স্পেনের মাদ্রিদে আর আগামী মার্চে জার্মানির বার্লিনে পর্যটন মেলায় যোগ দেবে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন দফতর। ফাইল চিত্র।
ইউরোপে এ বার বাংলার পর্যটন-কথা।
রাজ্য সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, সব ঠিক থাকলে চলতি মাসের শেষে স্পেনের মাদ্রিদে আর আগামী মার্চে জার্মানির বার্লিনে পর্যটন মেলায় যোগ দেবে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন দফতর। সেখানে ইন্ডিয়া প্যাভেলিয়নে রাজ্যের পাহাড়, ডুয়ার্স, সমুদ্র বা লাল মাটির দেশকে তুলে ধরা হবে। সে জন্য আলাদা করে পেশাদার সংস্থা নিয়োগের কাজও শুরু হয়েছে।
এর বাইরে, এ মাসে দিল্লির লালকেল্লায় ২৬-৩১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ভারত পর্ব’-তেও বাংলার পর্যটন দফতরের যোগ দেওয়ার কথা। ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে এক দফায় পর্যটন দফতর বার্লিন এবং লন্ডনে গিয়েছিল। পরে, নানা ‘প্রশাসনিক’ কারণে তা আর হয়নি।
রাজ্য পর্যটন দফতরের এক সচিব বলেন, ‘‘লন্ডন, বার্লিন এবং মাদ্রিদে বিশ্বের সব চেয়ে বড় পর্যটন সম্মেলন, মেলা হয়ে থাকে। বার্লিনে শতাধিক দেশ আসে। হাজার দশেক প্রতিনিধি থাকেন।’’ তিনি জানান, তহবিল-সহ প্রশাসনিক কারণে প্রায় এক দশক পর্যটন দফতর দেশের বাইরে প্রচারে যায়নি। এ বার সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মতিতে তা সম্ভব হয়েছে। করোনা-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে রাজ্যের পর্যটন-লক্ষ্মীর ভান্ডার খারাপ হবে না বলে আশা করা হচ্ছে।
দফতর সূত্রের খবর, এ রাজ্যে ব্রিটেন, তাইল্যান্ড, স্পেন, জাপান, জার্মানি থেকে বিদেশি পর্যটকেরা বেশি আসেন। সব চেয়ে বেশি মানুষ অবশ্য আসেন বাংলাদেশ থেকে। লন্ডন, স্পেন এবং বার্লিনের অনুষ্ঠানগুলিতে যোগ দিতে পারলে এবং সেখানে রাজ্যের নতুন প্রকল্প, পরিকাঠামো, প্যাকেজ তুলে ধরা গেলে আগামী কয়েক মাসে বিদেশি পর্যটকের আসার সম্ভাবনা বাড়বে। এ বার মাদ্রিদে ১৮-২২ জানুয়ারি পর্যটন মেলা হচ্ছে। বার্লিনে হচ্ছে ৭-৯ মার্চ। বর্তমান করোনা-পরিস্থিতিতেও দু’টি মেলাই হওয়ার কথা বলেই এখন পর্যন্তখবর রয়েছে।
দফতরের আধিকারিকেরা জানান, রাজ্যের ‘হেরিটেজ টুরিজ়ম’ এবং হোম-স্টেকে ঘিরে গ্রামীণ পর্যটনও আলাদা ভাবে তুলে ধরার পরিকল্পনা রয়েছে। ‘অ্যাডভেঞ্চার টুরিজ়ম’, উত্তরবঙ্গের গজলডোবার ‘ভোরের আলো’র মতো ‘পর্যটন-হাব’-কে তুলে ধরা হতে পারে। সেখানে বিভিন্ন পর্যায়ে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ সরকার এখন করছে। শতাধিক কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সব শেষে, কলকাতার জন্য আলাদা প্রচার থাকবে। সেখানে ‘তিলোত্তমা’র ইতিহাস, ‘হেরিটেজ’ সম্পত্তি, খাবারের হাল-হকিকৎ, নতুন নগর-সভ্যতার প্রচার থাকছে। রাজ্যের হোম-স্টে, জঙ্গলে থাকার বন্দোবস্ত ছাড়া, তারকাখচিত হোটেল, রিসর্টের উল্লেখ থাকবে। ছবি, ভিডিয়ো-প্রচারের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
পর্যটন দফতরের এক যুগ্ম সচিব জানান, রাজের পর্যটনকে তুলে ধরার এই উদ্যোগে সরকারি স্তরের পাশাপাশি, আগ্রহী বেসরকারি সংস্থাও যেতে পারবে। তবে তার আলাদা নিয়ম, খরচের বিষয় রয়েছে।