কৃত্তিবাস মাসিক (তরজমায় সত্যজিৎ ১০০)
সম্পা: বীজেশ সাহা
১৭০.০০
প্রতিভাস
দুনিয়ার চলচ্চিত্র জগতের বহু মানুষ বিভিন্ন সময়ে বিশ্লেষণ করেছেন সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রপ্রতিভার। বাংলা তর্জমায় সেগুলির নির্বাচিত সঙ্কলন এই বিশেষ সংখ্যায়, আড়াইশোরও বেশি পৃষ্ঠা জুড়ে। শুরুতে সন্দীপ রায়ের সাক্ষাৎকারে ‘বাবার বিদেশ-যোগ’, আছে রেনোয়া-মারি সিটন-লিন্ডসে অ্যান্ডারসন থেকে ত্রুফো-গোদার-বার্গম্যান-কুরোসাওয়া হয়ে আজকের ক্রিস্টোফার নোলানের প্রসঙ্গও। ‘পরিচালকের নজরে’ অংশটিতে সত্যজিতের ছবি নিয়ে মিকেলাঞ্জেলো আন্তোনিয়নি, আকিরা কুরোসাওয়া থেকে মার্টিন স্করসেসি, ওয়েস অ্যান্ডারসনের মতামত। কয়েকটি বিখ্যাত সাক্ষাৎকার অনুবাদে ধরা হয়েছে ‘মুখোমুখি বসিবার’ অংশে: কোথাও সত্যজিতের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন লিন্ডসে অ্যান্ডারসন, অ্যান্ড্রু রবিনসন, কার্স্টিন অ্যান্ডারসন, জেমস ব্লু, তোমিয়ো মিজোকামি, কোনওটিতে আন্দ্রে ওয়াইদার সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন স্বয়ং সত্যজিৎ। সত্যজিতের ছবির তত্ত্ব ও প্রকরণ নিয়ে বিদেশের পত্রপত্রিকায় ডেরেক ম্যালকম, টেরেন্স র্যাফার্টি, বারবারা ক্রোসেট, জন ফ্লস, গেলেন গরিটস্যাস, অ্যান্ড্রু স্যারিস-সহ বিশিষ্ট চলচ্চিত্র-সমালোচকদের লেখার তর্জমাগুলি বড় প্রাপ্তি। নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত সত্যজিতের প্রয়াণলেখ, লন্ডন রিভিউ অন বুকস-এ সলমন রুশদি-কৃত সত্যজিৎ রায়: দ্য ইনার আই-এর গ্রন্থ সমালোচনার অনুবাদ চমৎকার। বিদেশে প্রকাশিত বই ও পত্রপত্রিকায় মুদ্রিত সত্যজিৎ বিষয়ক প্রবন্ধের নির্বাচিত তালিকাটি খুবই কাজের।
কলকাতা পুরশ্রী (শতবর্ষে সত্যজিৎ বিশেষ সংখ্যা)
অতিথি সম্পা: জয় গোস্বামী
৩০০.০০
কলকাতা পৌরসংস্থা
বসুশ্রীতে চলছে পথের পাঁচালী, ম্যাটিনি শো দেখে বেরিয়ে ইভনিং শোয়ের টিকিট কাটছিলেন অনেকে, আবার বেরিয়ে নাইট শোয়েরও। উৎসাহে টিকিট বিক্রি করতে কাউন্টারে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়: “ব্যাঙ মইরা গ্যালে চিৎ হইয়া থাকে, সইত্যজিৎ রায় কইলকাতার লোক, সে জানল কী কইর?” সত্যজিৎ রায়কে ঘিরে এমন অজস্র গল্প, এই সঙ্কলনের ‘মুখে মুখে সত্যজিৎ’ বিভাগ ভরে উঠেছে লীলা মজুমদার, বিজয়া রায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, সৌম্যেন্দু রায়, বরুণ চন্দ, দীপঙ্কর দে প্রমুখের স্মৃতিচারণায়।
লেখক, চলচ্চিত্রকার, শিল্পী, সুরকার— সত্যজিৎ-প্রতিভার বিশ্লেষণে স্বতন্ত্র বিভাগ বহুবর্ণ সত্যজিৎ। ‘শেষ প্রহরী’ প্রবন্ধে সত্যজিৎকে ‘সত্তরের নিয়মের ব্যতিক্রম’ বলেছেন অশীন দাশগুপ্ত। ‘সল্তে পাকানোরও আগে’ প্রবন্ধে সোমেশ্বর ভৌমিক লিখেছেন, ১৯৫০ সালে বিজ্ঞাপন অফিসের কাজে ছ’মাসের জন্য লন্ডন গিয়ে ‘দ্য লন্ডন ফিল্ম ক্লাব’-এর সদস্য হয়ে সাড়ে চার মাসে ৯৯টা ছবি দেখেছিলেন সত্যজিৎ। ‘অগ্রন্থিত সত্যজিৎ’ অংশে আছে প্রবন্ধ ও চিঠি, মহানগর ছবির সম্পূর্ণ চিত্রনাট্য, আকিরা কুরোসাওয়া, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, উৎপল দত্ত, শ্যাম বেনেগালের সত্যজিৎ-মূল্যায়ন, সন্দীপ রায়ের চোখে বিশ্ববরেণ্য মানুষটির কর্মময়তার নানা মুহূর্তকথা।
বিচিত্রপত্র (সত্যজিৎ ১০০)
সম্পা: সৌরদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, অয়ন চট্টোপাধ্যায়, সৌম্যকান্তি দত্ত
১৫০.০০
‘সত্যজিৎ রায়ের সাংঘাতিক ছবি সোনার কেল্লা’, বিজ্ঞাপনটি মনে আছে নিশ্চয়ই। ‘সাংঘাতিক ছবি’ আর ‘সোনার কেল্লা’র মাঝখানে সত্যজিতেরই আঁকা ভয়ঙ্কর কাঁকড়াবিছের ছবি, মন্দার বোস যেটা ছেড়ে দিয়েছিল ফেলুদার বিছানায়, সেই বিজ্ঞাপনচিত্র দিয়েই শুরু হয়েছে সোনার কেল্লা-র চিত্রনাট্য, এই সংখ্যার আকর্ষণ। সম্পাদকেরা জানিয়েছেন: “চিত্রনাট্য, চিঠিপত্র, পাণ্ডুলিপি, ফিল্ম বুকলেট, অপ্রকাশিত লেখা, সাক্ষাৎকার, বিজ্ঞাপন, কবিতা, গান, স্মৃতিচারণা সমেত প্রকাশিত হল সত্যজিৎ শতবর্ষ সংখ্যা।” সত্যজিতের বহুমুখী প্রতিভা নিয়ে বিশিষ্টজনদের রচনা; সাক্ষাৎকারগুলির মধ্যে কয়েকটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ— নিয়েছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ রায়চৌধুরী, নির্মল ধর, প্রফুল্ল রায়। শেষোক্ত জনকে সত্যজিৎ বলেছেন: “পথের পাঁচালীতে যে স্টাইল ব্যবহার করেছি তা আর মাত্র দুটি ছবি অপরাজিত এবং অপুর সংসারে বজায় রেখেছি। এই ট্রিলজি ছাড়া আমার অন্য সব ছবির স্টাইলই আলাদা।... জীবনকে নানাভাবে ধরার জন্য বিভিন্ন ছবিতে কখনও স্যাটায়ার, কখনও ফ্যান্টাসি, কখনও বা কবিতার মেজাজকে কাজে লাগিয়েছি। আমার প্রতিটি থিমের মতো স্টাইলও তাই আলাদা।”