একের পর এক ঘটনায় বারবার ধাক্কা খেয়েছে ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্প। —প্রতীকী চিত্র।
নোটবন্দি থেকে জিএসটি হয়ে অর্থনীতির ঝিমুনি, কোভিড বা মূল্যবৃদ্ধি— একের পর এক ঘটনায় বারবার ধাক্কা খেয়েছে ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্প। শনিবার পেশ হতে চলা বাজেটে তাই মোদী সরকারের থেকে কিছুটা নিশ্চিন্ত হওয়ার মতো ঘোষণা চাইছে তারা। তার মধ্যে অন্যতম সহজে ঋণ, আরও বেশি করে সরকারি সহায়তা, করছাড়ের বিশেষ সুবিধা। বড় শিল্পের থেকেও দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে বেশি গুরুত্ব রয়েছে এই শিল্প ক্ষেত্রের। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সেই কারণেই ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলির পাশে দাঁড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বহু ঝড়-ঝাপ্টা অনেকের দরজায় তালা ঝুলিয়েছে। বাকিদের ব্যবসার পরিসর চওড়া না করলে আদতে ভুগবে দেশ।
ছোট শিল্পের সংগঠন ফসমির সভাপতি বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম ‘ক্রেডিট লিঙ্ক ক্যাপিটাল সাবসিডি স্কিম’ ফের চালু করা। ২০২০-র মার্চে তা
বন্ধ হয়েছে। কেন্দ্রের কাছে আবেদন, প্রকল্প চালু করে এতে ১৫ লক্ষ টাকার বেশি সহায়তা দেওয়া হোক।’’ এ ছাড়া, প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য বিশেষ ‘টেকনোলজি আপগ্রেডেশন’ প্রকল্প ফের চালু করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। শহরের একটি বণিক সংগঠনের বার্তা, ক্ষুদ্র-মাঝারি সংস্থাগুলি যাতে ব্যবসা বাড়াতে সহজে ঋণ পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। তারা যাতে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারে, সে জন্য প্রচার চালানো জরুরি।
টাটা টেকনোলজিসের সিইও ওয়ারেন হ্যারিস বলেছেন, ‘‘এই ক্ষেত্রের মানবসম্পদের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ করছি। এখন ছোট সংস্থাতেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অন থিংস ও সাইবার নিরাপত্তার মতো উন্নত প্রযুক্তিতে দক্ষ কর্মী প্রয়োজন। তার দিকে কেন্দ্রকে নজর দিতে হবে।’’ একই সঙ্গে তিনি জিএসটির বিবিধ নিয়ম আরও সহজ করা এবং সরকারের উদ্যোগে নানা আর্থিক সহায়তা প্রকল্প চালুর কথা বলেছেন। এসএমএফজি ইন্ডিয়া ক্রেডিটের সিবিও অজয় পারিক বলেন, ‘‘দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প যাতে সহজে নগদ জোগাড় করতে পারে, তার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।’’
বণিকসভা মার্চেন্টস চেম্বারের সভাপতি অমিত সারোগিও এই সংস্থাগুলির ঋণ পাওয়া নিশ্চিত করায় জোর দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘আশা করছি কেন্দ্র বাজেটে এই শিল্পের যে সব সমস্যা আছে, তা সমাধানের দিকে আলাদা করে নজর দেবে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল সহজে ঋণ পাওয়া, জিএসটি সংক্রান্ত বিবিধ সমস্যার সমাধান ও আরও বেশি করে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা প্রদান।’’ একাধিক সংগঠনের তরফে কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, ছোট সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে আলাদা আলাদা নীতি রয়েছে। কিন্তু তা সব ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে এক হওয়া প্রয়োজন। তা হলে সব পক্ষেরই সুবিধা হবে। বাজেটে এ বিষয়টিতে গুরুত্ব দিন অর্থমন্ত্রী।