প্রতীকী ছবি।
আমেরিকার পণ্যে ভারত, চিন-সহ বিভিন্ন দেশ ‘অনৈতিক ভাবে’ বেশি পরিমাণ আমদানি শুল্ক বসিয়ে বাণিজ্যে সুবিধা নেয় বলে বহু দিন ধরে তোপ দাগছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মূলত এ নিয়েই মার্কিন-চিন শুল্ক যুদ্ধে তোলপাড় হয়েছে দুনিয়া। এ বার ট্রাম্পের দেশ ঠিক তেমনই অভিযোগ তুলল ডিজিটাল পরিষেবায় বসা কর নিয়ে। ক্ষোভ প্রকাশ করে ওয়াশিংটনের তরফে বলা হল, ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ ‘অন্যায় ভাবে’ মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে নিশানা করে তাদের উপরে ওই কর বসাচ্ছে। তাই এ নিয়ে তদন্তে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ভারতের সঙ্গে ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চেক প্রজাতন্ত্র, ইটালি, স্পেন, তুরস্ক এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশও পড়বে তদন্তের আওতায়। কেন্দ্রের তরফে এখনও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা না-হলেও, সূত্রের খবর, আমেরিকার এই পদক্ষেপকে এখনও পর্যন্ত আগ্রাসন হিসেবে দেখতে চাইছে না সরকার।
ডিজিটাল পরিষেবা কর কী?
অন্য দেশের কোনও সংস্থা ভারতের নাগরিকদের পণ্য-পরিষেবা বিক্রি করলে, সেই সংস্থাটিকে বিলের অঙ্কের উপরে কর দিতে হয়। ১ এপ্রিল থেকে ২% হারে এই কর নিচ্ছে কেন্দ্র। যে সমস্ত সংস্থার বার্ষিক ব্যবসা ২ কোটি টাকার বেশি, তাদের তা দিতে হয়। বিদেশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলির বিজ্ঞাপন (যদি তা ভারতীয় ক্রেতাদের জন্য হয়) থেকে আয়েও এই কর গোনা হচ্ছে। শুধু ভারত নয়, বেশ কিছু দেশ ডিজিটাল পরিষেবা কর চালু করেছে। কেউ তা চালুর কথা ভাবছে। আমেরিকার বক্তব্য, এই করের কোপ সব থেকে বেশি পড়েছে তাদের দেশের সংস্থাগুলির উপরে। যেমন, অ্যামাজনের মতো ই-কমার্স সংস্থা ভারতীয় ক্রেতাকে পণ্য বেচলেই গুনতে হচ্ছে কর। বিজ্ঞাপন থেকে আয়ে কর চাপছে গুগ্লের উপরে।
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটহাইজ়ার জানান, যে ভাবে আমেরিকার সংস্থায় ‘একতরফা’ কর চাপাচ্ছে বাণিজ্য সহযোগীরা, তাতে ট্রাম্প উদ্বিগ্ন। এই কর নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মার্কিন চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট মায়রন ব্রিলিয়ান্টের বক্তব্য, ডিজিটাল বাণিজ্য এখন আর্থিক বৃদ্ধির অন্যতম হাতিয়ার। তাই বহুপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে এই বিতর্কের সমাধানসূত্র খোঁজা হোক।