গীতবিতান তথ্যভাণ্ডার
সঙ্কলন ও সম্পাদনা: পূর্ণেন্দুবিকাশ সরকার
১৫০০.০০
সিগনেট প্রেস
তবিতান-এর অন্তর্ভুক্ত সমস্ত গান সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্য দু’মলাটের মধ্যে ধরে দিয়েছেন পূর্ণেন্দুবিকাশ সরকার। পেশায় তিনি ব্যস্ত চক্ষু চিকিৎসক, এই কথাটা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন, কারণ যে গবেষণা তিনি করেছেন, তা পূর্ণ সময়ের মনোযোগ দাবি করে। বছর পনেরো আগে তাঁর ‘গীতবিতান আর্কাইভ’-ও ছিল এক উল্লেখযোগ্য কাজ। আলোচ্য সঙ্কলনটির বড় গুণ তার তথ্য উপস্থাপনার পদ্ধতি। প্রতিটি গান সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্য সারণির আকারে সাজিয়ে দিয়েছেন সঙ্কলক, ফলে যে তথ্য প্রয়োজন, এক বারেই দেখে নেওয়া যায়। সঙ্কলনের শুরুতেই এক শুভেচ্ছাবার্তায় শঙ্খ ঘোষের অভিমতটি তাৎপর্যপূর্ণ— (এই বিষয়ে) “আরও দুটি সমৃদ্ধ কাজ প্রকাশিত হয়েছে সুভাষ চৌধুরীর ‘গীতবিতানের জগৎ’ (২০০৪) আর প্রবীর গুহঠাকুরতার ‘গীতবিতান মহাকোষ’ (২০০৮/২০১৩)। কিন্তু সে-দুটি ঐশ্বর্যময় বইয়ের পরেও পূর্ণেন্দুবিকাশের এই কাজটির কিছু গুরুত্ব থাকে এর পদ্ধতিগত কারণেই।”
সঙ্কলনটি ছ’টি বিভাগে বিভক্ত। গীতবিতান-এ যে অনুক্রমে গানগুলি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, প্রথম বিভাগে সেই অনুসারেই গানগুলিকে সাজিয়ে তথ্য সংকলিত হয়েছে। দ্বিতীয় বিভাগে রয়ছে বিভিন্ন নাটকে সুরারোপিত সংলাপ। তৃতীয় বিভাগটিতে রবীন্দ্রসঙ্গীতগুলিকে কালানুক্রমিক বিন্যাস করা হয়েছে— কোন গানটি কবি কোন বয়সে রচনা করেছিলেন, তা দেখে নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে এই বিন্যাস। এই ক্ষেত্রে একটি অনিবার্য সমস্যা হল, সব গানের রচনাকাল পাওয়া যায় না। ফলে, কিছু যুক্তিসঙ্গত অনুমানের সাহায্য নিয়েছেন সঙ্কলক। চতুর্থ বিভাগে রয়েছে ভাঙা গানের তালিকা। পঞ্চম বিভাগে ৯৬টি এমন গান তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যেগুলি সামান্য রূপান্তরভেদে গীতবিতানে পৃথক গান হিসেবে দুই বার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। শেষ বিভাগটি গীতসমৃদ্ধ রবীন্দ্রগ্রন্থের কালানুক্রমিক তালিকা।
রবীন্দ্রগানের গবেষকদের কাছে এই সঙ্কলন কোষগ্রন্থের মর্যাদা পাবে। কম্পিউটারের ব্যবহারের ফলে এই সঙ্কলনের কাজ খানিক সহজ হয়েছে। তবু, অতি দুরূহ একটি দায়িত্ব সম্পাদন করলেন পূর্ণেন্দুবিকাশবাবু।