ফাইল চিত্র।
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও স্বল্প মেয়াদে ভারতের সামনে এখনও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে জানাল অর্থ মন্ত্রক। মে মাসের জন্য তৈরি তাদের রিপোর্ট বলছে, আর্থিক বৃদ্ধির গতিকে ধরে রাখা, চড়া মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনা, রাজকোষ এবং চলতি খাতে ঘাটতিকে বাড়তে না-দেওয়াই এখন সব চেয়ে বড় মাথাব্যথা। তবে একই সঙ্গে সরকারের দাবি, আর্থিক ক্ষেত্র স্থিতিশীল থাকায় এবং প্রতিষেধক দেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট গতি বজায় থাকার হাত ধরে এই সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য দেশ তৈরি। এমনকি ভারতের অর্থনীতি অন্যান্য দেশের তুলনায় চড়া মূল্যবৃদ্ধি, ঢিমে আর্থিক বৃদ্ধি ও উঁচু বেকারত্ব (স্ট্যাগফ্লেশন) সামলানোর ক্ষেত্রে ভাল জায়গায় আছে বলেও জানানো হয়েছে। ঠিক যে দাবি ক’দিন আগেই করেছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রবন্ধও।
রিপোর্ট বলছে, চাহিদা না-থাকায় বেসরকারি সংস্থাগুলি যে লগ্নি আটকে রেখেছে, তা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। যার ফলে এই দশকে কাজের সুযোগ তৈরি হবে, বাড়বে মূলধনী পুঁজিও। এই সবই ভারতের অর্থনীতিকে মাঝারি মেয়াদে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। তবে তেল-সহ বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক কমায় রাজকোষ ঘাটতি মাথাচাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা এবং টাকা দামের পতনের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। যার হাত থেকে বাঁচতে খরচ কমানোয় জোর দিতে হবে বলে মনে করে তারা।
পাশাপাশি টাকার দামের ক্ষেত্রে বিশ্ব জুড়ে চড়া মূল্যবৃদ্ধি ও তা যুঝতে বিভিন্ন দেশে সুদ বাড়ানো নিয়েও সতর্ক করেছে অর্থ মন্ত্রক। তাদের মতে, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ভারত থেকে ক্রমাগত টাকা তুলতে থাকলে প্রভাব পড়বে টাকার দরে। উল্লেখ্য, সোমবার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও বলেছে, বিশ্বের নানা ঘটনার বিরূপ প্রভাব একসঙ্গে ভারতের উপরে পড়লে এখান থেকে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি বছরে গড়ে ১০,০০০ কোটি ডলারের (প্রায় ৭.৮ লক্ষ কোটি টাকা) বিনিয়োগ সরাতে পারে। যা কি না বর্তমানে জিডিপি-র ৩.২%।
তবে আগামী দিনে বিশ্ব অর্থনীতি যদি আরও বেশি ধাক্কা খায়, সে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম কিছুটা কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাতে ইন্ধন জোগাতে পারে তেল রফতানিকারী দেশগুলির উত্তোলন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত। সে ক্ষেত্রে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ বৃদ্ধি এবং কেন্দ্রের পেট্রল-ডিজ়েলের শুল্ক ছাঁটার মতো পদক্ষেপের প্রভাব মূল্যবৃদ্ধি তথা অর্থনীতিতে কতটা পড়ে, তা আগামী ক’মাসের পরিসংখ্যানে বোঝা যাবে বলেও জানাচ্ছে রিপোর্ট।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।