প্রতীকী ছবি।
গত ন’মাস ধরে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমার উপরে। ক্রমাগত সুদের হার বাড়িয়েও তাকে লাগাম পরানো যায়নি। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক আইন অনুযায়ী, এ বার কেন্দ্রের কাছে এ বিষয়ে জবাবদিহি করতে হবে শীর্ষ ব্যাঙ্ককে। তবে শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির সদস্য শশাঙ্ক ভিদের মতে, এই পরিস্থিতির জন্য রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক দায়ী নয়। দায়ী আন্তর্জাতিক সমস্যা। আর্থিক বৃদ্ধিও ধাক্কা খাচ্ছে একই কারণে।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত আদর্শ মূল্যবৃদ্ধির হার ৪%। আর সহনসীমা এর চেয়ে ২% বেশি, অর্থাৎ ৬%। কিন্তু গত জানুয়ারি থেকেই ওই হার ৬ শতাংশের উপরে। সেপ্টেম্বরে তা ৭.৪১% ছিল। একে নিয়ন্ত্রণে আনতে মে মাস থেকে কয়েক দফায় রেপো রেট (যে সুদের হারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক স্বল্প মেয়াদে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয়) মোট ১৯০ বাড়িয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তবে জিনিসপত্রের দামে তার সুফল এখনও পর্যন্তদেখা যায়নি।
শশাঙ্কের বক্তব্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে জ্বালানি ও খাদ্যের দাম হু-হু করে বেড়েছে। বেশি দামে ওই দুই শ্রেণির পণ্য আমদানি করে দেশের বাজারে বিক্রির বিরূপ প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক মূল্যবৃদ্ধির হারে। তবে একে নিয়ন্ত্রণে আনতে উপযুক্ত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার কথা অস্বীকার করেননি তিনি। জোর দিয়েছেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতির সঙ্গে সরকারের আর্থিকনীতির সমন্বয়ে।
করোনা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যা বারবার বিশ্বের জোগান শৃঙ্খলকে ধাক্কা দিচ্ছে। সরবরাহের সমস্যায় বাড়ছে পণ্যের দাম। ঠিক সেই কারণেই মাথা তুলছে ভারতের আমদানি খরচ। আবার অন্যান্য দেশে চাহিদার পতনের ফলে কমছে রফতানি। বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি। শশাঙ্কের মতে, মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি, জোগানের এই সমস্যার প্রভাব পড়েছে আর্থিক বৃদ্ধিতেও। তা সত্ত্বেও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস অনুযায়ী সেই হার ৭ শতাংশের আশেপাশেই থাকবে। বিভিন্ন মহল অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে, বৃদ্ধির পূর্বাভাস তারও নীচে নামিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ) এবং বিশ্ব ব্যাঙ্ক।