প্রতীকী ছবি।
চাহিদা বাড়লেও, কয়লার জোগানে টান পড়ায় গত মাস থেকে দেশের বহু রাজ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে ঘাটতির জেরে লোডশেডিং বাড়ছে বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় কয়লা নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে। বুধবার সেই বিতর্ক বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের অভিযোগ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান ও পশ্চিমবঙ্গের মতো কিছু রাজ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলি কয়লার দামের বকেয়া না মেটানোয় তার জোগান কমেছে। পশ্চিমবঙ্গের পাল্টা দাবি, নিয়ম মেনেই বকেয়া মেটানো হচ্ছে। রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের নিজস্ব পাঁচটি খনি থেকেই চাহিদার ৯৫% কয়লা যাওয়ায় (দৈনিক ৫০,০০০-৫৫,০০০ টন) পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুৎ সঙ্কটের আশঙ্কা নেই।
কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিবকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক নোটে দাবি, ওই সব রাজ্যের বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলির মোট বকেয়ার পরিমাণ ৭৯১৮ কোটি টাকা। তাই গত কয়েক মাসে সেখানে কয়লার জোগান কমেছে। তারা মজুত ভান্ডারও গড়ে তুলতে পারেনি। তবে ইতিমধ্যেই দেশের ৮০% কয়লা সরবরাহকারী সংস্থা কোল ইন্ডিয়া দাবি করেছে, গত বছরের এপ্রিলের চেয়ে এ বার বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে ১৫.৬% বাড়তি জোগানো হয়েছে।
বকেয়ার অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের (ডব্লিউবিপিডিসিএল) বার্তা, নিয়ম মেনেই নিয়মিত বকেয়া মেটানো হয়। বরং কেন্দ্র এবং কোল ইন্ডিয়া কয়লা দিতে পারছে না। অন্যান্য রাজ্য নিজস্ব খনিগুলি থেকে পুরোদমে কয়লা উত্তোলন শুরু করতে পারেনি। কিন্তু বাংলায় নিগমের পাঁচটি খনি থেকে অনেক আগেই উৎপাদন শুরু হওয়ায় সেই সমস্যার মুখে পড়তে হয়নি। সেই কাজে আরও জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে উৎপাদন আরও ৫% বাড়ানো যেতে পারে। এ ছাড়া, প্রায় ১.৬ লক্ষ টন মজুত আছে। কয়লার জোগানে রাজ্য কার্যত স্বনির্ভর হওয়ায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের আশঙ্কাও নেই।
এ দিকে, কয়লার সঙ্কট কাটাতে আমদানি সংক্রান্ত কেন্দ্রের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অল ইন্ডিয়া পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার্স ফেডারেশন (এআইপিইএফ)। তাদের বক্তব্য, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকে কয়লা আমদানি করতে বলা হয়েছে। কিন্তু রেলের রেকের ঘাটতির জন্য যেখানে দেশের কয়লাই ঠিকমতো পাঠানো যাচ্ছে না, তখন বন্দর থেকে বিদেশি কয়লা সরবরাহ হবে কী করে? তাদের ক্ষোভ, আদানি ও টাটা গোষ্ঠীর তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে কয়লা আমদানির নির্দেশ দেয়নি সরকার। অথচ ওই কেন্দ্রগুলি সমুদ্র উপকূলেই অবস্থিত এবং এক সময়ে আমদানিকৃত কয়লায় চলত। কিন্তু দাম বৃদ্ধির পরে বেসরকারি সংস্থাগুলি সেগুলির ব্যবহার বন্ধ রেখেছে। তা হলে চড়া দামে আমদানি করা কয়লায় বাকিদের বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে কেন্দ্র কী করে নির্দেশ দিচ্ছে, প্রশ্ন এআইপিইএফের।