অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র।
বিত্তশালীদের সম্পদ বাড়ছে। গরিবেরা হচ্ছেন আরও গরিব— মোদী জমানায় দেশবাসীর আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কে দেশি-বিদেশি পরামর্শদাতা সংস্থাগুলির মূল্যায়ন এমনই। এর জবাব দিতে গিয়ে স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখার রিপোর্টকে হাতিয়ার করে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বললেন, আর্থিক অসাম্যের অভিযোগ আসলে ‘মিথ’!
অর্থনীতিবিদদের একাংশের বক্তব্য, কোভিড কাটিয়ে ভারতীয় অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো ইংরেজি ‘কে’ অক্ষরের মতো। কারণ, ধনীদের আয় বাড়লেও দরিদ্রদের কমেছে। তবে এই দাবিকে তীব্র আক্রমণ করে স্টেট ব্যাঙ্কের রিপোর্টে বলা হয়েছে, অসাম্য কমেছে। আয়করদাতাদের ৩৬.৩% কম আয়ের বন্ধনী থেকে বেশি আয়েরটিতে উঠেছেন। ২০১৩-১৪ থেকে ২০২১-২২ সালের মধ্যে বছরে ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আয়ের করদাতা বেড়েছে ২৯৫%। বহু ছোট-মাঝারি সংস্থা বড় সংস্থা হয়েছে। ২০১৩-১৪ সালে ১০০ কোটি টাকার বেশি রোজগেরে ছিলেন ২৩ জন। ২০২০-২১ সালে তা ১৩৬। অথচ দেশের মোট আয়ে তাঁদের ভাগ কমেছে। আজ স্টেট ব্যাঙ্কের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সৌম্যকান্তি ঘোষ ও অর্থনীতিবিদ অনুরাগ চন্দ্রের লেখা নিবন্ধ উদ্ধৃত করে নির্মলা বলেন, ‘‘কে-অক্ষরের মতো? কভি নহি!’’
ব্রিটেনের বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সন্তোষ মেহরোত্রের মন্তব্য, ‘‘দুঃখজনক দিন। দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্কের প্রধান অর্থনীতিবিদ ১৪০ কোটি মানুষের ৩ শতাংশের তথ্যকে ভিত করে আয়ের অসাম্য অনুমান করেন। অর্থমন্ত্রী সেটিই তুলে ধরেন।’’ তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের অভিযোগ, ‘‘অসাম্য নিয়ে মুখ খোলাতেই সরকার ১৪৬ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করেছিল।’’
অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা মানছেন, চলতি বছরে বৃদ্ধির প্রথম আগাম পূর্বাভাস দিয়ে পরিসংখ্যান মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্যেও অসাম্যের লক্ষণ স্পষ্ট। অনুমান, ব্যক্তিগত কেনাকাটার চাহিদা বৃদ্ধি চলতি অর্থবর্ষে হবে ৪.৪%। মোদী সরকারের প্রথম পাঁচ বছরে তা অনেক বেশি (৭.১%) ছিল।