প্রতীকী ছবি।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাসুল গুনে এপ্রিলে ফের মাথা তুলল বেকারত্বের হার। ডিসেম্বরের পরে সব থেকে বেশি। আর সাপ্তাহিক হিসেবে মে মাসে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে তা এক লাফে দ্বিগুণ হয়ে গেল। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র পরিসংখ্যান বলছে, ৯ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে বেকারত্ব ছুঁয়েছিল ৮.৬৭%। সাত দিন পরে তা-ই পৌঁছে গিয়েছে ১৪.৪৫ শতাংশে। প্রায় ৫০ সপ্তাহে সর্বোচ্চ। গ্রাম, শহর সর্বত্রই তা ছাড়িয়ে গিয়েছে ১৪%।
গত বছর এপ্রিল, মে মাসে দেশে বেকারত্বের হার ২০% ছাড়িয়েছিল। ৭ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে তা ছিল ১৭.৫১%। তখন লকডাউনের ধাক্কায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি। সিএমআইই-র দাবি, এ বারও বেকারত্ব বাড়ছে রাজ্যে রাজ্যে লকডাউন, বিধিনিষেধের জন্য। কাজ খোঁজাই থামিয়ে দিয়েছেন অনেকে। অর্থনীতি এই মুহূর্তে বড় সংখ্যক মানুষকে চাকরি দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, অর্থনীতির ঝিমুনিতে গত বছর লকডাউনের আগে থেকেই মাথা তুলছিল বেকারত্ব। ফলে করোনা রুখতে গোটা দেশ ঘরবন্দি হতেই তার হার পৌঁছেছিল চোখ কপালে তোলা উচ্চতায়। পরবর্তীকালে আর্থিক কর্মকাণ্ড খুলতে শুরু করায় তা কমতে শুরু করে বটে। তবে কর্মসংস্থানের গতি প্রত্যাশার তুলনায় অনেক পিছিয়েই ছিল। কাজকর্ম শুরু হলেও নিয়োগে ধারাবাহিক উন্নতি তেমন ফেরেনি।
অতিমারির দ্বিতীয় কামড় আর্থিক কর্মকাণ্ডের বড় অংশে ধাক্কা না-দিলে এবং প্রতিষেধক প্রয়োগের সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে তাকে শুরুতেই শক্ত হাতে থামানো গেলে ভয় কাটত, বলছে সংশ্লিষ্ট মহল। তাদের মতে, উৎপাদন এবং পরিষেবা বৃদ্ধির হাত ধরে অর্থনীতির দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানো নিশ্চিত হলে নিয়োগও বাড়াত সংস্থাগুলি। কিন্তু সিএমআইই তথ্য বলছে, এপ্রিলে তা তো হয়ইনি, উল্টে কর্মী কমেছে। এমনকি কাজ খুঁজতেও বেরিয়েছেন কম মানুষ। অর্থনীতিবিদদের মতে, রাজ্যে রাজ্যে বিধিনিষেধ, লকডাউন জুড়ে দিলে ক্ষয়ক্ষতি দেশ জুড়ে পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের তুলনায় খুব কম কিছু নয়। বিপুল সংক্রমণ আর মৃত্যুর বাতাবরণ কাজ কাড়বে জানাই ছিল। কিন্তু আর কতটা, সেটাই প্রশ্ন।