অপেক্ষা: কলকাতায় রান্নার গ্যাস কিনতে লাইন। পিটিআই
রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের জোগান পর্যাপ্ত, এই আশ্বাসে লাভ হয়নি। গ্রাহকদের কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল, প্রয়োজন না-থাকলে শুধু আতঙ্কের বশে বুকিং না-করার। কারণ, তাতে স্বাভাবিক জোগান ধাক্কা খেতে পারে। কাজে দেয়নি সেই আর্জিও। এ বার তাই সিলিন্ডার বুক করার সময়সীমা বেঁধে দিল রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। রবিবার ইন্ডিয়ান অয়েলের (আইওসি) সিএমডি সঞ্জীব সিংহ জানান, সিলিন্ডার পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আর বুক করা যাবে না। এইচপি এবং ভারত গ্যাসের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম চালু হচ্ছে। সেই সঙ্গে এ দিন ফের সঞ্জীবের আশ্বাস, এলপিজির জোগানে সঙ্কট নেই। গ্রাহকেরা যেন আতঙ্কিত না-হন।
করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন ঘোষণার পরেই ‘অস্বাভাবিক’ হারে বেড়েছে রান্নার গ্যাসের (এলপিজি) বুকিং। তাল মিলিয়ে বাড়তি সিলিন্ডারের জোগান দিতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হচ্ছে সংস্থা ও তাদের ডিলারেরা। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির দাবি, পণ্যের ঘাটতি নেই। বরং লকডাউনের পরে গ্যাসের জোগান অন্তত ৩৫%-৪০% বেড়েছে।
সংবাদ সংস্থার খবর, তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান রবিবারই সৌদি আরবের তেলমন্ত্রী আব্দুল আজিজ বিন সলমনের সঙ্গে ভারতে এলপিজি ও অশোধিত তেলের নিরবচ্ছিন্ন জোগান নিয়ে কথা বলেছেন। সৌদি থেকেই ভারত সব থেকে বেশি এলপিজি কেনে। টুইটে সে কথা জানিয়ে প্রধান বলেন, ‘‘ওঁরা এলপিজি জোগান নিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।’’
সমস্যা
• অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে গ্যাস সিলিন্ডারের বুকিং।
• সংস্থাগুলি ও গ্যাস ডিলাররা বারবার জানাচ্ছে সিলিন্ডারের জোগান যথেষ্ট। ফলে আতঙ্কের বুকিং করার দরকার নেই। কিন্তু লাভ হচ্ছে না।
• বাড়তি বুকিংয়ের জেরে সিলিন্ডার জোগাতে গিয়ে নাজেহাল দশা তেল সংস্থা আইওসি, বিপিসিএল, এইচপি এবং ডিলারদের।
• তার উপরে করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশভর লকডাউন চলায় কর্মীও আসছেন কম। রাস্তায় বেরোতে ভয় পাচ্ছেন বলেও অনেক ডেলিভারি বয় কাজে আসছেন না।
• অস্বাভাবিক চাহিদা ও জোগানের কম লোক, এই জাঁতাকলে পড়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। দানা বাঁধছে আতঙ্ক। বাড়ির বাইরে না-বেরোনোর সরকারি নির্দেশ সত্ত্বেও ডিলারদের অফিসে ভিড় জমছে অনেক সময়। রোষের মুখে পড়ছেন ডেলিভারি বয়দের একাংশও।
আইওসি-র দাবি, পশ্চিমবঙ্গে তারা দৈনিক গড়ে প্রায় ২.৪০ লক্ষ গ্রাহকের বাড়িতে সিলিন্ডার পৌঁছতে পারে। এই সময় বুকিং হয় গড়ে ২-২.২০ লক্ষ। অথচ বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারে তা ছিল যথাক্রমে ২.৬৮, ২.৬০ ও ২.৭৮ লক্ষ। এমনকি তার আগে দু’দিন তা তিন লক্ষের সীমা ছাড়ায়। অন্য দুই সংস্থার বুকিংও অনেক বেড়েছে। যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বটলিং কারখানায় সিলিন্ডার উৎপাদন বাড়াচ্ছে বলে দাবি তিন সংস্থারই।
তবে তাদের অভিযোগ, লকডাউন ও করোনা আতঙ্কে অনেক কর্মী, গাড়ির চালক, ডেলিভারি বয় আসছেন না। ফলে সিলিন্ডার বিলি করতে গড়ে পাঁচ দিন লাগছে। এই পরিস্থিতিতে বাড়তি বুকিং স্বাভাবিক জোগানে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।