তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। —ফাইল চিত্র।
তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে গোটা দেশের মধ্যে অনেকখানি এগিয়ে যেতে চাইছে রাজ্য সরকার। সে জন্য জোর দিতে চাইছে তার নতুন নতুন দিকগুলিতে। লক্ষ্য পূরণে তুরুপের তাস একাধিক নতুন নীতি। যাতে তথ্যপ্রযুক্তির লগ্নি-মানচিত্রে প্রতিযোগীদের টেক্কা দিয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠত
পরে বাংলা।
মঙ্গলবার বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের সভায় রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় জানান, শীঘ্রই তাঁরা তথ্যপ্রযুক্তির তিনটি নতুন নীতি আনছেন। ড্রোন নীতি, সেমিকনডাক্টর নীতি এবং গ্লোবাল ক্যাপাবিলিটি সেন্টার (জিসিসি) নীতি। উল্লেখ্য, বৃহৎ বহুজাতিক সংস্থাগুলি আউটসোর্সিং-এর জন্য মূলত যে ব্যাক অফিস তৈরি করে, তাকে গ্লোবাল ক্যাপাবিলিটি সেন্টার বলে। বিপুল কর্মসংস্থান হয় সেখানে। সংশ্লিষ্ট সরকারের তরফে মেলে নানা সুযোগ-সুবিধা। বাবুলের দাবি, নীতিগুলি সকলের সামনে এলে পশ্চিমবঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে লগ্নির পরিমাণ এক লাফে অনেকটা বাড়বে। আটকে যাবে মেধাসম্পদের রাজ্যের বাইরে বেরিয়ে যাওয়াও। সব মিলিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ বেশ খানিকটা এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে।
বাবুল বলেছেন, “এর মধ্যে জিসিসি নীতি প্রায় সম্পূর্ণ। শীঘ্রই প্রকাশ্যে আসবে। সেমিকনডাক্টর এবং ড্রোন নীতির খসড়াও চূড়ান্ত। শিল্পের চাহিদা বুঝে শেষ মুহূর্তে সামান্য কিছু বদল হতে পারে। কারণ রাজ্য এমন নীতি আনতে চাইছে, যার হাত ধরে কেন্দ্র ও রাজ্যের সমস্ত নিয়ম মেনে সংস্থাগুলি সব রকমের সুযোগ-সুবিধা পায়।” সূত্রের খবর, জানুয়ারিতে জিসিসি নীতি আসতে পারে। তবে সেমিকনডাক্টর এবং ড্রোন নীতি বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে ঘোষণা করতে পারে রাজ্য সরকার।
এই দিনই সেমিকনডাক্টর বহুজাতিক গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজ়ের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাবুল। তিনি জানান, সংস্থাটি বাংলায় উপস্থিতি বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে। সল্টলেক এসটিপিআই (সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক) ক্যাম্পাসে জায়গা নিচ্ছে। শীঘ্রই সেখানে কাজ শুরু হবে। মূলত আরও বড় গবেষণাগার তৈরির পরিকল্পনা। যদিও সংস্থা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, আপাতত রাজ্যে নতুন প্রকল্প গড়ার পরিকল্পনা নেই।
অন্য দিকে অ্যাসোচ্যামের সভায় মন্ত্রী জানান, নিউটাউনে প্রায় ২০০ একর জমিতে যে সিলিকন ভ্যালি তৈরি করছে রাজ্য, তাতে আর কোনও জমি ফাঁকা নেই। ইনফোসিস, রিলায়্যান্স, ক্যাপজেমিনি, আইটিসি ইনফোটেক, ব্রিটিশ টেলিকমের মতো বৃহৎ সংস্থাগুলির অনেকে জমি নিয়ে নির্মাণের কাজও শুরু করে দিয়েছে। এই প্রকল্প সম্পূর্ণ হলে তথ্যপ্রযুক্তি মানচিত্রে রাজ্যের সামগ্রিক চিত্রটাই বদলে যাবে বলে দাবি তাঁর।