প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ-বার্তার পরে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা। কিন্তু তার পরেও মুখ ভার শেয়ার বাজারের। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর জন্য কেন্দ্র প্যাকেজ ঘোষণা করলেও, তার সুফল সম্পর্কে যথেষ্ট সন্দিহান লগ্নিকারীরা। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজারও বৃহস্পতিবার ছিল নিম্নমুখী। এই জোড়া কারণে এ দিন সেনসেক্স এক ধাক্কায় ৮৮৫.৭২ পয়েন্ট পড়েছে। বন্ধ হয়েছে ৩১,১২২.৮৯ অঙ্কে। ২৪০.৮০ পয়েন্ট পড়ে ৯১৪২.৭৫ অঙ্কে দিন শেষ করেছে নিফ্টি। যার ফলে এক দিনেই লগ্নিকারীদের ১.৯৯ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ মুছে গিয়েছে। ডলারের নিরিখে টাকার দামও পড়েছে এ দিন। ১ ডলারের দাম ১০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৭৫.৫৬ টাকা।
করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় কেন্দ্রের ১.৭০ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্পের পরে দ্বিতীয় দফার ত্রাণের দিকে তাকিয়ে ছিল সারা দেশ। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন, ‘আত্মনির্ভরশীল’ ভারত গড়ে তুলতে ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ তৈরি করেছে তাঁর সরকার। বুধবার সেই প্যাকেজের প্রথম কিস্তিতে মূলত ছোট শিল্পের জন্য একগুচ্ছ ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেই সঙ্গে ছিল এনবিএফসি, ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা, গৃহনির্মাণ সংস্থা এবং কিছু ক্ষেত্রে নিয়োগকারী এবং কর্মচারীদের হাতে কিছুটা বাড়তি নগদের ব্যবস্থা। কিন্তু বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এই প্যাকেজ শিল্প তথা অর্থনীতিকে কতটা অক্সিজেন জোগাতে পারবে, তা নিয়েই সন্দেহ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। যার মধ্যে রয়েছে শেয়ার বাজারও।
ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখ বলেন, ‘‘অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায় সমস্যা সমাধানের চটজলদি দাওয়াইয়ের অভাব রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে অর্থের জোগানের জন্য শেষ পর্যন্ত ব্যাঙ্কের উপরেই নির্ভর করতে হবে।’’ অনেকের বক্তব্য, দেশের শিল্প ভুগছে মূলত চাহিদার সমস্যায়। সেই সমস্যার সমাধানসূত্র এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের ঘোষণায় দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: অল্পই ঘরে ফিরছেন, দাবি আয়োগ কর্তার
তবে ভিন্ন মতও রয়েছে। বাজারের এ দিনের পতনের পিছনে কেন্দ্রের প্যাকেজের কোনও ভূমিকা নেই বলেই মনে করেন বাজার বিশেষজ্ঞ তথা দেকো সিকিউরিটিজের কর্ণধার অজিত দে। তিনি বলেন, ‘‘বাজার এ দিন পড়েছে বিশ্বের অন্যান্য দেশের শেয়ারবাজারগুলি পড়ার কারণেই। আগের দিনই আমেরিকা এবং ইউরোপের বাজারে বড় মাপের পতন হয়েছিল। এ দিন ভারতের বাজার খোলার আগে সিঙ্গাপুরে এসএইচজি নিফ্টি অনেকটা পড়ে যায়। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে বাজারে।’’
বিদেশি লগ্নিকারীদের শেয়ার বিক্রি এ দিনও অব্যাহত ছিল। এ দিন তারা শেয়ার বিক্রি করেছে ২১৫২.৫২ কোটি টাকার। গত তিন দিনে তাদের মোট বিক্রির পরিমাণ প্রায় ৪০৯৮ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: ব্যর্থ মাল্য, পথ পরিষ্কার প্রত্যর্পণের