প্রতীকী ছবি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ভারতের যুব সম্প্রদায়ের কাজের বাজারে অংশ নেওয়ার অনিচ্ছা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র কর্তা মহেশ ব্যাস। তাঁর দাবি ছিল, যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির সুযোগ না থাকা এর অন্যতম কারণ। সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, আর্থিক কর্মকাণ্ড পুরোদমে চালু হলেও চাকরি না থাকার এই ছবিটা শহুরে জীবনে ঘোরতর বাস্তব। যা স্পষ্ট সিএমআইই-র পরিসংখ্যানেই। সেখানে গত রবিবার (১৪ অগস্ট) শেষ হওয়া সপ্তাহে শহুরে বেকারত্বের হার পৌঁছে গিয়েছে ১০.২৬ শতাংশে। সেই সময় গ্রামাঞ্চলের বেকারত্ব কিছুটা নেমে হয়েছে ৬.০৭%। গোটা দেশের বিচারেও তা তার আগের সপ্তাহের থেকে কিছুটা কম, ৭.৪২%। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের সর্বত্রই কাজের বাজারের ছবিটা নানা সময় বদলে যায়। তবে জুন থেকে শহুরে বেকারত্ব প্রায় এক নাগাড়ে বাড়ছে।
আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত বলেন, আর্থিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেয় শহর ভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তি, আর্থিক পরিষেবার মতো ক্ষেত্র। কিন্তু সেই সব জায়গায় বিশেষ ভাবে দক্ষ কিছু হাতে গোনা কর্মীর চাকরি হয়। বিরাট সংখ্যক অদক্ষ বা কম দক্ষদের কাজ নেই। একাংশ শহরের বাইরে রোজগারের পথ খুঁজে নিচ্ছেন। একাংশ অস্থায়ী কর্মী। বছরের সব সময়ে কাজ থাকে না। তার উপরে সুদের হার বাড়ায় আবাসন শিল্প শ্লথ।
মহেশ দাবি করেছিলেন, নিয়োগ দ্রুত হারে বাড়ার মতো লগ্নিই হচ্ছে না। কর্মসংস্থানবিহীন আর্থিক বৃদ্ধির প্রবণতা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। অর্থনীতির অধ্যাপক মহানন্দা কাঞ্জিলালের বক্তব্য, গ্রামের বেকারত্ব কিছুটা মরসুমি। কৃষিকাজ থাকলে কমে, না থাকলে বাড়ে। স্বল্প মেয়াদে ১০০ দিনের কাজ হয়। কিন্তু শহরে বেকারত্বের কারণ শিল্পের খরা। বেশিরভাগই অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ খোঁজেন। যা কোভিডের ক্ষত সারিয়ে চাঙ্গা হতে পারেনি। চাহিদার ঘাটতি, কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি উৎপাদন কমাচ্ছে। ফলে কর্মসংস্থান বাড়ছে না।
পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকও একই কথা বলছেন, ‘‘কোভিডের ধাক্কা থেকে এখনও শিল্প সংস্থাগুলি বেরিয়ে আসতে পারেনি। মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা উৎপাদন এবং পণ্য বিক্রিতে। তাই অনেক সংস্থাই কর্মী সংখ্যা কমানো-সহ নানা ভাবে সংস্থার খরচ কমিয়ে লাভ বহাল রাখার কৌশল নিয়েছে। ফলে বেকারত্ব বাড়বেই।’’