—প্রতীকী ছবি।
বিমানবন্দরে রয়েছে চারটি পার্কিং বে। ট্যাক্সি বে একটি। ২৭০০ মিটার লম্বা রানওয়েতে এয়ারবাস ৩২০-র থেকে বড় বিমান ওঠানামা করতে পারে না। সেই অন্ডালকে দু’বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্তরে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা শুক্রবার অন্তর্বর্তী বাজেট প্রস্তাবে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে মালদহ, বালুরঘাট, কোচবিহার থেকে আঞ্চলিক উড়ান চালানোর কথাও জানান তিনি।
বিমান পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞ এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কর্তা-ব্যক্তিরা এই ঘোষণা শুনে কিছুটা অবাক! এক কর্তার বক্তব্য, কোনও বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক করা হবে কি না, সেটা মূলত কেন্দ্র ঠিক করে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে তৈরি করতে প্রথমেই প্রয়োজন অভিবাসন ও শুল্ক দফতর। দু’টিই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। ফলে, কোনও রাজ্য সরকার কোনও বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক হবে বলে ঘোষণা করতে পারে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
এক কর্তার কথায়, ‘‘মাত্র ২০০ লোকের বসার জায়গা রয়েছে টার্মিনালে। তর্কের খাতিরে ধরা গেল যে টার্মিনাল বাড়ানো যাবে। কিন্তু, মাত্র চারটি পার্কিং বে নিয়ে আন্তর্জাতিক! আপাতত যা অবস্থা, সেই পার্কিং বে-র সংখ্যা বাড়ানোর জায়গা পাওয়াও মুশকিল। আন্তর্জাতিক স্তরে উত্তীর্ণ হতে গেলে রানওয়ে বাড়াতে হবে। কিন্তু সেখানেও সমস্যা রয়েছে।’’
এখন মুম্বই, চেন্নাই ও দিল্লি— সাকুল্যে তিনটি শহরে যাওয়ার উড়ান চলছে অন্ডাল থেকে। আন্তর্জাতিক উড়ান সংস্থাগুলি অনেক ক্ষেত্রেই এয়ারবাস ৩২০-র থেকে বড় বিমান ব্যবহার করে। সে ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৩০০০ মিটার রানওয়ের প্রয়োজন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের যুক্তি, কোনও রাজ্য চাইলে নিজেদের উদ্যোগে আঞ্চলিক উড়ান পরিষেবা চালু করতেই পারে। কিন্তু কারা চালাবে? অভিযোগ, এত দিন চেষ্টা করেও কোচবিহারে কোনও উড়ান চালানো যায়নি। তার লাইসেন্স তুলে নিয়েছে কেন্দ্র। সেখানে নিয়মিত উড়ান চালাতে গেলে ২০ আসনের বিমানের প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত দেশে নিয়মিত উড়ান পরিষেবা দেওয়া কোনও সংস্থা অত ছোট বিমান চালায় না।
কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, বালুরঘাট ও মালদহ বিমানবন্দরের জমি রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বিমানবন্দর তৈরি করছে তারাই। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বলেন, ‘‘বালুরঘাটে রানওয়ে করা হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু কোথাও পিচ ঢেলে দিলেই তো রানওয়ে হয়ে যাবে না! তার আশেপাশে কোনও বাধা আছে কিনা, সেটাও সমীক্ষা করে দেখার কথা। সেই সমীক্ষা আমাদেরই করতে হবে। এখনও তা হয়নি। মালদহ বিমানবন্দর নিয়েও সংশয় রয়েছে। সেখানে রেললাইন-সহ একাধিক বাড়ি বিমান নামা-ওঠার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।’’