—প্রতীকী চিত্র।
সরকারি দফতর-সহ বিভিন্ন গ্রাহকের কাছে বিদ্যুতের বিল বাবদ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার প্রাপ্য বকেয়া প্রায় ২৪০০ কোটি টাকা। এর উপর রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম মাসুল বাড়ানোয় বিদ্যুৎ কেনার খরচও বাড়ছে তাদের। টাকা জোগাড়ে তাই গ্রাহকের বকেয়া আদায়ে জোর দিচ্ছে সংস্থা। তালিকায় গৃহস্থের সঙ্গে রয়েছে শিল্প ও বাণিজ্যিক সংস্থা এবং কৃষক। তবে আদায়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে সরকারি দফতর এবং শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের। সংস্থা সূত্রের দাবি, বিদ্যুৎ মাসুল বাড়েনি সাত বছর। অথচ আর্থিক চাপ বাড়ছে। অবস্থা সামলাতে পরিষেবার মান বাড়িয়ে প্রযুক্তিগত ক্ষতি কমানো ছাড়াও বকেয়া আদায় এবং বেআইনি সংযোগ কাটায় জোর দেওয়া হচ্ছে।
খরচ সামলাতে বিদ্যুতের মাসুল বাড়ানো হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছে বটে। তবে একাংশের মতে, ভোটের বছরে সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ।
বণ্টন সংস্থা সূত্রের খবর, বিদ্যুৎ কিনতে নিগমকে এনার্জি চার্জ এবং পরিবর্তনশীল চার্জ (যা মূলত জ্বালানির খরচের উপর নির্ভর করে) দেওয়ার কথা। তবে আর্থিক চাপে তারা শুধু এনার্জি চার্জ মেটাত। সম্প্রতি রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন নিগমের বিদ্যুৎ বিক্রির মাসুল বৃদ্ধিতে সায় দিয়েছে। ফলে এনার্জি চার্জের সঙ্গে আগের পরিবর্তনশীল চার্জ জুড়ে নতুন মাসুল স্থির হয়েছে। যা গত এপ্রিল থেকে কার্যকর হচ্ছে। অর্থাৎ বিদ্যুৎ কিনতে বণ্টন সংস্থার খরচ বেড়েছে। গত এপ্রিল-ডিসেম্বরে নিগমের প্রাপ্য বকেয়া ছুঁয়েছে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা। তার পরে মাসে এ জন্য বণ্টন সংস্থার খরচ বাড়ছে প্রায় ১৩০ কোটি।
তাদের দাবি, ২০১৬-র পরে গ্রাহকদের বিদ্যুতের মাসুল বাড়েনি। বকেয়া পেতে বিলম্ব এবং বেআইনি সংযোগের জেরেও আর্থিক চাপ বাড়ে। যদিও গ্রাহকের থেকে যে ন্যূনতম এবং স্থায়ী চার্জ নেয় তারা, তা সম্প্রতি বাড়ানো হয়েছে। তবে সংস্থার বক্তব্য, তার অঙ্ক অল্প। তারা জানাচ্ছে, রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দফতরের থেকে বকেয়া ও চালু বিদ্যুৎ বিল মিলিয়ে ১০৪৩ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। কিন্তু এখনও নানা দফতর মিলিয়ে বাকি প্রায় ১৪০০ কোটি। তা মেটানোর আর্জি জানানো হয়েছে। নবান্ন থেকেও দেওয়া হয়েছে একই বার্তা। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর, জেলার পঞ্চায়েত অফিসার এবং বণ্টন সংস্থার আঞ্চলিক ম্যানেজারদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেছে। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা থেকে বকেয়া মেটানোর বিষয়টিও তারা খতিয়ে দেখছে।
বিদ্যুৎ মহলের হিসাব, যা বিদ্যুৎ কেনা হয়, গড়ে তার ৭% চুরি হয়। হুকিং ঠেকাতে গত বছর বণ্টন সংস্থা অভিযান চালালেও ভোটের সময়ে তাতে রাশ টানে রাজ্য প্রশাসন। এখন ফের অভিযান শুরু হয়েছে।