ব্রিটানিয়ার কারখানা। —ফাইল চিত্র।
এক দিকে বন্ধ কারখানায় একের পর এক সম্পত্তি চুরির অভিযোগ। সন্দেহ গাঢ় হচ্ছে কর্তৃপক্ষের দরজা খোলার সদিচ্ছা নিয়ে। অন্য দিকে উৎপাদন শুরুর দাবিতে কাল থেকে আন্দোলন শুরু বাম শ্রমিক সংগঠনের। তার উপরে চাপ দিয়ে ‘অসত্য’ কথা লিখিয়ে সেখানকার স্থায়ী কর্মীদের স্বেচ্ছাবসর দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করছে একাংশ। সব মিলিয়ে কলকাতার তারাতলায় ব্রিটানিয়ার কারখানাকে ঘিরে জট ক্রমশ বাড়ছে। এক মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ সেখানে।
আন্দোলনের ডাক দেওয়া সংগঠনের কলকাতা জেলার অন্যতম সম্পাদক গৌতম রায় বলেন, “ব্রিটানিয়ার রেজিস্ট্রার দফতর কলকাতায়। তাই আমরা চাই, কম হলেও এই শহরে উৎপাদন চালু থাকুক। সেই দাবিতেই বুধবার থেকে কারখানার গেটে শুরু হবে অবস্থান বিক্ষোভ।” সূত্রের খবর, তৃণমূল বা অন্য দলের ইউনিয়ন শামিল হচ্ছে না।
জোরালো হচ্ছে আরও কিছু বিতর্ক। সূত্র জানাচ্ছে, সম্প্রতি কারখানার যে ১২৩ জন কর্মীকে স্বেচ্ছাবসর নিতে হয়েছে, তাঁদের জোর করে ‘অসত্য’ বয়ান লিখতে বাধ্য করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, “আমরা কেউ চিঠিতে লিখেছি স্ত্রী অসুস্থ। কেউ লিখেছি নিজে অসুস্থ। সেই বয়ান আমাদের লিখতে বাধ্য করা হয়েছে।” তবে স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার দিন চারেকের মধ্যে সংস্থা সব বকেয়া মিটিয়ে দিয়েছে। যদিও এই নিয়ে সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সফল হয়নি।
বন্ধ কারখানা থেকে লোহার রেলিং, গেট চুরির অভিযোগও তুলেছেন কর্মীরা। গৌতম বলেন, “এক মাস কাজ বন্ধ। তার মধ্যেই কারখানার রেলিং, গ্রিল-সহ বিভিন্ন জিনিস চুরি হতে শুরু করেছে। অথচ কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এর থেকে স্পষ্ট এই কারখানাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না তাঁরা। সেটাই আশঙ্কার।” বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য সামান্য কয়েকজন ঠিকা কর্মী সেখানে যান বলে জানা গিয়েছে। তবে আন্দোলনের পরেও কর্তৃপক্ষের অবস্থান বদলাবে কি না, প্রশ্ন তুলছে সংশ্লিষ্ট মহল।
গত মাসে তারাতলা কারখানায় কর্মবিরতির খবর প্রকাশ্যে আসার পরে মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র জানিয়েছিলেন, সংস্থার শীর্ষকর্তা বরুণ বেরি শীঘ্রই কলকাতায় এসে বিস্তারিত পরিকল্পনা জানাবেন। কর্মী সংগঠনের প্রশ্ন, তারপর এক মাসের বেশি অতিক্রান্ত। এখনও কারও দেখা মেলেনি। সংস্থাও সরকারি ভাবে কিছু জানায়নি। শুধু জোর করে স্বেচ্ছাবসর নেওয়া কর্মীদের বকেয়া সময়ে মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গৌতমের দাবি, তিনি হস্তক্ষেপ করুন। তা হলে সমস্যা মিটতে পারে। অবস্থান বিক্ষোভের সভা থেকেও এই দাবি তোলা হতে পারে।