—প্রতীকী চিত্র।
নির্ধারিত ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) চেয়ে কম দামে পাট কিনলে যাতে গ্রেফতার-সহ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা যায়, তার জন্য রাজ্যের সাহায্য চাইলেন জুট কমিশনার মলয়চন্দন চক্রবর্তী। সঙ্গে তাঁর দাবি, কেন্দ্র চটের বস্তার বরাত কমাচ্ছে বলে কোনও মহল থেকে দাবি করা হলেও তা ভিত্তিহীন। চলতি বছরেও গত বারের মতো বস্তা কিনবে কেন্দ্র। পাট চাষিদের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, তাঁরা যেন অহেতুক আতঙ্কিত হয়ে এমএসপির চেয়ে কম দামে পাট বিক্রি না করেন। চাষিদের থেকে এমএসপিতে পাট কেনা শুরু করেছে জুট কর্পোরেশনও (জেসিআই)।
টিডিএন-৩ (চট শিল্পে টিডি-৫ বলে পরিচিত) শ্রেণির পাটের কুইন্টাল প্রতি ন্যূনতম দাম ৫৫০০ টাকা ধার্য করছেন জুট কমিশনার। চাষিদের থেকে অবশ্য তা ৫০৫০ টাকায় কেনা হবে। প্রধানত ওই পাটই বস্তা তৈরির জন্য ব্যবহার হয়। গত বারের মতো এ বারেও পাটের ফলন ভাল হয়েছে। পাট পাওয়াও যাচ্ছে প্রচুর। চট শিল্প মহলের খবর, এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের একাংশ পাট চাষিদের এমএসপির চেয়ে কম দাম দিচ্ছেন। চাষিরাও তা বিক্রি করছেন বাধ্য হয়ে। তবে জেসিআই জানিয়েছে, তারা চাষিদের কাছ থেকে পাট কেনা শুরু করেছে। সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার কল্যাণ মজুমদার বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই চাষিদের থেকে ২.৩৫ লক্ষ বেল (১ বেল মানে ১৮০ কেজি কাঁচা পাট কিংবা ৫০০টি চটের বস্তা) পাট কেনা হয়েছে। আগামী বছরের জুন পর্যন্ত এই কর্মসূচি চালু থাকবে।’’ মলয়বাবুর কথায়, ‘‘এমএসপির থেকে কম দামে পাট কেনা বেআইনি। প্রয়োজনে ওই সব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার-সহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এ ব্যাপারে রাজ্যের সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন তিনি।
এর আগে চটকল মালিকদের সংগঠন আইজেএমএ অভিযোগ করেছিল, কেন্দ্র বস্তার বরাত ছেঁটেছে। এ দিন জুট কমিশনারের দাবি, এই অভিযোগ ঠিক নয়। এ বারেও কেন্দ্র ৩৫ লক্ষ বেল বস্তার বরাত দেবে। বিষয়টির ব্যাখ্যা করে আইজেএমএ-র চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্ত অবশ্য বলেন, দেশে খাদ্য এবং চিনি রাখার জন্য বছরে ৪০ লক্ষ বেল বস্তার চাহিদা রয়েছে। খাদ্যশস্যের ক্ষেত্রে ১০০% এবং চিনির জন্য ২০% চটের বস্তার ব্যবহার বাধ্যতামূলক। গত বছর পর্যন্ত চটকলগুলি ৩৪-৩৫ লক্ষ বেলের বেশি সরবরাহ করতে পারত না। কেন্দ্র ঘাটতি মেটাত প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে। এ বার আধুনিকীকরণ করে চটকলগুলি উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়েছে। লগ্নি করেছে মোটা অঙ্ক। এখন কেন্দ্র বাড়তি বরাত না দিলে তারা লোকসানের মুখে পড়বে। উৎপাদন কমানোর জন্য কাজের শিফটও কমাতে হবে। তাতে মজুরি হারাবেন শ্রমিকেরা।