম্পাদক: তাপস ভৌমিক

১৫০.০০

কোরক

গত শতককে তোলপাড় করেছিল, বদলের দিকচিহ্ন তৈরি করে দিয়েছিল ১৯১৭-র নভেম্বর বিপ্লব। বলশেভিকদের ঘটানো এ বিপ্লব যে কেবল রুশ দেশে ইউনিয়ন অব সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকস-এর জন্ম দিয়েছিল, আর সত্তর বছর পেরোতে না পেরোতেই তা আশি-নব্বই দশকের সন্ধিক্ষণে সে দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেল... এমনটা নয়। কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে তা গোটা দুনিয়ার নিষ্পিষ্ট মানুষের মনে মুক্তির আগুন জ্বেলে দিয়েছিল, রাজতন্ত্র-ধনতন্ত্রের বিকল্পে এক আন্তর্জাতিক সমাজতন্ত্রের গ্রন্থিতে সারা পৃথিবীকে বাঁধার চেষ্টা করেছিল। এই পত্রে বিভিন্ন গবেষক ও প্রাবন্ধিকের নানান দৃষ্টিকোণে নভেম্বর বিপ্লবের সেই প্রভাব ও অবদান নিয়েই আলোচনা। ইতিহাস-অর্থনীতি-সমাজ-রাজনীতির প্রেক্ষিত ছাড়াও এ বিপ্লব পরাধীন-স্বাধীন দুই আমলেই এ-দেশে, বিশেষত আমাদের বঙ্গদেশে কী প্রভাব ফেলেছিল, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতেও, ঠাঁই পেয়েছে তাঁদের আলোচনায়। ‘ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রয়োগের ভ্রান্তি অনেকসময় কল্যাণমুখী ব্যবস্থার বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে, কিন্তু তাতে চিরন্তন আদর্শের মৃত্যু হয় না।’ সেই আস্থা থেকেই ফিরে দেখার এ আয়োজন, জানিয়েছেন সম্পাদক।

অনুষ্টুপ শারদীয় ১৪২৪

সম্পাদক: অনিল আচার্য

৪৫০.০০

অনুষ্টুপ

‘‘শুধু তো বানান নয়, বিষম বিচলিত হয়ে পড়তেন বাবা ভুল উচ্চারণ শুনলে, শব্দের অপপ্রয়োগ শুনলে, কিংবা তথ্যগত কোনো ‘হাউলার’ শুনলে।’’ মণীন্দ্রকুমার ঘোষকে নিয়ে লিখেছেন শঙ্খ ঘোষ: ‘ভাষা নিয়ে উৎকণ্ঠা আর কয়েকখানা চিঠি’। ভাষা নিয়ে কিছুমাত্র চিন্তাভাবনা করেন এমন সকলের সঙ্গেই অনায়াসে সখ্য হয়ে যেত মণীন্দ্রকুমারের, এমনকী জীবনের শেষ পর্বে দৃষ্টিশক্তি যখন ক্ষীণতর হয়ে আসছিল, তখনও উৎসাহী মানুষজনের সঙ্গে কুশলবার্তা বিনিময়ের পরেই শুরু করে দিতেন শব্দের গঠন অর্থ উচ্চারণ বানান নিয়ে বিনিময়। তাঁর মনন নিয়ে এ লেখায় বেশ কয়েকখানি চিঠিও পেশ করেছেন শঙ্খ ঘোষ, সে সবের একটিতে মণীন্দ্রকুমার লিখছেন ‘শিক্ষক-অধ্যাপকেরা ভুল শেখালে অল্পসংখ্যক ছাত্রেরই ক্ষতি হতে পারে, কিন্তু আকাশবাণী ভুল প্রচার করলে নানা কারণেই বহু লোক বিভ্রান্ত হয়।’ আমাদের এ বঙ্গে সম্প্রতি বাংলা ভাষা ব্যবহার বা চর্চার যা হাল, তাতে শঙ্খবাবুর রচনাটি রীতিমতো প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে ‘অনুষ্টুপ’-এর শারদীয় সংখ্যাটিকে। চিঠিপত্র সংক্রান্ত আরও একটি রচনা, দীপেশ চক্রবর্তীর সঙ্গে কয়েক মাস আগে প্রয়াত রাঘব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এ দেশে এই নতুন শতকে নগরভাবনার পালাবদল ও স্থানিকতার গুরুত্ব নিয়ে লিখেছেন স্বপ্না বন্দ্যোপাধ্যায় গুহ। বোম্বেবৃত্তে সলিল চৌধুরীর প্রতিষ্ঠা প্রত্যাখ্যানের বিনির্মাণ নিয়ে প্রিয়দর্শী চক্রবর্তী। শাশ্বতী ঘোষের দেশের মধ্যে দেশান্তরী মেয়েদের নিয়ে রচনা। অমিয় দেব অনূদিত বিমলকৃষ্ণ মতিলালের নৈতিক উভয়সংকট নিয়ে রচনা। চিন্তাতত্ত্ব নিয়ে সৌরীন ভট্টাচার্যের বা মৈত্রীশ ঘটকের বাক্‌স্বাধীনতা নিয়ে রচনা আরও ঋদ্ধ করেছে পত্রিকাটিকে। ভাবনা উসকে দেওয়া বিবিধ বিষয়ের সমাহার ঢাউস পত্রিকাটি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement