জিএসটি চালু হলে এক লপ্তে বোঝা চাপানোর বিপক্ষে জেটলি

বাজেটে বাড়তে পারে পরিষেবা কর

জিএসটি জমানা শুরুর আগেই আমজনতার রেস্তোরাঁয় খাওয়ার খরচ, ফোনের বিল বাড়ানোর পথে হাঁটতে পারেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি যে আসন্ন বাজেটে পরিষেবা কর বা সার্ভিস ট্যাক্সের হার বাড়াতে পারেন, সেই ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই মিলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:২০
Share:

জিএসটি জমানা শুরুর আগেই আমজনতার রেস্তোরাঁয় খাওয়ার খরচ, ফোনের বিল বাড়ানোর পথে হাঁটতে পারেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি যে আসন্ন বাজেটে পরিষেবা কর বা সার্ভিস ট্যাক্সের হার বাড়াতে পারেন, সেই ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই মিলেছে।

Advertisement

এখন পরিষেবা কর ১৫%। এর মধ্যে স্বচ্ছ ভারত সেস ও কৃষি কল্যাণ সেসও রয়েছে। কিন্তু পণ্য-পরিষেবা কর বা জিএসটি চালু হলে অধিকাংশ পরিষেবার উপরেই ১৮% হারে কর বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের আলোচনায় ঐকমত্য হয়েছে, আগামী ১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু হবে। সে ক্ষেত্রে তখন পরিষেবা করের হার ১৫ থেকে বেড়ে এক লাফে ১৮% হবে। ফলে প্রায় সব রকম পরিষেবার খরচই বাড়বে। সাধারণ মানুষের পকেটে একেবারে যাতে অতখানি ধাক্কা না-লাগে, তার জন্য আগেভাগেই বাজেটে পরিষেবা করের হার কিছুটা বাড়িয়ে রাখতে চাইছেন জেটলি। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের ইঙ্গিত, ১ ফেব্রুয়ারির বাজেটে পরিষেবা করের হার ১৫% থেকে বাড়িয়ে ১৬% করা হতে পারে। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা অবশ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, যেখানে একই সঙ্গে পণ্য ও পরিষেবার দামের উপর কর মেটাতে হয়, সেখানে শুধু পরিষেবার অংশটির উপরেই বাজেটে বাড়তি কর চাপানোর ইঙ্গিত মিলেছে। যেমন, রেস্তোরাঁয় খাওয়াদাওয়ার মতো ক্ষেত্র, যেখানে খাবারের দাম এবং পরিষেবা, দু’টোর দামের উপরেই কর বসানো হয়।

জিএসটি চালু হলে সমস্ত পরিষেবাই তার আওতায় চলে আসবে। বাদ থাকবে একমাত্র হাসপাতালে চিকিৎসা, শিক্ষার মতো জরুরি পরিষেবা। জিএসটি পরিষদে ঠিক হওয়া কাঠামো অনুযায়ী চারটি হারে কর বসবে— ৫, ১২, ১৮ ও ২৮%। এর উপরে আবার বিদেশি বিলাসবহুল গাড়ি, তামাক জাতীয় পণ্য এবং পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক সরঞ্জামে বাড়তি সেস বসবে। কোন পণ্য ও কোন কোন পরিষেবায় কী হারে কর বসবে, তা ঠিক করতে এখন আমলাদের নিয়ে তৈরি একটি কমিটি কাজ করছে। সেই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে জিএসটি পরিষদ।

Advertisement

এখনও পর্যন্ত পরিষদে যে- আলোচনা হয়েছে, তাতে বেশ কিছু রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের মত, বিমা ও ফোন-মোবাইলের মতো পরিষেবায় ১২% কর বসুক। বাকি পরিষেবায় ১৮%। কিন্তু কেন্দ্র সব পরিষেবায় একই রকম, অর্থাৎ ১৮% হারে কর বসাতে চায়। যুক্তি হল, এত দিন পরিষেবা কর বাবদ পুরো আয়ই ছিল কেন্দ্রের। কিন্তু এখন তার অর্ধেক রাজ্যগুলির মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে। জিএসটি নিয়ে ঐকমত্য তৈরি করতে রাজ্যগুলির চাপে এই শর্তেই রাজি হয়েছেন জেটলি। এখন তিনি সব ধরনের পরিষেবাতেই ১৮% কর বসিয়ে সেই রাজস্ব ক্ষতি পূরণ করতে চাইছেন। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের রাজস্ব আয়ের প্রায় ১৪ শতাংশই আসে পরিষেবা কর থেকে।

অর্থ মন্ত্রকের রাজস্ব দফতরের কর্তাদেরও যুক্তি, পরিষেবা করের হার এমন হওয়া প্রয়োজন, যাতে কেন্দ্রের রাজস্ব বাবদ আয় কমে না-যায়। তা হলে উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্পের খরচেও টান পড়বে। নতুন অর্থ বছরের শুরু ১ এপ্রিল থেকেই বাড়তি হারে পরিষেবা কর বসলে জুলাই মাসে জিএসটি চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত তিন মাস তার পুরো ফায়দা তুলবে কেন্দ্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement