ত্রাণ প্রকল্প। হাজার আশ্বাস। তবু বদল নেই কাজের ছবিতে। গ্রামাঞ্চলে বরং পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
সোমবার সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমির (সিএমআইই) রিপোর্ট জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ৭.৭৮%। যা গত অক্টোবরের পর সর্বাধিক। জানুয়ারিতে এই হার ছিল ৭.১৬%। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রের জন্য ত্রাণ প্রকল্প কিংবা সংস্থাগুলির হাতে বাড়তি পুঁজির সুযোগ তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে কোম্পানি কর যতই কমানো হোক না কেন, তা যে কর্মসংস্থানের পালে এখনও পর্যন্ত হাওয়া দেয়নি, সেটাই পরিষ্কার হয়েছে এই তথ্যে। এখানেই অবশ্য শেষ নয়। রিপোর্ট বলছে, গ্রামাঞ্চলে গত মাসে বেকারত্বের হার জানুয়ারির চেয়ে বেড়ে হয়েছে ৭.৩৭%। জানুয়ারিতে তা ৫.৯৭% ছিল। অর্থাৎ, গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা ঘোরা তো দূর অস্ত্, পরিস্থিতির আরও অবনতিই ইঙ্গিত করছে ওই সূচক। তবে শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার ৯.৭% থেকে কমে হয়েছে ৮.৬৫%।
অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে, তৃতীয় ত্রৈমাসিকের আর্থিক বৃদ্ধি কমেছে। উৎপাদন ক্ষেত্রেও গতি শ্লথ। এই অবস্থায় ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের মধ্যে দেশকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে মোদী সরকার। তার জন্য জেলাস্তর থেকে আর্থিক বৃদ্ধিকে চাঙ্গা করার কথা বলছে তারা। মন্ত্রিসভার জনৈক সদস্য আবার এক ধাপ এগিয়ে ওই সময়ের মধ্যে দেশকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি করার কথা বলেছেন। অথচ, সাম্প্রতিক কালের সরকারি বা বেসরকারি কোনও পরিসংখ্যানের সঙ্গেই এই সমস্ত ঘোষণার বিশেষ সামঞ্জস্য নেই। গত ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার নেমেছে ৪.৭ শতাংশে। এ দিন প্রকাশিত বেসরকারি সমীক্ষা অনুযায়ী, খাড়ার ঘা পড়েছে উৎপাদনেও। বেসরকারি বিনিয়োগের পরিস্থিতিও ভাল নয়। আর একই দিনে প্রকাশ হওয়া সিএমআইই-র সমীক্ষায় স্পষ্ট, গ্রামের দিকে কর্মসংস্থানের পরিস্থিতি ভাল নয়।
এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সরকার তো অর্থনীতির রোগের কথাই স্বীকার করতে চাইছে না। রোগ নির্ণয় করলে তবেই না ওষুধের প্রশ্ন। তা হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে কী করে?