প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিজস্ব অনেক জমি রয়েছে। সেগুলি বেচলে প্রায় ৯০০০ কোটি টাকা আয় হতে পারে, দাবি প্রশাসনিক সূত্রের। নবান্নের খবর, রাজ্যের টানাটানির সংসারে আয় বাড়াতে দ্রুত সেই সব জমি বিক্রির ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।
নবান্ন সূত্র জানিয়েছে, বুধবার প্রশাসনিক মূল্যায়নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব স্তরের অফিসারদের বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাজস্ব বাড়ানোর পথ খুঁজতে হবে। এ ব্যাপারে পরিকল্পনা তৈরির দায়িত্ব পরিবহণ, ভূমি-সহ বিভিন্ন দফতরের। পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে জেলাশাসকদের কাছেও। তবে রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিএসডিপি) এবং ঋণের অনুপাত স্বস্তিজনক বলেই দাবি প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের।
রাজ্য আয়ের বাড়তি উৎস খুঁজছে কেন? প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বকেয়া আটকে রাখার অভিযোগ তো রয়েছেই। গত ডিসেম্বর থেকে একশো দিনের কাজ, আবাস ও সড়ক যোজনার টাকাও বন্ধ। এ দিকে লক্ষ্মীর ভান্ডার, পড়ুয়া ঋণ কার্ড, নতুন কৃষকবন্ধুর মতো প্রকল্প এনেছে রাজ্য, যা ব্যয়বহুল। ফলে বাড়তি আয় জরুরি। সূত্রের খবর, পরিবহণের সঙ্গে ভূমি দফতরকেও আয়ের উৎস খুঁজতে বলায় সরকারের জমি বিক্রির কথা উঠেছে। বৈঠকে মন্ত্রীদের একাংশের অভিযোগ, অবৈধ ইটভাটা ও বালি খাদানের কাজকর্মে রাজ্যের অন্তত ৩০% রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। যদিও রাজ্য বালি খাদান নিয়ে পদক্ষেপ করেছে। সেগুলির নিয়ন্ত্রণও এক ছাতার তলায় আনা হয়েছে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে, এমন কাজকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। কড়া নজর রাখতে হবে।
সূত্রের দাবি, এ দিন আয় বৃদ্ধির নানা প্রস্তাবের একটি, ২০০৮-এ শিল্প সংস্থাগুলিকে যে-উৎসাহ ভাতা দেওয়া হত, তা বহাল থাকায় বিপুল খরচ হচ্ছে সরকারের। পুলিশের প্রস্তাব, ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’-এর জন্য ‘ফি’ ধার্য হোক। যে স্কুলগুলিতে পড়ুয়া-শিক্ষকের সংখ্যা সামান্য, সেগুলিকে বেসরকারি সহযোগিতায় পুনর্গঠনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। সবই খতিয়ে দেখছে রাজ্য।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘রাজ্যের প্রকল্পগুলি খুব ভাল ভাবে পরিচালিত হচ্ছে। আয় বাড়াতে বিভিন্ন দফতর এবং জেলাশাসক, পুলিশ সুপারেরাও পরিকল্পনা করবেন। কর্মসংস্থানে ক্ষুদ্র-মাঝারি এবং বড় শিল্প টানার চেষ্টা চলছে। ২০১১ সালে জিএসডিপি-ঋণের অনুপাত ছিল ৪০%। এখন কমে ৩৩-৩৪% হয়েছে। যা ভাল আর্থিক ব্যবস্থাপনার প্রমাণ।’’