রূপবান আর হাওয়াগাড়ি
দেবদত্ত গুপ্ত, সুস্মিতা দত্ত (বণিক)
২০০.০০
বইকে সর্বাঙ্গসুন্দর শিল্প করে তোলে লেখক, প্রকাশক, মুদ্রক, অলঙ্করণ শিল্পী-সহ সবার ঐকতান, প্রমাণ এই বই। ৬৪ পৃষ্ঠার বই, আটখানা রচনা। দেবদত্ত আখ্যানমূলক গদ্য লিখেছেন, না কি রূপকথা, বা গ্রাম্য কথকতার লেখ্য বয়ান— ঠাহর করা মুশকিল। ‘গ্রামবাংলার মানুষজনের ভিজেমাটির ভাষা’ আর শহুরে যাপন দুই-ই আছে, ভূমিকায় লেখকের কৈফিয়ত। এ কালের ফেসবুকীয় গদ্য-রাজত্বে লোকায়ত ও নাগরিক বোলচাল মেশা এই নিরীক্ষা বিচিত্র। দেবদত্ত অক্লেশে লেখেন ‘মন কাবু যায়’, ‘পলায়ন যাবে’, ‘ভাবা করেন’-এর মতো প্রয়োগ; সুরুজ, পুত্তল, বুরুজ, ঠাম, তরিজুত, লাহান-এর মতো কথ্য বা আঞ্চলিক শব্দ। কিন্তু সবার চাইতে ভাল এ বইয়ের সজ্জা-ভাবনা। লেখা এখানে আঁকাকে শাসন করেনি, হাবড়ার গৃহবধূ সুস্মিতার স্কেচে কুমির, বাঘ, খেজুরগাছ, রেলগাড়ি আঁকা হয়ে পড়ে ছিল, তারাই বরং লেখাগুলোকে সম্ভব করেছে। কোথাও পাতার লেখা ঘিরে আলপনা, বটতলার ছাপা বা কাঠখোদাই ছবি, উনিশ শতকের টাইপোগ্রাফি, কোথাও বা শব্দরাই চিত্রিত নকশা। মুদ্রণে নেওয়া হয়েছে যান্ত্রিক ও সিল্ক স্ক্রিন ছাপার কৌশল। বই নিয়ে এমন ভাবনা তারিফযোগ্য।