সর্বস্তরের অফিসারদের বৈঠক ডেকেছে অর্থ দফতর। ফাইল চিত্র।
বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতির নিরিখে আর্থিক বিষয়গুলির ইতিবাচক পরিচালনা সম্পর্কে অফিসারদের আরও সংবেদনশীল করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে পরিচালনার যে ফাঁকগুলি ধরা পড়ছে, সেগুলিকেও ভরাট করার চেষ্টায় রয়েছে তারা। এই লক্ষ্যে রাজ্যের মুখ্য অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেলের উপস্থিতিতে ১২ নভেম্বর প্রায় সর্বস্তরের অফিসারদের বৈঠক ডেকেছে অর্থ দফতর। ১২টি দফতর ছাড়াও ডাকা হয়েছে পুলিশ, প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসনের কর্তাদের অনেককে। থাকবেন ট্রেজারির অফিসারেরাও। আগামী বছরের রাজ্য বাজেটের দিকে চোখ রেখে এই প্রশিক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এখন রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি বেশ নড়বড়ে। ফলে প্রতিটি টাকার গুরুত্ব অনেক। তাই আর্থিক পরিচালনায় ফাঁক থাকার কারণে অর্থের অপচয় হোক, চাইছে না নবান্নের শীর্ষমহল। সেই জন্যই বৈঠকটি ডাকা হয়েছে বলে খবর। সূচি অনুযায়ী, মুখ্য অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল পরিস্থিতি সম্পর্কে নিজের মনোভাব অফিসারদের জানাবেন। তাঁর কার্যালয়ও একটি তথ্যভিত্তিক উপস্থাপনা করবে সকলের সামনে। তার ভিত্তিতে আলোচনা চলবে। এ নিয়ে উপস্থিত অফিসারদের কারও কোনও ধন্দ থাকলে, বৈঠকে তা-ও স্পষ্ট করা হবে বলে খবর।
আমন্ত্রিতদের জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ আরও ভাল ভাবে আর্থিক পরিচালন পদ্ধতি অনুসরণ করতে চায়। তাই বিভিন্ন দফতর, ডিডিও (ড্রইং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিস) এবং ট্রেজারি স্তরে আর্থিক গতিবিধিতে যে ফাঁকগুলি ধরা পড়ছে, তা দূর করতে চাইছে অর্থ দফতর।
আধিকারিকদের অনেকের বক্তব্য, বর্তমান আর্থিক অবস্থায় বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের সহযোগিতা কী ভাবে এবং কতটা পাওয়া সম্ভব, তা নিয়ে দফতরগুলিকে ইতিমধ্যেই খোঁজখবর নিতে বলছে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল। নয়াদিল্লির কাছ থেকে তহবিল আনার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে আরও তৎপর হতে বলা হচ্ছে। এর জন্য কেন্দ্রের একাধিক শর্ত নিখুঁত ভাবে মানতে হয়। বেশ কয়েক মাস আগে দফতরের আর্থিক উপদেষ্টাদের জন্য বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ শিবিরের ব্যবস্থা করেছিল অর্থ দফতর। সেখানে তাঁদের এই কাজকর্মগুলি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে কেন্দ্রীয় অর্থ যাতে হাতছাড়া না হয়, সে ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছিল প্রত্যেককে। আর্থিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারণা, এখন রাজ্যে একশো দিনের কাজের মতো কয়েকটি প্রকল্পে কেন্দ্রের অর্থ বন্ধ রয়েছে। বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে এই অবস্থা মোটেই কাম্য নয়। বরং তা রাজ্যের সমস্যা বাড়াচ্ছে। এই অবস্থায় আসন্ন বৈঠক আরও বড় প্রেক্ষাপটে হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে সংশ্লিষ্ট মহল।