অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
গত ২৬ বছর দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখেনি তারা। নরেন্দ্র মোদীর জমানাতেও লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের পরেই দিল্লির বিধানসভা ভোটে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। এই ২৬ বছরের খরা কাটাতে পদ্মশিবির সেই খয়রাতিকেই অস্ত্র করে আম আদমি পার্টি (আপ)-র সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে চাইছে। যে খয়রাতিকে নিয়মিত আক্রমণ করে থাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে আজ বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা দিল্লির বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে অনুরোধ করেছেন, যাঁরা টিকিট পাননি, তাঁরা যেন নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ে দলকে ডোবানোর পথে না হাঁটেন।
আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লির বিধানসভা ভোট। গত ১১ বছর ধরে দিল্লিতে আম আদমি পার্টির সরকার চলছে। তার আগের ১৫ বছর দিল্লিতে শীলা দীক্ষিতের নেতৃত্বে কংগ্রেসের সরকার ছিল। আপ এত দিন বিনা মাসুলে বা কম মাসুলে বিদ্যুৎ, পানীয় জল পৌঁছে দিয়ে এ বার মহিলাদের ২,১০০ টাকা অনুদান ও বয়স্কদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ‘সঞ্জীবনী প্রকল্পে’ ভর করে ফের ক্ষমতায় ফিরতে চাইছে। কংগ্রেসও মহিলাদের জন্য ২,৫০০ টাকা করে মাসিক অনুদান ও ২৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিজেপি সূত্রের খবর, দিল্লির মহিলা ভোটব্যাঙ্কের জন্য মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের মতো বিজেপিও ‘লাডলি বহেন’ ধাঁচের কোনও প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতে পারে। বিজেপির ইস্তাহারে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুতের প্রতিশ্রুতির সম্ভাবনা আছে। আপ সরকার এখন ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিনা মাসুলে জোগায়। মন্দির, গুরুদ্বারায় ৫০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ নিখরচায় জোগানোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারে বিজেপি। ইস্তাহারে থাকতে পারে নিখরচায় পানীয় জলের প্রতিশ্রুতি।
সূত্রের খবর, নড্ডা দিল্লির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচারকে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। সেই সঙ্গে বিজেপি সভাপতি বলেন, যাঁরা টিকিট পাননি, তাঁরা যেন অন্য কারও প্রভাবে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ার ভুল না করেন। গোটা দলকে এককাট্টা হয়ে লড়তে হবে। দলের শক্তি বাড়াতে নতুন সদস্য তৈরির দিকেও জোর দেন তিনি। প্রচারের জন্য বিজেপি ইতিমধ্যেই দিল্লিতে ৪৫টি নির্বাচন কমিটি তৈরি করেছে। যদিও বিজেপি নেতারা মানছেন, অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সঙ্গে ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তায় টেক্কা দেওয়ার মতো বিজেপির কাছে দিল্লিতে তেমন মুখ নেই। ২০১৪ এবং ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে মোদীর নেতৃত্বে বিপুল ভোটে জেতার পাশাপাশি, দিল্লির সাতটি লোকসভা কেন্দ্রেও বিজেপি ভাল ফল করেছিল। অথচ তার কয়েক মাসের মধ্যেই বিজেপি ২০১৫ ও ২০২০-র দিল্লির বিধানসভা ভোটে হেরে যায়। এ বারও তার পুনরাবৃত্তি হলে বিজেপির পক্ষে তা অস্বস্তিকর হয়ে উঠবে।