বাংলা বই ও পত্রপত্রিকার সচিত্রকরণ নিয়ে কোনও পূর্ণাঙ্গ ইতিবৃত্ত আজও লেখা হয়নি। গত কয়েক বছরের মধ্যে এ বিষয়ে অনেকে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন, বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু কাজও নজরে পড়ছে। সমীর ঘোষ তাঁর অলংকরণ শিল্পের অন্যধারা/ বাংলার চারুশিল্পীর ভূমিকা (ঠিক-ঠিকানা, ২০০.০০) বইয়ে এই বিষয়েরই একটি বিশেষ দিকে আলো ফেলেছেন। বইটির ভূমিকা লিখেছেন গণেশ হালুই।
ব্যবহারিক শিল্পে যুক্ত শিল্পীরা মূলত প্রচ্ছদ-অলংকরণের কাজ করলেও প্রতিষ্ঠিত চারুশিল্পীরা এই কাজে নানা সময় হাত দিয়েছেন। শুধু হাত নয়, তাঁরা যে মনও দিয়েছেন, তার নজির খুঁজে খুঁজে তুলে এনেছেন লেখক। অবন-গগন ছাড়া নন্দলাল, যামিনী রায়, দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরীর বিখ্যাত সব কাজের সঙ্গে সমীর আলোচনা করেছেন বিনোদবিহারীর ক্যালিগ্রাফিক কাজ, পরিতোষ সেেনর নিজের বই অলংকরণ, প্রকাশ কর্মকারের কাজ, আর অন্যান্য কাজের মধ্যে বিশেষ করে ‘দেশ’-এ গোপাল ঘোষের কাজ, সুন্দর রহস্যময় বইয়ে নীরদ মজুমদার, সুকান্ত ভট্টাচার্যের মিঠেকড়া বইয়ে দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথের লক্ষ্মীর পরীক্ষা-য় বিজন চৌধুরী, ‘কাটুম কুটুম’ পত্রিকায় গণেশ পাইন, ‘প্রতিক্ষণ’-এ যোগেন চৌধুরী, ‘দেশ’ পত্রিকায় বিকাশ ভট্টাচার্য, ‘আনন্দমেলা’-য় আর ভারবি-র প্রকাশনায় শুভাপ্রসন্নের অনুপম শিল্পসৃষ্টি। আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বই ও পত্রিকা থেকে অনেক দুর্লভ ছবি সংকলন করে দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন লেখক। তাঁর কাছে এই ধারায় আরও বিস্তারিত কাজের প্রত্যাশা রইল।