প্রতীকী চিত্র।
আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রবীণ ও দরিদ্র নাগরিকদের সামাজিক সুরক্ষার শক্তিশালী বলয়ের মধ্যে আনার ব্যাপারে এখনও দুর্বলতা রয়েছে ভারতের। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, লকডাউনের জেরে অর্থনীতির যখন কার্যত স্তব্ধ, তখনও সাধারণ মানুষকে নগদ দিয়ে সাহায্য করা যায়নি ঠিক এই কারণে। নেওয়া যায়নি ঘাটতি লাগামছাড়া হওয়ার ঝুঁকি। কিন্তু সম্প্রতি স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখা ইকোর্যাপের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এ দেশে জনসংখ্যার নিরিখে প্রবীণ নাগরিকদের হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তাঁদের সুরক্ষা দিতে বাড়ছে সামাজিক প্রকল্পগুলিকে ঢেলে সাজানোর প্রয়োজনীয়তাও। এরই অংশ হিসেবে দরকার স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির বিধি এবং কাঠামোয় কিছু পরিবর্তন। কারণ, এই প্রকল্পগুলির উপরে নির্ভর করে থাকেন প্রবীণ, দরিদ্র ও স্বনির্ভর মানুষেরা। এই প্রেক্ষিতে জোর দেওয়া হয়েছে আর্থিক সাক্ষরতার দিকেও। যার অভাবে বছর দশেক আগে ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার দিকে ঝুঁকেছিলেন বহু মানুষ।
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০১১ সালে ভারতের জনসংখ্যায় প্রবীণ নাগরিকদের অংশ ছিল ৮.৬%। যা ২০৪১ সালে পৌঁছে যেতে পারে ১৫.৯ শতাংশে। ফলে তাঁদের সামাজিক ও আর্থিক সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ আসতে চলেছে কেন্দ্রের সামনে। গত সাত বছরে নিচু আয়ের এবং অবসরপ্রাপ্ত মানুষদের সুরক্ষা বাড়ানোর জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। তবে আগের মতোই ওই অংশের নাগরিকদের আস্থা কার্যত অটুট স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির প্রতি।
এই প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২০০৮ সালের আর্থিক সঙ্কটের পর থেকে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে লগ্নির প্রবণতা একটা তাৎপর্যপূর্ণ মাত্রা পেয়েছে। দেখা গিয়েছে, নিচু আয়ের রাজ্যগুলিতে (রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ) ডাকঘরে সঞ্চয়ের প্রবণতা বেশি। বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিকদের। আর অপেক্ষাকৃত উঁচু আয়ের রাজ্যে (মহারাষ্ট্র, দিল্লি) সঞ্চয় বেড়েছে ব্যাঙ্কে। ফলে ধরে নেওয়া যেতে পারে আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ডাকঘর ছেড়ে ব্যাঙ্কে টাকা রাখার প্রবণতাও বাড়ে। এই সব কিছু বিবেচনা করেই স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলিকে নতুন করে সাজাতে হবে।