নন-ভায়োলেন্স ইন মডার্ন ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি
ডেভিড হার্ডিম্যান (সম্পাদিত)
১১৯৫.০০
ওরিয়েন্ট ব্ল্যাকসোয়ান
মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী আর তাঁর অহিংসা আন্দোলনের গুরুত্ব কি আজও নতুন করে প্রমাণ করার? তবু এখনও জানার বাকি আছে, নতুন করে ফিরে ভাবার অবকাশ আছে গাঁধীর অহিংসা ও সত্যাগ্রহের আদর্শ কিংবা কৌশল (স্ট্র্যাটেজি) নিয়ে। এই বইটির সম্পাদক ডেভিড হার্ডিম্যান নিজেই এখানে খুব জরুরি একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। মনে করিয়েছেন, ওয়াল্টার বেঞ্জামিনের সতর্কবার্তা— ইতিহাসকে যেন আমরা কেবল রাষ্ট্রের সাফল্য-ব্যর্থতার হিসেব না ভাবি। যেন মনে রাখি ‘এগেনস্ট দ্য গ্রেন’ কিংবা স্রোতের পাশাপাশি প্রতিস্রোত ও উপস্রোতের কথাও, যার থাকে ‘আ ফরমুলা অব গ্রেট হিস্টরিয়োগ্রাফিক্যাল অ্যান্ড পলিটিক্যাল সিগনিফিক্যান্স’। হার্ডিম্যান-এর মতে গাঁধীর অহিংসা একটা বিকল্পের খোঁজ দিয়ে গিয়েছিল, বিকল্প সমাজ, বিকল্প আদর্শ, বিকল্প ক্ষমতার খোঁজ। ‘এগেনস্ট দ্য গ্রেন’— গাঁধীর ইতিহাস আসলে ওই বিকল্পকে বোঝা ও ভাবার জন্যই জরুরি।
ত্রিদীপ সুহ্রুদের সবরমতী আশ্রম নিয়ে প্রবন্ধটিও সেই বিকল্পকেই খুলে দেখে— অহিংসা তো কেবল একটি বন্ধ, বদ্ধ আদর্শ নয়, তাকে প্রয়োজনে পরিবর্তিত ও নিয়ন্ত্রিত করা যায়: তাই একে একমাত্রিক ভাবে দেখলে গাঁধীর বিকল্পটির প্রতি সুবিচার হয় না। প্রশ্ন হল, গাঁধীবিরোধীরা এ সব বোঝেননি বলেই কি গাঁধীর বিরুদ্ধতাটাও যথাযথ হয়নি? প্রশ্নটা উঠিয়ে দেন অনিল নৌরিয়া, নরেন্দ্র দেব-এর সূত্রে গাঁধীর সোশ্যাল র্যাডিকালিজ়ম এবং মার্ক্সবাদী রাজনীতিতে তার ব্যাখ্যা (অপব্যাখ্যা?) আলোচনার মাধ্যমে। অন্বেষা রায়-এর প্রবন্ধ ১৯৪৬-৪৭ সালের দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে সেই একক সাহসিকতার ‘বিকল্প’ নিয়ে।
পৃথিবীর অসুখ যত গভীর থেকে গভীরতর হবে, গাঁধী-চর্চার প্রয়োজনও তত প্রবল থেকে প্রবলতর হয়ে উঠবে: মনে করিয়ে গেল এই বই।