প্রতীকী ছবি।
শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প হলেও, এখনও দেশের লক্ষ লক্ষ কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) আওতার বাইরে রয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁদের সুরাহা দিতে এ বার কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবের কাছে পিএফের বিভিন্ন নিয়ম বদলের একাধিক সুপারিশ জমা দিল শ্রমিক ইউনিয়ন। ইউনাইটেড ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের (ইউটিইউসি) দাবি, রাজ্যে সিভিক পুলিশ-সহ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত কর্মীদের পিএফের আওতায় আনা হোক। এ ছাড়াও পিএফের সুবিধা পাওয়ার জন্য মাসিক বেতনের সীমা বৃদ্ধি-সহ একাধিক দাবি জানানো হয়েছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ জানান, ‘‘প্রভিডেন্ট ফান্ড প্রকল্পটি মূলত শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প। কিন্তু বাস্তবে নীচের স্তরের কয়েক লক্ষ কর্মী এখনও এর অধীনে নেই। তাঁদের প্রকল্পে আনার পাশাপাশি এর সুবিধা পেতে যাতে সদস্যদের অযথা হেনস্থা হতে না-হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য ওই প্রকল্পে একাধিক সংস্কারের প্রস্তাব দিয়ে সুপারিশপত্র শ্রমমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, বিহারের মতো কিছু রাজ্যে সরকারের উদ্যোগে বিভিন্ন ক্ষেত্রের চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিকদের মধ্যে অনেককে পিএফে আনা হয়েছে। কিন্তু বাকি রাজ্যগুলিতেও তা জরুরি। এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কেন্দ্রকে।
বর্তমানে কোনও সংস্থায় কমপক্ষে ২০ জন কর্মী থাকলে, তবেই সেই সংস্থা পিএফের আওতায় আসে। কিন্তু রাজ্য কর্মী বিমা প্রকল্পের (ইএসআই) ক্ষেত্রে তা ১০ জন। আবার নিয়ম অনুসারে মাসে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত যাঁদের বেতন, তাঁরাই পিএফের আওতায় থাকতে পারেন। কিন্তু ইএসআই-এর ক্ষেত্রে তা ২১,০০০ টাকা। যে কারণে বহু কর্মী পিএফের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন বলে অভিযোগ। এই সব কথা মাথায় রেখেই দুই প্রকল্পে একই নিয়ম চালুর প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে করা হয়েছে টাস্ক ফোর্স গঠনের সুপারিশও।
তা ছাড়াও শ্রমিক মহলের অভিযোগ, যাঁরা ইতিমধ্যেই পিএফের আওতায় রয়েছেন, তাঁদের বহু সময়ে পরিষেবা পেতে কর্তৃপক্ষের দফতরে ঘুরতে হয়। অসুবিধা বেশি হয় জেলার মানুষদের। কয়েকটি জেলা মিলিয়ে পিএফের একটি আঞ্চলিক দফতর তৈরি হলেও সমস্যা মেটেনি। কর্মীদের অনেক ক্ষেত্রে সেখানের কাজ সারতেই এক দিন চলে যায়, হারাতে হয় রুজি-রুটি। তাই প্রতি জেলায় অফিস খোলার প্রস্তাবও দিয়েছে ইউটিইউসি। সদস্যেরা যাতে পিএফের রাজ্য ভিত্তিক আঞ্চলিক দফতরেও জনসংযোগ অফিসারের কাছ থেকে চটজলদি তথ্য পেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করারও আর্জি জানানো হয়েছে।