আলু-সহ বিভিন্ন আনাজ অনেকটা বেড়েছে। ফাইল ছবি
খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ফের মাথা তুললেও, পাইকারি বাজারে কমল। সেপ্টেম্বরে ১০.৭০% হওয়ার সুবাদে দেড় বছরে সব থেকে নীচেও নামল। তবু শুক্রবার কেন্দ্রের পরিসংখ্যান দুশ্চিন্তা তেমন কমাল না বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। কারণ, দেড় বছর ধরে লাগাতার পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি ১০ শতাংশের উপরে। সার্বিক ভাবে খাদ্যপণ্যের দামও আগের মাসের থেকে খুব বেশি কমেনি। বরং আলু-সহ বিভিন্ন আনাজ অনেকটা বেড়েছে। দামি হয়েছে দুধের মতো জরুরি পণ্যও। ফলে পাইকারি দামের ধাক্কা সরাসরি সাধারণ মানুষের ঘাড়ে না পড়লেও, খুচরো বাজারে তা বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের একাংশের। অন্য অংশের দাবি, পাইকারি মূল্যসূচক কমায় খুচরো মূল্যসূচকও একটু নীচে নামতে পারে।
এই অবস্থায় কেন্দ্রকে বিঁধেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। টুইটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কেন মূল্যবৃদ্ধি ৩৫ বছরে সব থেকে বেশি? কেন বেকারত্ব ৪৫ বছরে সর্বাধিক? কেন পরোটায় ১৮% জিএসটি? কেন ১২% জিএসটি গুনতে হচ্ছে ট্রাক্টরে? ভারত জোড়ো যাত্রা এই সব প্রশ্ন তুলতে থাকবে প্রধানমন্ত্রী। আপনাকেই জবাব দিতে হবে।’’
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, মূলত খাদ্যপণ্য, জ্বালানি ও শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের দাম কমায় মাথা নামিয়েছে পাইকারি দর। খাদ্যপণ্যের মধ্যে মাছ-মাংস-ডিম, ফল, সেই সঙ্গে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, প্রাথমিক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার কমেছে। মূল্যহ্রাস ঘটেছে পেঁয়াজের।
অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার বলছেন, ‘‘সামনেই শীতের নতুন ফসল উঠবে। তাই যাঁরা পণ্য মজুত করেন, তাঁরা তা বাজারে ছাড়ছেন। যার প্রভাব পাইকারি মূল্যবৃদ্ধিতে পড়েছে। সুদ বাড়ায় মজুতের খরচও বেড়েছে। সেটাও সম্ভবত পাইকারি বাজারে পণ্যের জোগান বাড়িয়েছে। মানুষের উপরে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়ে বেশি। ফলে স্বস্তির কারণ নেই।’’
আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত অবশ্য বলছেন, ‘‘পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামালে খুচরো বাজারেও দাম কমতে বাধ্য। একটু সময় লাগে। তবে যতক্ষণ পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি ৮-৯ শতাংশের নীচে না নামছে, ততদিন খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ৬ শতাংশের মধ্যে আসবে না। যেটা কি না আরবিআইয়ের বেঁধে দেওয়া সহনসীমা।’’