এই কারখানার ৩৯৫ একর জমি ফিরিয়ে নিল রাজ্য। —ফাইল ছবি
গত ২০১৪ সালে হিন্দমোটর কারখানার গেটে সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস ঝুলিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। তার পর থেকে উৎপাদন বন্ধ সেখানে। এ বার সেই কারখানারই ৩৯৫ একর জমি ফিরিয়ে নিল রাজ্য। প্রশাসন সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই অধিগ্রহণ সংক্রান্ত নোটিস কারখানা চত্বরে টাঙিয়ে দেওয়া হবে। রাজ্য প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘ওই জমি রাজ্যেরই। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে দীর্ঘ দিন কারখানাটি বন্ধ। ওখানে কাজ হচ্ছিল না। তাই এখন পড়ে থাকা জমি সরকারি ভাবে অন্য কোনও কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হবে।’’ প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, বেশ কয়েক মাস আগে উত্তরপাড়ায় এক অনুষ্ঠানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, জমি অব্যবহৃত ফেলে রাখলে তা ফিরিয়ে নিতে পারে সরকার। ফলে এ ভাবে রাজ্য সেই পথেই হাঁটতে চাইছে কি না, তা নিয়ে চড়ছে জল্পনা।
হুগলি জেলা প্রশাসনের তরফে শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক সম্রাট চক্রবর্তী এ দিন বিকেলে সিটু, ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ-সহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের বৈঠকে ডেকে বিষয়টি জানান। কারখানার কর্মীদের একাংশও ছিলেন সেখানে। সব সংগঠনই প্রশাসনিক কর্তাদের জানায়, শিল্পের জমিতে শিল্প স্থাপন করতে হবে। কর্মীদের বকেয়া মেটাতে হবে। যদিও এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের কোনও কর্তাই মুখ খুলতে চাননি।
ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিটুর হিন্দমোটর ওয়াকার্স ইউনিয়নের সম্পাদক দেবীপ্রসাদ বসু রায়। পরে তিনি বলেন, ‘‘কারখানা বহু দিন বন্ধ। অন্তত ৩০০ জন কর্মী-অফিসার তাঁদের বকেয়া পাননি। আমরা চাই বন্ধ কারখানার সমস্ত স্তরের শ্রমিক-কর্মীদের বকেয়া মেটানোর বিষয়টি রাজ্য নিশ্চিত করুক। শিল্পের জমিতে শিল্প হলে স্বাগত জানাব।’’ বৈঠকে উপস্থিত বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায়ের দাবি, ‘‘অবিলম্বে হিন্দমোটর কারখানায় বেআইনি সাসপেনশন তুলুক রাজ্য। শিল্পের জমিতে শিল্প হোক। কর্মীদের বকেয়া মেটানো হোক। শ্রমিক আবাসনে ২৪ ঘণ্টা জল এবং আলো নিশ্চিত করুক রাজ্য।’’
কারখানার কাস্ট আয়রন বিভাগেকাজ করতেন প্রভুনাথ যাদব। তিনিবৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন কাজ করেছি। আরও ক’বছর চাকরি ছিল। বকেয়া দ্রুত মেটানো হোক। জমিতে নতুন কারখানা হলে চাকরির ক্ষেত্রে হিন্দমোটর কর্মীদের পরিবারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হোক।’’ আর এক কর্মী রামবিলাস সিংহের কথায়, ‘‘দু’দশকের বেশি সময় কাজ করেছি। পরিবার নিয়ে অতি কষ্টে আছি। যত দ্রুত সম্ভব পাওনা দেওয়ার ব্যবস্থা হোক। এখানে নতুন শিল্প গড়ে উঠুক। আগামী প্রজন্ম কাজ পাক।’’