—প্রতীকী চিত্র।
বাংলাদেশে অশান্তির ধাক্কা দু’দেশের সীমান্ত বাণিজ্যেও লাগতে শুরু করেছে। বিশেষত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় ভারত থেকে পণ্য রফতানি প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছে। কারণ, বাংলাদেশে পণ্যবাহী ট্রাকের ‘এন্ট্রি’ হয় অনলাইনে। দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর, উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল দিয়েই মাসে ২০০০-২৫০০ কোটি টাকার পণ্য রফতানি হয়। তা বন্ধ থাকলে রাজস্বেও ধাক্কা লাগবে। তবে শনিবার দুপুরে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পেট্রাপোলের ম্যানেজার কমলেশ সাইনি বলেন, ‘‘রফতানি বন্ধ হলেও আমদানির কাজ চলছে।’’ যদিও তার গতি অনেকটাই কমেছে।
উত্তরে চ্যাংরাবান্ধা বা হিলি থেকে দক্ষিণ, ছবি কার্যত একই। সার সার ট্রাক দাঁড়িয়ে, অনেকগুলিতে আনাজ বা মাছের মতো পচনশীল পণ্য। শনিবার ৩৭টি ট্রাক পেট্রাপোল দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার পরেই সকাল ১০টায় রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। ওই ট্রাকগুলির ‘এন্ট্রি’ আগে করা ছিল। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ইন্টারনেট বন্ধ, নিরাপত্তার বিষয়টিও আছে। তবে বাংলাদেশ ‘ম্যানুয়াল’ ব্যবস্থায় কিছু পচনশীল পণ্য নেবে।’’
কোচবিহারের চ্যাংরাবান্ধা এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক অমরজিৎ রায় বলেন, ‘‘এক-একটি সীমান্তে কোটি কোটি টাকার পণ্য আটকে। তার মধ্যে রয়েছে প্রচুর আনাজ।’’ দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে আটকে প্রচুর পেঁয়াজ ও কাঁচালঙ্কা। মালদহের মহদিপুরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য রফতানি কেন্দ্রেও পেঁয়াজের ট্রাক দাঁড়িয়ে গিয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার ঘোজাডাঙা দিয়ে মোটে ৪৪টি ট্রাক যেতে পেরেছে।
আমদানিও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা কম। পেট্রাপোলের ক্লিয়ারিং এজেন্ট কার্তিক জানান, এমনিতে দিনে গড়ে ২০০ ট্রাকের উপর আমদানি হয়। এ দিন একশোর সামান্য বেশি হয়েছে। কোচবিহারের মাছ ব্যবসায়ীরা প্রায় তিন টন পদ্মার ইলিশ আনার জন্য মহাজনকে অগ্রিম দিয়েছিলেন। সেই মাছ কবে আসবে তা অনিশ্চিত। ‘মানি ট্রান্সফার’ ব্যবসার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দরে ট্রাকে পণ্য নিয়ে গিয়ে আটকে পড়েছেন প্রায় ৮০ জন চালক ও খালাসি। কারণ সেখানে ট্রাক ফেরানোর বিষয়টিও অনলাইনে হয়। এ দিকে, পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশিরা সারা দিনই নদিয়ার গেদে সীমান্ত দিয়ে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেছেন।