করোনা পরিস্থিতিতে আমজনতাকে সতর্ক হওয়ার আর্জি জানাচ্ছে হোটেল-রেস্তরাঁগুলি। এ বার তার সঙ্গে মিশছে বড়দিন এবং বর্ষবরণের ভিড়। প্রতীকী ছবি।
ব্যবসাকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর ঘূর্ণি পিচে ভরসা জুগিয়েছিল পুজোর মরসুম। বড়দিনের ব্যবসা তাকে আরও মজবুত করেছে, দাবি হোটেল-রেস্তরাঁগুলির। এ বার তার সঙ্গে মিশছে বর্ষবরণের ভিড়। ফলে পুরনো বছরের শেষ আর নতুন বছর শুরুর উৎসব ঘিরে ভরপুর রোজগারের আশায় এই আতিথেয়তা শিল্প। বিশেষত ৩১ ডিসেম্বর এবং ১ জানুয়ারি যেহেতু শনি ও রবিবার পড়েছে। তবে তারই মধ্যে সংশয় তৈরি করছে চিন-সহ বিভিন্ন দেশে বাড়তে থাকা কোভিড। বিদেশ থেকে আসা একাংশের সংক্রমণ ধরা পড়েছে ভারতেও। প্রশ্ন উঠেছে, ফের কি এখানে আছড়ে পড়বে নতুন ঢেউ?
এই পরিস্থিতিতে আমজনতাকে সতর্ক হওয়ার আর্জি জানাচ্ছে হোটেল-রেস্তরাঁগুলি। যারা বছর দুয়েক আগে মানুষের ঘরবন্দি দশার জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। তাদের আবেদন, সকলে যেন করোনা-বিধি মেনে চলেন। তা হলে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে বেরোবে না। ব্যবসা থেকে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, কোনও কিছুতেই চাপবে না কড়াকড়ি। ফলে রুজি-রোজগার হারানোরও প্রশ্ন উঠবে না। অবশ্য একই সঙ্গে শিল্পের দাবি, আশঙ্কা তৈরি হলেও অতিমারি সামলানোর অভিজ্ঞতা এবং টিকাকরণ বড় ভরসা। তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলিও।
অনিশ্চয়তা কাটিয়ে রাজ্যে এ বার দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ভাইফোঁটায় হোটেল-রেস্তরাঁগুলির ব্যবসা প্রাক-করোনা পর্বকে (২০১৯ সালের) প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছিল, বলছে হোটেল অ্যান্ড রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। আতিথেয়তা শিল্পের এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট সুদেশ পোদ্দার জানান, বড়দিনের ছুটিতে অতিথি সমাগম এবং ব্যবসা ২০১৯-এর তুলনায় বেড়েছে প্রায় ১৫%। আর এক সংগঠন ফেডারেশন অব হোটেল অ্যান্ড রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট গুরবক্সিশ সিংহ কোহলি মুম্বই থেকে ফোনে জানান, বড়দিনের ছুটিতে সারা দেশে এই শিল্পের গড় ব্যবসা পৌঁছে গিয়েছে ২০১৯ সালের কাছাকাছি জায়গায়।
নতুন বছরেও এই ধারা বহাল থাকা নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন তাঁরা। সেই আশা না-ছাড়লেও, আচমকা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা যে কিছুটা হলেও সুর কেটেছে, মানছেন সকলে। তাঁদের মতে, এই উদ্বেগই ফের ধাক্কা দিতে পারে ব্যবসায়। গুরুবক্সিশের বক্তব্য, হোটেলের বুকিং বাতিল হচ্ছে না। নতুন বুকিংও বন্ধ হয়নি। এ সপ্তাহে জল কোন দিকে গড়ায়, লক্ষ্য রাখছেন তাঁরা। তবে তিনি বলেন, ‘‘গুজবে কান দেবেন না। হোয়াটসঅ্যাপে আসা যে কোনও বার্তায় বিশ্বাস না করাই ভাল। বরং নজর রাখুন সরকারি নির্দেশের দিকে। সেগুলি মেনে চলুন।’’
কোহলি এবং সুদেশের দাবি, দেশ করোনা সংক্রমণের মোকাবিলায় এখন যথেষ্ট প্রস্তুত। সতর্কতামূলক নিয়মগুলি মেনে চললে স্বাভাবিক এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বিধিনিষেধের কোনও কড়াকড়ি না-করেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে।