প্রতীকী ছবি।
উৎসবের মরসুমের মধ্যেই দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে খুচরো বাজারে মাথা তোলা মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্যপণ্যের চড়া দাম, শিল্পোৎপাদন কমার পরিসংখ্যান। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র পরিসংখ্যানে দেখা গেল, রবিবার (১৬ অক্টোবর) শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হারও তার আগের সপ্তাহের ৭.৩২% থেকে বেড়ে হয়েছে ৮.৭৮%। গ্রামাঞ্চলে পৌঁছেছে ৯.৪২ শতাংশে। শহরাঞ্চলে ৭.৩৬%।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, সাপ্তাহিক হিসাব কাজের বাজারের ছবিটা স্পষ্ট করে না। তবে অন্য অংশের যুক্তি, এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বেকারত্বের হার ঊর্ধ্বমুখী গোটা দেশে, বিশেষত গ্রামাঞ্চলে।
আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের মতে, বাজেটে একশো দিনের কাজে বরাদ্দ কমিয়েছে কেন্দ্র। এতে বিশেষত গ্রামীণ ভারতে কর্মসংস্থানে ধাক্কা লেগেছে। প্রকল্পটিতে আগের মতো জোর দেওয়া হচ্ছে না। যা ওই সব অঞ্চলে বেকারত্ব বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তবে তাঁর দাবি, সার্বিক ভাবেই দেশে চাকরির অবস্থা ভাল নয়। সাপ্তাহিক হোক বা মাসিক, বেকারত্ব বৃদ্ধি সব সময়ই আর্থিক অগ্রগতি শ্লথ হওয়ার ইঙ্গিত, মন্তব্য পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের।
অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার এবং বন্ধন ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ সিদ্ধার্থ সান্যাল অবশ্য বলছেন, এক সপ্তাহের পরিসংখ্যান দেখে পরিস্থিতি সঠিক ভাবে তুলে ধরা কঠিন। বরং সিদ্ধার্থবাবুর দাবি, ‘‘কয়েক মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, হালে বেকারত্ব কিছুটা কমেছে। যদিও সরকার এবং আরবিআইয়ের নীতির উপর ভবিষ্যতের অনেক কিছুই নির্ভর করছে। মূল্যবৃদ্ধি এবং সুদ বৃদ্ধি কর্মসংস্থানের বিষয়টিকে জটিল করছে কি না, দেখতে হবে।’’
সিএমআইই-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মে, জুন, জুলাইয়ে দেশে বেকারত্বের হার ছিল যথাক্রমে ৭.১৪%, ৭.৮৩%, ৬.৮৩%। অগস্টে তা উঠেছিল ৮.২৮ শতাংশে। সেপ্টেম্বরে ফের একটু কমে ৬.৪৩%।
অনির্বাণের কথায়, ‘‘চড়া মূল্যবৃদ্ধি চাহিদা কমিয়েছে। কমছে শিল্পোৎপাদন। ফলে অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। শিল্পে সম্প্রসারণ না হলে কাজের সুযোগ বাড়বে কী করে? কোভিডে অনলাইনে শিক্ষাদানের মতো বেশ কিছু ব্যবসা গজিয়ে উঠেছিল। তার অনেকগুলি গুটিয়ে যাওয়াতেও একাংশ বেকার হয়েছেন। উৎসবে কেনাকাটা কিছুটা ভাল হয়েছে। কিন্তু বহু সংস্থায় নিয়োগ থমকে।’’ রাজেন্দ্রর মতে, উৎসবে আর্থিক কর্মকাণ্ড ফুলে-ফেঁপে ওঠে। বেকারত্ব কমারই কথা। কিন্তু অর্থনীতির সঙ্কট বাধা হচ্ছে।